"ঠাডা" নাটকের রিভিউ।

moh.arif -

আজ - ১৮ই জ্যৈষ্ঠ |১৪৩০ বঙ্গাব্দ, | গ্রীষ্ম-কাল |


আসসালামু-আলাইকুম। আদাব - নমস্কার। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার বাংলা ব্ল এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, আশা করি সবাই ভাল আছেন।

আজ আমি আপনাদের সাথে ঠাডা নাটকের রিভিউ শেয়ার করব।





ছবিঃস্ক্রিনশট এর মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে।

নাটকের কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাবলীঃ


নামঠাডা।
পরিচালকমেহেদি হাসান হৃদয় ।
অভিনয়মুশফিক আর ফারহান, সামিরা খান মাহি, জিলজুর রহমান, শিরিন আলম।
দৈর্ঘ্য৪৯ মিনিট।
ধরনড্রামা ।
ভাষাবাংলা।
মুক্তির তারিখ২.০৫.২০২৩ইং।

নাটকের সারসংক্ষেপ


নাটকের শুরুতে আমরা দেখতে পাই ফারহান তার স্ত্রী এবং মেয়েকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে যাচ্ছে। সে মূলত শ্বশুরবাড়িতে যাচ্ছে তার শাশুড়ির কাছ থেকে টাকা আনতে। সে নতুন আরেক জায়গায় একটি দোকান কিনবে আর তার জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন আর এই টাকার জোগাড় করতেই মূলত তার শ্বশুর বাড়িতে যাওয়া।

তারা সেখানে বেশিক্ষণ থাকবে না টাকাটা নিয়ে সন্ধ্যার মধ্যে ফিরে আসবে এমনটাই কথা হচ্ছিল ফারহান ও তার স্ত্রীর মধ্যে। ফারহান তার স্ত্রী কে বলছিল সে যেন তার মাকে টাকার কথাটা বলে। তার স্ত্রী জানাই যার টাকার দরকার সেই বলবে। ফারহানের লোভী ভাবটাকে নিয়ে তার স্ত্রী একদমই নারাজ। ফারহানের শ্বশুর মারা গেছে অনেক আগেই তাই এখন ফারহানের শাশুড়ি একাই সেই বাড়িতে থাকে। আর ফারহানের স্ত্রী হচ্ছে তার শশুর শাশুড়ি একমাত্র মেয়ে।

আর এখানে নাটকের দৃশ্য পরিবর্তিত হয় আর আমরা দেখতে পাই, ফারহান তার শ্বশুরবাড়িতে এসে পৌঁছে গিয়েছে। হঠাৎ করে কাউকে না জানিয়ে মেয়ে এবং মেয়ের জামাই আশায় শাশুড়ি বেশ অবাক এবং সেই সাথে বেশ খুশি ও হয়। এদিকে, ফারহান ছলে বলে তার স্ত্রীকে দিয়ে টাকার কথাটা বলাতে চাইলেও তার স্ত্রী কোন ভাবে এ টাকার কথাটা তার মাকে বলতে পারেনা। ফারহান বাধ্য হয়ে তার স্ত্রীর নাম করে ২ লাখ টাকা দেওয়ার কথা বলে শাশুড়িকে। এমন কথায় তার শাশুড়ি বলে তার কাছে তো এতগুলো টাকা নেই। কিন্তু ফারহান বলে যেসব গয়নাগুলো তার কাছে আছে সেগুলো বিক্রি করার জন্য। গাইনাগুলোতে এমনিতেই তার মেয়ের জন্য রাখা ছিল। তাই হিসেবে তো শাশুড়ি আবর্তমানে এই গয়না গুলো তার মেয়েই পাবে। এমন সব কথায় তার শাশুড়ি কিছুটা মনে কষ্ট পেলেও শেষ পর্যন্ত গয়না গুলো বিক্রি করে দিতে রাজি হয়। ফারহান তো কথাগুলো শুনে বেশ খুশি হয় এবং সে জানায় তার শাশুড়ির কষ্ট করে গয়না বিক্রি করার জন্য গয়নার দোকানে যেতে হবে না সে নিজে গিয়ে এগুলো বিক্রি করে আসবে।

এমন সব কথাবাত্রা শেষ হওয়ার পর ফারহান বলে সে এখন চলে যাবে। কিন্তু তার শাশুড়ি তাকে যেতে দেয় না বলে আজ থেকে কাল যেতে। শাশুড়ি থাকার জন্য জোর করাতে তার অনিচ্ছা সত্ত্বেও সেই রাজি হয়ে যায় আজকের দিনটাই থাকার জন্য।

আবহাওয়া বেশ খারাপ অবস্থা আকাশ কালো হয়ে বৃষ্টি নামছে। এদিকে জামাই এসেছে বাড়িতে তাই ফারহানের শাশুড়ি তার জন্য রান্নাবান্না করতে থাকে। রান্নার এক পর্যায়ে ফারহানা শাশুড়ি খেয়াল করে যে রান্নার জন্য তেল শেষ হয়ে গেছে। ফারহানের স্ত্রীও সেখানে ছিল ফারহানের স্ত্রী বলছিল একটু মেঘ কমলে তার জামাইকে পাঠাবে তেল আনার জন্য। ফারহানা শাশুড়ি তাতে আপত্তি করে আর বলে শ্বশুরবাড়িতে এসে জামাইকে এভাবে তেল আনতে পাঠানোটা ভালো দেখায় না। তাই সে ঠিক করে একটু বৃষ্টি কমলে পাশের এক বাসা থেকে তেল নিয়ে আসবে।

