জেনারেল রাইটিং- জীবন্ত লাশ হয়ে বেচেঁ থাকা কয়েকটি দিন || written by@maksudakar ||

maksudakawsar -

আসসালামু আলাইকুম

আজ আর জিজ্ঞেস করবো না কেমন আছেন আপনারা। জানি আপনারা কেউ ভালো নেই। ভালো নেই প্রিয় কমিউনিটির স্পর্শ থেকে দূরে থেকে। ভালো নেই প্রিয় মানুষ গুলোর সাথে কাটাতে না পারা প্রতিটি মূহুর্তের জন্য। আর আমিও কিন্তু ভালো নেই। ভালো নেই আপনাদের কে না দেখতে পেয়ে। ভালো নেই প্রিয় কমিউনিটি থেকে দূরে থেকে। তাই তো আজ খুব তড়িঘড়ি করে চলে আসলাম আপনাদের মাঝে।

আমি @maksudakawsar, বাংলাদেশ হতে আপনাদের সাথে যুক্ত আছি। আমি আমার বাংলা ব্লগের একজন নিয়মিত গর্বিত ইউজার। গর্বিত বলছি এই কারনে যে, আমার চেয়ে ভালো ভালো অনেক ক্রেয়েটিভ মানুষ আছে যারা এমন একটি প্লাটফর্ম খুঁজে বেড়াচ্ছে নিজেদের যোগ্যতাকে মেলে ধরার জন্য। অথচ আমি কত ক্ষুদ্র একজন ইউজার, যার নেই তেমন ক্রেয়েটিভিটি। তবুও আমি এমন সুন্দর একটি প্লাটফর্মের একজন ভেরিফাইড ইউজার। তাই তো শত ব্যস্ততার মাঝেও আমি প্রতিনিয়ত চেষ্টা করি আপনাদের মাঝে নতুন নতুন এবং ভিন্ন কিছু পোস্ট নিয়ে উপস্থিত হতে। আজ আবার একটি নতুন পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হলাম।

সেই ছেলেবেলায় শুনেছিলাম যে ভালোবাসা কতটা গভীর সেটা উপলব্দি করতে হলে ভালোবাসার মানুষ হতে কিছুটা দূরে গেলেই অনুভব করা যায়। আর সেই কথাটিই যেন আজ কদিন যাবৎ বেশ উপলব্দি করলাম। উপলব্দি করলাম প্রিয় কমিউনিটির প্রিয় বন্ধুদের মুখগুলো কে কাছে না পেলে কতটা খারাপ লাগে। আর সাথে সাথে এটাও উপলব্দি করলাম যে প্রিয় কমিউনিটি ছাড়া কিছুতেই ভালো থাকা যায় না। যায় না শান্তিতে থাকাও।

CANVA দিয়ে তৈরি

জীবন্ত লাশ হয়ে বেচেঁ থাকা কয়েকটি দিন

ব্যস্ত মানুষ আমি। সেই সাথে ব্যস্ততায় ভরা আমার প্রতিটি দিন। আর সেই ব্যস্ত মানুষটিই যখন বাস্তবতার চাপে পড়ে ঘর বন্দী হয়ে পড়ে তখন কি আর তার ভালো লাগে? ছাড়া গরু কে যেমন খামারে বেধেঁ রাখা যায় না। ঠিক তেমনি করে বনের পাখি কেও খাঁচায় বন্দী করে রাখা যায় না। আর সেই রকমের যদি কোন ব্যস্ত মানুষকে ব্যস্ততা থেকে দুরে সরিয়ে রাখা হয় তাহলে তাদেরই বা কেমন লাগবে বলেন তো? ঠিক আমারও হয়েছে সেই রকম। একদিকে নেই কোন কাজকাম। আর অন্যদিকে প্রিয় মানুষগুলো থেকেও দূরে এক অচিন পৃথিবীর বাসিন্দা হয়ে বেচেঁ থাকা। এ যেন এক জীবন্ত লাশ হয়ে বেচেঁ থাকা।

