নমস্কার বন্ধুরা, সকলে কেমন আছেন ? আশা করছি সকলেই ভালো আছেন। আবারো নতুন একটা কনটেস্ট জানতে পেরে আমার খুব ভালো লেগেছে। খুব ইচ্ছে করলো এই কনটেস্টে অংশগ্রহণ করবার। প্রথমে ধন্যবাদ জানাই যিনি এই কনটেস্টটা আয়োজন করেছেন। এই কনটেস্টের টপিক হল হ্যালোইন।
হ্যালোইন সম্পর্কে আমার তেমন কিছু জানা নেই। টিভি দেখে যতটুকুনই জানতে পেরেছি। বিদেশে নাকি ভূত সেজে প্রত্যেকের বাড়িতে গিয়ে ভয় দেখালে তারা চকলেট দেয়। এর থেকে বেশি কিছু আমার জানা নেই।
তবে ভূতে আমি একদমই বিশ্বাসী নয়। ভূত নেই, এটাও বলা সঠিক নয়। আগেকার দিনে শুনেছি, এমনকি আমার বাড়িতে আমার দাদু দিদা প্রত্যেকেই নাকি ভুত দেখেছেন। আমি নিজের চোখে না দেখে কখনোই বিশ্বাস করব না। তবে এটা বিশ্বাস করব আগেকার দিনে ছিল কিছু। ছোট থেকেই দিদার কাছে অনেক ভূতের গল্প শুনেছি। তবে ছোটবেলায় ভুতের ভীষণ ভয় পেতাম। তখন ভূত সম্পর্কে কিছুই বুঝতাম না। বড় হবার পর যখন বুঝতে শিখেছি,ট তারপরে ভূতের ভয় আমি একদমই পাইনা।
এই কনটেস্ট দেখে আমার খুব ভালো লেগেছে। তাই আমি ভেবে পাচ্ছিলাম না কি করব ।আমি খুব ভালো ছবিও আঁকতে পারি না । এই কনটেস্ট টা দেখে প্রথমেই আমার মনে হয়েছিল আমি নিজে বুঝ সাজলে কেমন হয়, কারণ মানুষজন আমাকে এমনিতে দেখেই ভয় পায়। তাহলে এই নিয়ে একটা কথা বলি।
আমার অভ্যেস রাত করে স্নান করা। তারপর স্নান সেরে চুল শুকোতে আমি মাঝেমধ্যেই আমাদের ছাদে হাঁটাহাঁটি করি চুল ছেড়ে দিয়ে। শোয়ার আগে স্নান করে শুলে দারুন ঘুম হয়। অত রাতে আমাকে ওইভাবে ছাতে হাঁটাহাঁটি করতে দেখে অনেকেই ভয় পায়।
মাঝেমধ্যেই পাশের বাড়ির লোকজন আমার শাশুড়িকে সকালবেলা উঠে জিজ্ঞেস করে, আপনাদের ছাদে রাতের বেলায় কে হাঁটাহাঁটি করছিল। চুল ছেড়ে কেমন যেন ভূতের মতন। আমার শাশুড়ি হাসতে হাসতে উত্তর দেয়, ওটা আমার বউমা ছিল।
আপনারা বুঝতেই পারছেন রাতের বেলায় চুল ছেড়ে হাঁটাহাঁটি করছি যখন তাহলে আমার ভয়টা কতটা কম। ভয় আমি সত্যিই অনেক কম পাই। আমার বাড়ির পেছন দিকটা পুরো অন্ধকার গাছ পালাতে ভর্তি। তাও আমার ভয় লাগে না। রাত বারোটার পরে আমি কতদিন আমার বরের সাথে রাস্তায় হেঁটে বেরিয়েছি। কতদিন ছাদে হাঁটাহাঁটি করেছি অনেক রাত অব্দি।
