নমস্কার বন্ধুরা,
বিগত এক ৫ দিন আমার বাংলা ব্লগ এবং সেই সাথে আমরা যে কজন অনলাইনে ছিলাম সবাই কি পরিমাণ চিন্তায় দিন কাটালাম সেটা ভাষায় প্রকাশ করে বলা সম্ভব নয়। আসলে বিগত কয়েক বছরে আমার বাংলা ব্লগ এবং ব্লগের সদস্যদের সবার সাথে এক আত্মিক সম্পর্ক তৈরি হয়ে গিয়েছে। কোনো সদস্য দু-একদিন দেখলাম না কিংবা কেউ হয়তো কিছুদিনের জন্য ইনএকটিভ থাকলেন সে ব্যাপারটা বোঝা যায়। কিন্তু হুট করে সবাই যদি অনিশ্চয়তার মধ্যে থাকেন তাহলে স্বভাবতই চিন্তা এবং খারাপ লাগা দুটো চেপে বসে। বাড়ির কাউকে যদি হঠাৎ না দেখতে পান তাহলে যেমন অনুভূতি হয় আরকি।
মূলত ছাত্র আন্দোলনের পরবর্তীতে সহিংসতার কারণে বাংলাদেশের ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যায়, তার পর আমার বাংলা ব্লগ কদিন অনেকটা ভূতের বাড়ির মতো হয়ে গিয়েছিল। পরিচিত মানুষ গুলো কেমন আছে? কি করছে সেই চিন্তা সব সময় কুরে কুড়ে খেয়েছে। যদিও আরিফ ভাই ফোন করে তাদের অবস্থা আমাকে জানিয়েছে তবুও মনটা একদম ভালো লাগছিল ছিলো না। গুটিকয়েক ভারতীয় সদস্যরা ছিলেন বলে ডিসকর্ড টুকটাক কথা চলছিল আর সবাই মিলে হাতে গোনা ৭/৮ জনের নতুন পোস্ট। যেখানে আমার বাংলা ব্লগে প্রতিনিয়ত ২০০ র অধিক এক্টিভ পোস্ট দাতা থাকে সেখানে হুট করে নেমে যা বর্তমানে ১৫০ র নীচে নেমে এসেছে।
এসবের মাঝে যখন হঠাৎ করে শুভ দার মেসেজটা ঢুকলো তখন মনটা যারপরনাই খুশিতে ভরে গেলো। আসলে যে মানুষগুলোকে সারাক্ষণ দেখতে থাকি, যাদের সাথে সারাক্ষণ ভার্চুয়ালি কথাবার্তা চলতেই থাকে সেই মানুষগুলোর সাথে ৪-৫ দিন কথা না হওয়ার থাকার পরে যখন তারা ফিরে আসেন স্বাভাবিক ভাবে দারুন একটা ভালো লাগা কাজ করে। শুভদাকে রিপ্লাই করে সোজা আমাদের জেনারেল চ্যাট খুলে ফেললাম। সেখানেও দেখি দু-তিন জন বাংলাদেশী সদস্য মেসেজ করেছেন। এক শান্তির বার্তা পেলাম। সবাই ভালো আছেন এবং ধীরে ধীরে সবাই ফিরবেন এই আশাতে মনটা যেন নেচে উঠলো।
চ্যাটে তাদেরকে মেনশন করে সোজা চলে গেলাম আমার বাংলা ব্লগে। সেখানে গিয়ে দেখি দুজন পোস্ট করেছেন। কি যে ভালো লাগছিল পোস্ট গুলো দেখে, ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না। পাঁচদিন আমার বাংলা ব্লগ থেকে দূরে থেকে আপনারাও নিশ্চই অনেক কষ্ট পেয়েছেন। দিনের শেষে বেশিরভাগ কেউ কাউকে দেখিনি তবুও আমরা একটা ভার্চুয়াল পরিবার। সেটাই আরো বেশি করে বুঝতে পারলাম এই চার পাঁচ দিনের ইন্টারনেট হীনতায়। সবশেষে যারা ফিরে এলেন সবাইকে সুস্বাগতম। চলুন আবার আমরা সবাই মেতে উঠি প্রাণচঞ্চল এই পরিবারে।