যেখানে প্রতিদিন দিনের শুরুই হয় জেনারেল চ্যাট প্রিয় বন্ধুদের সাথে হায় হ্যালো করে। সেখানে দিনের শুরুটাই হয় দেশের হাহাকারের খবর নিয়ে। কেমন যেন এক পৃথিবীর বাসিন্দা হয়ে বেচেঁ ছিলাম এই কয়টি দিনে। সারাক্ষন শুধু অপলোক চোখে তাকিয়ে ছিলাম যে কখন সেই অমূল্য ইন্টারনেট আসবে আর কখনই বা বন্ধুদের সাথে কথা বলবো। আর নিজের ক্রেয়েটিভিটি সবার মাঝে তুলে ধরবো। চারদিকের হাহাকার গুলো মনের ভিতরে তৈরি করেছিল এক রকমের অশান্তির। বাচঁবো কি মরে যাবো সেই চিন্তুায় দিন কাটানো যে কতটা কষ্টের সেটা একমাত্র আমিই বুঝেছি।

ইউটিউব, ফেইসবুক আর ইন্টারনেট জগৎ থেকে দূরে থাকা সময়গুলো যে কত কষ্টের সেটা আমরা বাঙালী জাতি বেশ বুঝে গেছি। আমার মনে হয় কেবলমাত্র আমি নয়। প্রিয় কমিউনিটির অনেক বন্ধুই তাদের কয়েকটি দিনের সময় পার করেছে জীবন্ত লাশ হয়ে। একদিকে চারদিকের কঠিন পরিস্থিতি। ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের অকাল মৃত্যু। আর অন্যদিকে অস্থিকর কিছু সময় কে মেনে নেওয়া। সব যেন আমাদের সকল কে জীবন্ত লাশ করে রেখেছিল। যদিও আমাদের প্রত্যেকের মনের ভিতর ছিল ভয়, ঘৃণা আর হতাশা।

দিনে কতবার যে ইন্টারনেট ওয়ালা ভাইয়াদের কে ডিস্টাব করেছি। কে জানে আমাকে আবার পাগল ভাবলো কিনা? যাক পাগল হলে না হয় হলাম। কিন্তু কি করে বাচঁবো, কি করে এই বন্দী সময় পার করবো সেই চিন্তুা করতে করতে যেন অসুস্থ হয়ে পড়ছিলাম। কম কথা। ৬-৭ দিন সমস্ত কিছু থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে জীবন পাড় করা। সমস্ত বন্ধুদের থেকে নিজেকে গুটিয়ে রাখা। আর নিজের মনের অনুভূতি গুলো কে নিজের মধ্যে বন্দী করে রাখা যে কত কষ্টের সেটা কেবল আমি নিজেই বুঝেছি। সব মিলিয়ে এক জীবন্ত লাশ হয়ে বেচেঁ ছিলাম এই কয়টা দিন।

শেষ কথা

আসলে এখন বুঝলাম যে ভালোবাসা কি? এখন বুঝলাম যে বন্ধুত্ব কি? দোয়া করি আর যেন এমন করে দূরে সরে থাকতে না হয় আমাদের কাউকেই। আপনাদের অনুভূতিগুলো জানার অপেক্ষায় রইলাম।

ধন্যবাদ সকলকে
@maksudakawsar

নিজেকে নিয়ে কিছু কথা

আমি মাকসুদা আক্তার। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @maksudakawsar হিসাবে পরিচিত। ঢাকা হতে আমি আমার বাংলা ব্লগের সাথে যুক্ত আছি। আমি একজন গৃহিনী এবং চাকরিজীবী। তারপরও আমি ভালোবাসি আমার মাতৃভাষা বাংলায় নিজের মনের কথা গুলো আমার বাংলা ব্লগের প্লাটফর্মে শেয়ার করতে। আমি ভালোবাসি গান শুনতে এবং গাইতে। আমি অবসর সময়ে ভ্রমন করতে এবং সেই সাথে সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি নিজের ক্যামেরায় বন্দী করতে ও ভালোবাসি। মাঝে মাঝে নিজের মনের আবেগ দিয়ে দু চার লাইন কবিতা লিখতে কিন্তু আমার বেশ ভালোই লাগে। সর্বোপরি আমি ভালোবাসি আমার প্রাণপ্রিয় মাকে।