জেনারেল রাইটিং পোস্ট || শৈশবের ক্রিকেট খেলার স্মৃতি

mohinahmed -

আসসালামু আলাইকুম,

আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।



প্রতিদিনের মতো আজকেও আমি আপনাদের সামনে আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি একটি জেনারেল রাইটিং পোস্ট শেয়ার করবো আপনাদের সাথে। এই পোস্টে আমি শৈশবের ক্রিকেট খেলার স্মৃতি শেয়ার করার চেষ্টা করবো। ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেট খেলার প্রতি আমার প্রচুর আকর্ষণ ছিলো। যখন একেবারে ছোট ছিলাম, তখন প্লাস্টিকের ব্যাট বল দিয়ে বাসার উঠানে ক্রিকেট খেলতাম। একটু বড় হওয়ার পর থেকে অর্থাৎ ক্লাস ফোর ফাইভে উঠার পর তো মাঠে গিয়ে প্রতিদিন ক্রিকেট খেলতাম। আমাকে যখন হাইস্কুলে ভর্তি করানো হলো,তখনই ঝামেলা শুরু হয়ে যায়। কারণ স্কুল ছিলো বিকাল ৪টা পর্যন্ত। আর সেজন্য স্কুলে যেতে আমার খুবই বিরক্ত লাগতো। কারণ স্কুলে গেলে তো মাঠে গিয়ে ক্রিকেট খেলতে পারতাম না। সেজন্য স্কুলে যাওয়ার সময় হলেই টয়লেটে গিয়ে বসে থাকতাম এবং আম্মুকে বলতাম পেটে সমস্যা হয়েছে হা হা হা।


Source


যদিও কয়দিন পরপর এমন করতাম বলে আম্মুর কাছে ধরাও খেয়ে যেতাম। আমি যখন সকাল বেলা স্কুলে যেতাম, তখন বারবার পিছনের দিকে তাকিয়ে থাকতাম, আর ভাবতাম যে সারাদিনের জন্য স্কুলে চলে যাচ্ছি এবং ক্রিকেট খেলার সুযোগ পাবো না। তখন এটা ভেবে ভীষণ কষ্ট পেতাম। যাইহোক আমাদের ক্রিকেট খেলার গ্রুপ ছিলো এবং আমরা সবাই একসাথে ক্রিকেট খেলতাম। তাছাড়া অন্য মহল্লার ছেলেদের সাথেও ক্রিকেট খেলতাম। অনেক সময় দূরে গিয়েও ক্রিকেট খেলতাম। তবে যারা সবসময় ভালো খেলতো, তাদেরকে বাছাই করে ভালো টিম বানিয়ে তারপর অন্য মহল্লার ছেলেদের সাথে ক্রিকেট খেলতাম। আমি যখন ক্লাস সেভেনে পড়ি,তখন আমাদের বাসা থেকে কিছুটা দূরে, একটা মহল্লার মাঠে ক্রিকেট খেলতে গেলাম। অর্থাৎ আমরা ১১ জনের একটা টিম নিয়ে গেলাম এবং সেই মহল্লার ছেলেদের ১১ জনের একটা টিম।


আমরা যারা ১১ জন গিয়েছিলাম,সবাই ছোট ছোট ছিলো। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখি যে বিপক্ষ টিমে ৪/৫ জন বড় বড় ছেলে রয়েছে। সেই ছেলেগুলো তখন ইউনিভার্সিটিতে পড়তো। তো আমরা বললাম বড়দের সাথে আমরা খেলবো না। কারণ আমরা সবাই ছোট ছোট, তাই তোমরাও আমাদের মতো ছোট ছোট ১১ জন বাছাই করে নিয়ে আসো। ওদেরকে কিন্তু আগেই বলা হয়েছিল বড়দেরকে টিমে নেওয়া যাবে না। তারপর ওরা বললো যে তাদের নাকি পরিচিত ছোট প্লেয়ার নেই। তারপর আমরা বললাম তাহলে আমরা খেলবো না অর্থাৎ বাসায় চলে যাবো। তো এরমধ্যে আমাদের টিমের কয়েকজন বললো যে, কষ্ট করে যেহেতু এসেছি, তাহলে ওদের সাথেই খেলি। দেখা যাক আমরা কেমন খেলি। এরপর সবাই সম্মতি জানানোর পর খেলা শুরু হলো।


