রাত্রি বেলায় বাড়ির দুয়ারে কার্তিকের আগমন
3 comments
নমস্কার বন্ধুরা, সকলে কেমন আছে? আশা করছি সকলেই ভালো আছেন। আজকে একটা নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি আপনাদের মাঝে। আশা করছি সকলের খুব ভালো লাগবে।
আশা করি সকলেই উপরের টাইটেল দেখে বুঝে গেছে, আমি আজকে কি পোস্ট আপনাদের মাঝে শেয়ার করছি। গতকাল ছিল কার্তিক পুজো। তবে ছোট থেকেই শুনে আসছি বর্ধমান জেলায় যেসব নতুন নব দম্পতিদের বিবাহ হয় ।সেই বছরে আগের দিন সকল সদস্য একত্রিত হয়ে বাড়িতে কার্তিক ফেলে আসে। এই নিয়মটা কার্তিক পুজোর আগে শুধুমাত্র বর্ধমান কাটোয়া এলাকা বর্তী অঞ্চলে পালন করা হতো। কারণ ওইসব অঞ্চলে আমাদের এলাকায় বহু মেয়েদের বিয়ে হয়েছে তাদের মুখ থেকেও বহু রকমের গল্প শোনা যায়। তারা শুধুমাত্র কার্তিক ফেলে আসে এমনটাই নয়। কার্তিকের হাতে চিরকুট দিয়ে আসে ।তাদের কি কি খাবার খেতে দিতে হবে এমন কি জিনিস দিতে হবে। এমনকি একটা বড় এমাউন্টের টাকাও ডিমান্ড করে।
কিন্তু এখন সবাই ফোন দেখে দেখে আমাদের কৃষ্ণনগর শহরেও চালু হয়ে গেছে কার্তিক পুজোর আগের রাতে বাড়ির দুয়ারে কার্তিকের মূর্তি রেখে যাওয়া। বছর দুয়েক আগে আমাদের পাশের বাড়ির একটা ভাই যখন বিয়ে করেছিল ।তখন তার বাড়িতে কার্তিক ঠাকুরের মূর্তি রেখে যাওয়া হয়েছিল। তারাও নিয়ম মেনে নিষ্ঠা সহকারে বাড়িতে কার্তিকের পুজো দিয়েছিল। কিন্তু ওদের বাড়িতে ফেলার পর আর তেমন কোথাও এ কয়েক বছরে শোনা যায়নি। কিন্তু এই বছরে যেন প্রত্যেক বাড়িতে কার্তিকের মূর্তি ফেলার একটা ধুম পড়ে গিয়েছিল। আপনারা হয়তো সকলেই জানেন আমি অনেক রাত পর্যন্তই বাড়ির ছাদে একাই হাটাহাটি করে। নিয়ম মেনে সেদিন রাতেও আমি অনেক রাত পর্যন্তই হাঁটাহাঁটি করছিলাম। যেহেতু ঠান্ডা পড়ে গিয়ে যে তাই শাশুড়ি মা খাবার জন্য আমাদের নিচে ডেকেছিল বর মশাই ও বাড়ি ছিল। তাই দুজনেই রাতের খাবার ছেড়ে ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করে ঘরের মধ্যেই ছিলাম।
কার্তিকের বায়নার লিস্ট |
---|
আমার বর বিছানায় শুয়ে পড়েছিল ।আর আমি বাইরে বসে ছিলাম। ঠিক এই সময় নিচে থেকে শাশুড়ি মা দুজনেরই নাম ধরে চিৎকার করে ডাকতে ডাকতে উপরে আসছে। আপনারা সকলেই হয়তো জানেন আমার একটু সবসময় উগ্ৰ মেজাজ। তাই আমি মেজাজ নিয়েই বললাম। কি হয়েছে? আর আমার বর সেতো খুবই নরম মানুষ। তাই মাকে জিজ্ঞেস করল কি হয়েছে মা। তখন শাশুড়ি মা বলল আমাদের বাড়ির দুয়ারে কে কার্তিক রেখে গেছে। শুনে তো আমার শাশুড়ি মা আর আমার বর দুজনেই নাচতে নাচতে চলল নিচে কার্তিক দেখতে। আমার বরের তো খুব আনন্দ। সে যেহেতু এই প্লাটফর্মে কাজ করে তাই সাথে সাথে কার্তিককে কোলে নিয়ে তার ছবি তোলা হয়ে গেছে। তখনো আমি নিচে এসে দেখিনি।
আমি নিচে যাইনি বলে আমার বর কার্তিক টা কোলে করে ওপরে নিয়ে এসেছিল। আসার পর কার্তিকের হাতে যে চিরকুটটা দিয়েছিল তাতে অনেক কিছু লেখা ছিল। যখন ও আমার সামনে বসে লেখাটা পড়তে শুরু করল তখন চিরকুটের মধ্যে লেখা ফ্রাই রাইস আর আলুর দম এর কথা শুনে আমি আন্দাজ করে ফেলেছিলাম যে কার্তিক টা আমাদের বাড়িতে কে রেখেছিল। রাতের বেলায় আমি আর আমার বরকে কিছু বলিনি যে রেখেছিল তার সম্পর্কে। যাইহোক তার নাম আমি পরবর্তী পোস্টে উল্লেখ করবো। তাকে হয়তো আপনারা সকলেই চেনেন।আমার বর তো রাতের বেলায় মহানন্দে কার্তিক সম্বন্ধে পোস্টে অনেক কিছু লিখে ফেলল। আবার খানিকক্ষণ বাদেই দেখি পাশের বাড়ি থেকে খুব আওয়াজ ছুটে গিয়ে ছাদে থেকে দেখি পাশের বাড়িতে অন্য আরেক দল একটা বড় কার্তিক রেখে গেছে। আমার বর তখন ওই দলে ধরেছে যে তোরা আমাদের বাড়িতে কার্তিক রেখে গিয়েছিস। ওরা তখন বলে না দাদা আমরা তোমাদের বাড়িতে কার্তিক রাখিনি।
আজ এইখানেই শেষ করছি। আবার বাদবাকি গল্প নিয়ে হাজির হব আগামীকাল। আমার গল্প নিশ্চয়ই আপনাদের ভালো লাগবে। সকলকে কার্তিক পুজোর অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
Comments