এরপর আমরা দেখতে পাই ফারহানের শাশুড়ি তেল আনতে যাওয়ার সময় ঠাডা ওখানেই মারা যায়। এরপর গ্রামের কিছু লোকজনরা তার মৃত দেহটিকে বাড়িতে নিয়ে আসে । ফারহানের স্ত্রী তার মায়ের এ অবস্থায় দেখে একেবারে ভেঙে পড়ে। তবে আমরা দেখতে পাই ফারহানের মধ্যে তার শাশুড়ি হঠাৎ এ বিষয়টি নিয়ে তেমন কোন দুঃখ নেই। সে তখনো পড়ে আছে তার শাশুড়ির গয়না টাকা পয়সা সম্পত্তি এসব নিয়ে। এদিকে তার স্ত্রী মা মারা যাওয়ার সেই শোকে তার মেয়ের দিকে খুব একটা খেয়াল করছে না আর এটি দেখে ফারহান তার স্ত্রীকে খুবই বকাবকি করে।

এদিকে গভীর রাতে ফারহান যখন তার শাশুড়ির কবরে আসে। তখন দেখা যায় কেউ একজন তার শাশুড়ির কবরে ওখানে উঁকিঝুঁকি মারছে । আর এটি দেখে ফারহান কিছুক্ষণের মধ্যেই লোকটিকে ধরে ফেলে। লোকটি ফারহানের কাছে আকুতি মিনতি করছে যাতে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। লোকটি আরো জানায় ঠাডা পরা লাশ আর এসব লাশের বাজারে অনেক দাম প্রায় দেড় কোটি টাকা দামে বিক্রি করা যায় এ সকল লাশগুলো। এই সকল কথা শুনে ফারহান তো একেবারেই অবাক। সে মনে মনে দুষ্টু বুদ্ধি আটে সে সিদ্ধান্ত নেয় তার শাশুড়ি এ লাশটাকে কসে বিক্রি করে দিবে বেশ কিছু টাকার বিনিময়ে।

এরপর ঐ লোকটিকে নিয়ে ফারহান তার শাশুড়ির কবর থেকে লাশটি উঠিয়ে নিয়ে চলে যায়। এদিকে ফারহানের কাছে তার স্ত্রী ফোন করেছে তার মেয়ের প্রচন্ড শ্বাসকষ্ট হচ্ছে তাই তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে। এই কথা শুনে কোন কিছু না ভেবেই তার শাশুড়ি লাসহ সহ অ্যাম্বুলেন্স এর গাড়িটিতে তার মেয়েকে উঠিয়ে নেয়। ফারহানের স্ত্রী কোনভাবে জানতো না এখানে যে তার মায়ের লাশ রয়েছে। পরবর্তীতে যখন সে জানতে পারে তার মায়ের লাশ রয়েছে। তখন সে অবাক হয়ে যায় এবং ফারহানকে তার এই কর্মকান্ডের জন্য খুবই রাগারাগি করতে থাকে এবং তার স্ত্রী তাকেও বলে দেয় যতদিন সে বেঁচে থাকতে তার মায়ের লাশ বিক্রি করতে দেবে না। আর এই সকল তর্কে বিতর্কে এক পর্যায়ে ফারহানের সাথে থাকা সেই লোকটি তার মেয়ে এবং শাশুড়ির লাশটি নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে করে চলে যায়।

সবশেষে দেখা যায় ফারহান তার শাশুড়ি লাশটিকে এক বিদেশের হাতে এক কোটি দশ লাখ টাকা দিয়ে বিক্রি করেছে। আর এখানেই নাটকের সমাপ্তি ঘাটে।

ব্যক্তিগত মতামত


নাটকটি আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে । নাটকের মূল চরিত্রে অভিনয় করা ফারহানের অভিনয়টা খুবই সুন্দর হয়েছে এবং তাকে এক ভিন্ন চরিত্রে দেখানো হয়েছে যেখানে সে খুবই লোভী একজন মানুষ থাকে। যে কিনা তার শাশুড়ির লাশটা পর্যন্ত বিক্রি করে দিয়েছে শুধুমাত্র টাকার লোভ। সর্বশেষ সব মিলিয়ে বলতে গেলে নাটকটা আমার কাছে মোটামুটি ভালো লেগেছে। আপনারা চাইলেই নাটকটি দেখতে পারেন।

ব্যক্তিগত রেটিং


আমি নাটকটি কে ৮/১০ দিচ্ছি।

নাটকের লিংক


Loading iframe

ধন্যবাদ সকলকে।


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP


VOTE @bangla.witness as witness



OR

SET @rme as your proxy