যাইহোক আমার ভূত সাজাটা ঠিকঠাক বলে মনে হলো। ভূত সাজবো যখন তাহলে একটু হেল্পার দরকার। আর আমার সবথেকে বড় হেল্পার হল ঈশা @isha.ish. ঈশার সাথে যুক্তি বুদ্ধি করে,ভূত কিভাবে সাজা যায়, আলোচনা করলাম।
তারপর আমারই একটা সাদা রংয়ের নাইট ড্রেস আমি পড়ে নিলাম। তখন সন্ধ্যেবেলা। ঈশাদের বাড়িতে ঈশার আইশ্যাডো প্যালেট থেকে কালো আইশ্যাডো ব্যবহার করতে শুরু করলাম নিজের মুখের উপর। ঈশা কিছুটা হেল্প করলো।
মুখের যাতে কোন সমস্যা না হয় ,তাই প্রথমেই আমি একটা মুখে বডি অয়েল ব্যবহার করেছি। তারপরে আইশ্যাডো চোখের নিচে কালো দেখানোর জন্য ব্যবহার করেছি । ঈশা আমার সারা ঠোঁটের চারিপাশে লাল রঙের লিপস্টিক মাখিয়ে দিল, এর সাথেই লাল রঙের ফেব্রিক রং কিছু কিছু জায়গায় ও লাগিয়ে দিল। ব্যাস আর কিছু ব্যবহার করতে হয়নি। চুলটা ছেড়ে দিতেই, ঘর অন্ধকার করে দিতেই, ঈশা নিজেই আমাকে দেখে ভয় পাচ্ছিল।
ঈশাদের বাড়িতে অনেক অনেক জায়গা আছে। যেখানে ফটোশুট করা যাবে, সেই মতোই আমি, ঈশা এবং ঈশান মিলে ফটোশুট করতে চলে গেলাম। আমি হয়ে গেলাম মডেল। বলতে গেলে ভুতুড়ে মডেল। আর ঈশা আর ঈশান দুজন মিলে হয়ে গেল ফটোগ্রাফার। তারপর দারুণ দারুণ পোজ দিয়ে ভুতের ছবি তোলা হলো। আমি যে এত সুন্দর ভূত হতে পারব ,আমি নিজেও কল্পনা করতে পারিনি।
আমার এক একটা ছবি দেখে আমি নিজেই ভয় পাচ্ছিলাম। বিশেষ করে সিঁড়ি থেকে উকি মারা ছবিটা, যেটা একেবারেই ঈশানের আইডিয়া ছিল, ওটা আমাকে পুরো চমকে দিয়েছে। আর সাথে যদি এত ভালো ফটোগ্রাফার থাকে, তাহলে ভূত নিজেও ভয় পাবে।
কাজটা করার সময় আমাদের তিনজনার মধ্যে সবথেকে বেশি ভয় পাচ্ছিল ঈশা। একটা করে ছবি ক্লিক করার সাথে সাথেই বাড়ির লাইটগুলো জ্বালিয়ে দিচ্ছিল ও। আমরা সবাই আলোচনা করছিলাম আমরা রাতে ঠিকভাবে ঘুমোতে পারব কিনা। সত্যিই কাজটা করে আমি ভীষণ মজা পেয়েছি।
যদি আমার কাছে ফল্স নেল থাকতো, তাহলে আমি আমার হাতের আরও কায়দা করতে পারতাম।
সবশেষে আমার ভূত সাজার বিষয়টি আমাকে খুব আনন্দ দিয়েছে। এই অবস্থায় আমার সামনে যে আসবে, যে কেউ ভয় পেয়ে যাবে। আমি ছবিগুলি আমার শ্বশুর-শাশুড়ি এবং হাসবেন্ডকে দেখিয়েছি। তারা রীতিমতো ঘাবড়ে গিয়েছিল, এবং আমাকে কেউ চিনতেও পারেনি।
ভীষণ ইচ্ছা আছে এরকম সেজেগুজে কিছু কিছু মানুষকে ভয় দেখানোর। যাইহোক আমি এখানেই পোস্ট শেষ করছি। আপনাদের সকলের কেমন লাগলো, অবশ্যই জানাবেন। প্রত্যেকটি ছবি আমার Oppo A15s ফোন থেকেই তোলা।