প্রথমে ওরা ব্যাটিংয়ে নামলো। খুব সম্ভবত ১২ ওভারের ম্যাচ ছিলো সেটা। অনেকদিন আগের কথা তো,স্পষ্ট মনে পড়ছে না। যাইহোক ওরা খুব সম্ভবত ১১০ রান করেছিল। ওদের যে বড় বড় ৪/৫ জন প্লেয়ার ছিলো, তারাই মূলত বেশি রান করেছিল। তো আমরা ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতে ভালোই ব্যাট করা শুরু করেছিলাম। আমি এবং আরেকজন ওপেনিংয়ে ব্যাট করতে নেমেছিলাম। কিন্তু ৩/৪ ওভার শেষ হওয়ার পর, ওদের মধ্যে থাকা বড় একজন প্লেয়ার বোলিং করতে আসলো। সেই ছেলের বলের গতি ছিলো মারাত্মক। আমি প্রথম দুটি ডেলিভারি ফেইস করার পর, তৃতীয় বল এসে সোজা আমার থাই অর্থাৎ উরুর মধ্যে লাগে। উরুতে বল লাগার পর সেই লেভেলের ব্যথা পেয়েছিলাম। যদিও সেটা কাউকে বুঝতে দেইনি। তো একটু পরেই আমি আউট হয়ে যাই।


তারপর আমরা সেই ম্যাচে খুব সম্ভবত ৯০/৯৫ রান করতে সক্ষম হই। অর্থাৎ ম্যাচটি আমরা ১৫/২০ রানের জন্য হেরে যাই। তো আমাদের সেটা নিয়ে কোনো আফসোস ছিলো না। কারণ আমরা এতো ছোট হওয়ার পরেও,বড়দের সাথে খুব ভালো খেলেছিলাম। বাসায় এসে আমি বাথরুমে গিয়ে দেখি,আমার উরুর মধ্যে বলের ছাপ স্পষ্টভাবে বুঝা যাচ্ছে। কারণ আমি ব্যাটিং করার সময় বলটা এসে যে আমার উরুর মধ্যে লেগেছিল,সেই ডেলিভারির গতি অনেক বেশি ছিলো। যাইহোক বাসায় তো এটা নিয়ে কিছু বলা যাবে না। তাই ফার্মেসি থেকে অয়েন্টমেন্ট কিনে এনে,লুকিয়ে লুকিয়ে নিজেই উরুর মধ্যে মাসাজ করতাম এবং বেশ কয়েকদিন পর ব্যথা কমে যায়। হঠাৎ করে ছোটবেলার এই স্মৃতি গুলো মনে পড়ে গেলো। তাই ভাবলাম আপনাদের সাথে শেয়ার করা যাক। আসলে ছোটবেলার মধুর স্মৃতি গুলো মনে পড়লে ভীষণ ভালো লাগে।



পোস্টের বিবরণ

ক্যাটাগরিজেনারেল রাইটিং
পোস্ট তৈরি@mohinahmed
ডিভাইসSamsung Galaxy S9 Plus
তারিখ১৭.১১.২০২৪
লোকেশননারায়ণগঞ্জ,ঢাকা,বাংলাদেশ

বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাআল্লাহ দেখা হবে অন্য কোনো পোস্টে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।

পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

আমার পরিচয়

🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি এইচএসসি/ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার পর, অনার্সে অধ্যয়নরত অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়াতে চলে গিয়েছিলাম। তারপর অনার্স কমপ্লিট করার সুযোগ হয়নি। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে এবং গান গাইতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹

PUSS COIN: BUY/SELL