হ্যালো বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই, আশা করি আল্লাহর রহমতে আপনারা সবাই অনেক ভাল আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে গতকালকের বাংলাদেশ বনাম আফগানিস্তানের অঘোষিত ফাইনাল খেলাটির রিভিউ শেয়ার করবো। যারা খেলাটি সরাসরি দেখতে পারে নাই, তারা ইচ্ছা করলে রিভিউ পড়েই সম্পূর্ণ খেলা সম্পর্কে ধারনা পেয়ে যাবে।
বন্ধুরা গতকালকে আফগানিস্তান বনাম বাংলাদেশের মাঝে খেলাটিকে টিভিতে, সব নিউজ পেপারে অঘোষিত ফাইনাল খেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। তার কারণ হলো তিন ম্যাচ সিরিজের মধ্যে বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তান একটি করে খেলায় জয় লাভ করে সমতায় ফিরেছিল। দুই দলই সিরিজ জয়ের আশায় মত্ত ছিল। গতকাল দুই দলই খুবই ভালো খেলেছে। সম্পূর্ণ খেলার মধ্যে টানটান উত্তেজনা ছিল। বাংলাদেশ দল প্রথম দিকে মাত্র ৭২ রানে তার উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে ছিল। তবে মাহমুদুল্লাহ এবং ক্যাপ্টেন মেরাজের নৈপুণ্যে বাংলাদেশ মোটামুটি লড়াই করার মত রান সংগ্রহ করকে পেরেছিল। তবে শেষের দিকে আরো কিছু রানের দরকার ছিল। যদি আর ২০ থেকে ২৫ রান করতে পারতো, তাহলে হয়তো বিজয়ের স্বাদ বাংলাদেশ গ্রহণ করতে পারতো। যাই হোক তারপরেও মোটামুটি ভালই খেলা হয়েছে।
গতকাল মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিকাল চারটার সময় বাংলাদেশ টিম টস জিতে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেয়। দ্বিতীয় ম্যাচটিতে ও বাংলাদেশ টস জিতে ব্যাটিং করে বিজয় পেয়েছিল। সেজন্য সিরিজ নির্ধারণকারি ম্যাচে বাংলাদেশের টস জিতে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্তকে সবাই স্বাগত জানিয়েছিল। বাংলাদেশের পক্ষে ওপেনিং হিসেবে ব্যাটিং করেছিল তরুণ বেটার তানজিদ হাসান ও বাংলাদেশের একজন পুরাতন খেলোয়াড় সৌম্য সরকার। এ দুজন দ্বিতীয় ম্যাচে মোটামুটি কিছুটা রান করেছিল, গতকালকেও অল্প অল্প রান করেই শুরুটা করেছিল। তানজিদ হাসান ২৯ বলে ১৯ রান ও সৌম্য সরকার ২৩ বলে ২৪ রান করে। তবে এই দুজনের ব্যাট থেকে কোন ছয়ের বাউন্ডারী না আসলেও দুজনের তিনটি করে চারের বাউন্ডারি মেরেছে।
তারপর জাকির হোসেনের ভাগ্যটা খুবই খারাপ ছিল, সে মাত্র সাত বলে চার রান করে রান আউট হয়ে যায়। আর রান আউট হওয়া একটি দলের জন্য খুবই খারাপ দিক। জাকির হোসেন আউট হওয়ার পরে মাঠে আসে ক্যাপ্টেন মেহেদী মিরাজ। তাকে সঙ্গ দিতে গিয়ে মাত্র ১৪ বলে সাত রান করে রশিদ খানের বলে গুলবাদিন এর হাতে ক্যাচ দিয়ে মাঠ ছাড়ে হিটার ব্যাটসম্যান তৌহিদ হৃদয়। তবে মেহেদি মিরাজের সাথে ভালো একটি জুটি বেঁধেছিল মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। মাত্র ৭২ রানে চার উইকেট হারিয়ে খাঁদের কিনারায় পড়েছিল বাংলাদেশ। সেখান থেকে এই দুইজন বাংলাদেশকে টেনে তুলেছিল। দুইজনে যুক্তি পরামর্শ করে ধীরে ধীরে খেলার চেষ্টা করেছে। মেহেদী মিরাজ ১১৯ বল খেলে ৬৬ রান করে। সে ১১৯ বল মোকাবেলা করলেও খেলাটি ধরে রাখার চেষ্টা করেছিল। অপরদিকে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ মোটামুটি ভালোই খেলেছিল মাত্র ২ রানের জন্য রিয়াদের সেঞ্চুরি হাত ছাড়া হয়ে গেল। