কত সময় পর্যন্ত বেঁচে থাকতে চাই?

moh.arif -

আজ - ২ই চৈত্র |১৪২৯ , বঙ্গাব্দ | বসন্তকাল |


আসসালামু-আলাইকুম। আদাব - নমস্কার। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, আশা করি সবাই ভাল আছেন।





ছবি এখান হতে নেওয়া হয়েছে।

যদি কখনো সুযোগ থাকে এ পৃথিবীতে নিজের ইচ্ছামত বেঁচে থাকার তাহলে আপনি কত বছর বেঁচে থাকতে চাইবেন? অনেকের হয়তো উত্তর হতে পারে ১০০ বছর ২০০ বছর কিংবা তারও অধিক কিংবা কম। কিন্তু আমাকে যদি বলা হয় আমি কতদিন পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে চাই। তাহলে আমি বলবো, আমি অতটুকু সময় পর্যন্ত বেঁচে থাকতে চাই যতটুক সময় পর্যন্ত আমি স্বাবলম্বী ও সুস্থ থাকতে পারি। কেননা আমি মনে করি অসুস্থ থেকে অন্যের উপর নির্ভরশীল কিংবা অন্যের বোঝা হয়ে অনেক বছর বেঁচে থাকার চেয়ে সকলের আদরে এবং যত্নে পৃথিবী থেকে বিদায় নেওয়াই শ্রেয়।

কেননা আমি অনেক বৃদ্ধকে দেখেছি যারা কিনা বয়সের ভারে একেবারেই নুয়ে পড়েছে। বিছানায় তাদের খাওয়া-দাওয়া জীবনযাপন। তারা বেঁচে আছে মরার মত করে। আর ওই মৃত্যুর গুলো আমাকে খুবই যন্ত্রনা দেয়। তাই আমি কখনোই অধিক বয়স পর্যন্ত বয়স পর্যন্ত বেঁচে থাকার প্রত্যাশা করিনা। এছাড়াও সমাজে এমন অনেক মৃত্যু আছে যে মৃত্যুতে অন্যরা বেঁচে যায়।

বৃদ্ধ বয়সে মানুষ আসলেই অন্যের বোঝা হয়ে যায়। তারা অন্যের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। নিজের ক্ষমতা, যশ , প্রতিপত্তি টাকা পয়সা সব কিছুই শেষ করে অন্যের দয়ার উপর নির্ভর করে চলতে হয়।

বৃদ্ধ বয়সে মানুষ অনেকটাই শিশুসুলভ হয়ে যায়। তাদের বোঝানোর ক্ষমতা কিংবা নিজে বুঝার ক্ষমতা অনেকটাই কমে আসে। সমাজে কিংবা পরিবারের তাদের প্রয়োজন গুলো দিন দিন কমতে শুরু করে। তারা নতুন জেনারেশনের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারেনা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে।

আমি মনে করি নাম ধরে ডাকা মানুষগুলো যখন পৃথিবীতে আর বেঁচে থাকে না তখনই একজন মানুষের প্রয়োজন ফুরিয়ে যায়। আর একজন ব্যক্তির মূল্য আছে ততদিন যতদিন সে অন্যের প্রয়োজন মেটাতে সক্ষম।

আমার এক দূরের আত্মীয় সম্পর্কে আমার দাদু হয়। বয়স সম্ভবত ১০০ এর বেশি হবে। বয়সের ভারে একেবারেই কুঁজো হয়ে গিয়েছিল। তেমন ভালো করে চলাফেরা ও করতে পারে না লাঠি ছাড়া। তবে মোটামুটি ভালো খারাপের মধ্যে থাকলেও শেষ দুই বছর ধরে একেবারে বিছানায় পড়ে গিয়েছিল। যত দিন যাচ্ছে পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যাচ্ছে। এরপর এমন এক পরিস্থিতি হয়েছে যে শুধুমাত্র তার শরীরে নিশ্বাসটা ব্যতীত আর কিছুই ছিলনা। আত্মীয়-স্বজন পাড়া প্রতিবেশী সকালেই ২-১ বার করে দেখতে আসে তার এই শেষ সময়গুলোতে। সকলের মোটামুটি প্রস্তুতি হয়ে রয়েছে যে এই যাত্রায় তার বেঁচে ফেরা হবে না। তাই স্বাভাবিকভাবে সকলেই মানসিক প্রস্তুত হয়ে রয়েছে সেই দুঃসংবাদটি শোনার অপেক্ষায়। কেননা তার এই বেঁচে থাকাটা মৃত্যুর থেকে কম যন্ত্রণাদায়ক নয়।

এমন ও একবার হয়েছে যে সকালে ভেবে নিয়েছে তিনি আর বেঁচে নেই। একেবারে নিস্তব্ধ শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে গিয়েছিল কিছুক্ষণ এর জন্য । তবে পার্বতীতে আবার কিছু সময়ের পর ধীরে ধীরে শ্বাস প্রশ্বাস নিতে শুরু করে। তবে সকলেই ধরে নিয়েছে হয়তো দুই একদিন তার এভাবেই বেঁচে থাকা হবে। তবে এভাবে করে তিনি ওই পরিস্থিতিতেও প্রায় এক বছর বেঁচে ছিলেন।

এরকম অনেক আছেন যাদের দীর্ঘ আয়ুগুলো যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই কি লাভ এমন দীর্ঘ আয়ু পেয়ে। একটা সুন্দর মৃত্যুই একটি জীবনের সুন্দর সমাপ্তি। তাই আমি কখনো এই অবহেলিত, মৃত্যু যন্ত্রণা সহ্য করে দীর্ঘদিন বেঁচে থাকতে চাই না। যদিও এটা সত্যি যে, কোনো মানুষ পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করতে চায়না সহজে।

সকলকে ধন্যবাদ অনুচ্ছেদ টি পড়ার জন্য।


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

VOTE @bangla.witness as witness



OR

SET @rme as your proxy