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ৯৮ বল মোকাবেলা করে ৯৮ রান করে। আমরা তার নামের পাশে সাতটি চার ও তিনটি ছয়ের বাউন্ডারি দেখতে পাই। তবে মাহমুদুল্লাহ গতকাল কিছুটা ইনজুরি ছিল। সে দৌড়াতে পারছিল না। তার পায়ের মধ্যে মারাত্মক ব্যথা ছিল। যাই হোক তারপরও খুবই ভালো খেলেছে। এ দুজন আউট হওয়ার পরে আর তেমন কেউ উল্লেখযোগ্য কোনো রান করতে পারেনি। সবমিলিয়ে বাংলাদেশ দল ৫০ ওভার মোকাবেলা করে আট উইকেট হারিয়ে ২৪৪ রান করতে সক্ষম হয়।
দ্বিতীয় পর্বে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ আফগানিস্তানের পক্ষে ওপেনিং করে রাহমাতুল্লাহ গুরুবাজ ও সাদিকুল্লাহ আতল। গতকাল রাহমাতুল্লাহ গুরবাজ কে নিয়েই বাংলাদেশের মধ্যে আলোচনা ছিল। কারণ সে যদি দাঁড়িয়ে যায় তাহলে বাংলাদেশ যত রানই করুক জেতার সম্ভাবনা খুবই কম। বাংলাদেশের মানুষের ধারণা সঠিক প্রমাণিত হয়েছে। রহমাতুল্লাহ গুরবাজ খুবই ধৈর্য সহকারে খেলার চেষ্টা করেছে। কিছুতেই সে মাথা গরম করে নাই। তাকে রেখে চারজন ব্যাটসম্যান আউট হয়ে গেলেও সে শেষ পর্যন্ত লড়াই করে গেছে। রাহমাতুল্লাহ গুরবাজ ১২০ বল মোকাবেলা করে ১০১ রান করার মাধ্যমে তার জীবনের অষ্টম সেঞ্চুরি পূর্ণ করে। আমরা দেখতে পাই সে পাঁচটি চার ও সাতটি ছয় মেরে তার ইনিংস সাজিয়েছিল। তাকে রেখে নাহিদ রানার বলে মাত্র ১৪ রান করে আউট হয় সিদ্দিকুল্লা আতল। তারপরে রহমত শাহ ও তেমন ভালো করতে পারেনি, মাত্র ২২ বলে আট রান করে। আফগানিস্তানের ক্যাপ্টেন হাসমত উল্লাহ সাহিদী মাত্র ২১ বলে ছয় রান করে।
আফগানিস্তানের পক্ষে কঠিন সময়ে দলের হাল ধরে রেখেছিল আজমত উল্লাহ উমারযাই সে খেলার শেষ পর্যন্ত লড়েছিল। সে ৭৭ বলে ৭০ রান করে অপরাজিত থেকে যায়। তার হাত ধরেই আফগানিস্তান বিজয়ের বন্ধরে পৌঁছে যায়। যদিও তাকে কিছুটা সঙ্গ দিয়ে ছিল ২৭ বলে ৩৪ রান করা মোহাম্মদ নাবি। মোহাম্মদ নাবি তিন ম্যাচের মধ্যেই খুবই ভালো করে ছিল, যার ফলে সে প্লেয়ার অব দ্য সিরিজ নির্বাচিত হয়। অপরদিকে জীবনের অষ্টম সেঞ্চুরি করা রাহমাতুল্লাহ গুরবাজ ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ নির্বাচিত হয়।
আমরা যদি একটু বোলিং এর বিষয়টা আলোচনা করি তাহলে দেখতে পাই আফগানিস্তানের পক্ষে আজমত উল্লাহ সাত ওভার বল করে মাত্র ৩৭ রান দিয়ে একাই চারটি উইকেট শিকার করে নেয়। গতকাল বাংলাদেশের বোলিং তেমন ভালো হয়নি। নাহিদ রানা, মোস্তাফিজুর রহমান ১০ ওভার করে বল করে মাত্র দুইটি করে উইকেট পেয়েছিল। যদি বাংলাদেশ বোলিং আরেকটু ভালো করতো তাহলে খেলার রেজাল্ট হয়তো পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা ছিল।
পরিশেষে আমরা বলতে চাই বাংলাদেশ প্রথম খেলা থেকে পরের দুইটি খেলা খুবই ভালো খেলেছে। বাংলাদেশকে আরেকটু অ্যালার্ট হতে হবে। বোলিং বেটিং দুই ফরমেটেই বাংলাদেশকে নজর দিতে হবে। শতভাগ চেষ্টা করলে একদিন বিজয় আসবেই আসবে, ইনশাল্লাহ।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server