অবশেষে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললাম।

joniprins -

আমার বাংলা ব্লগ
মাতৃভাষা বাংলার নাম্বার ওয়ান কমিউনিটি-

Image Source

হ্যালো বন্ধুরা,
কেমন আছেন সবাই। আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন,সুস্থ আছেন। আসলে বাস্তবে কেমন আছেন,সেটা তো আর জানি না। তারপরও ভালো আছেন,সেই আশা রাখি। গত আটদিন যাবৎ আমি ঢাকার বাহিরে ছিলাম। চলে গেছিলাম ইন্টারনেট থেকে অনেক দুরে, অন্ধকার এক জগতে। শুধু আমি একা অনলাইন থেকে দুরে ছিলাম না,বাংলাদেশের সব জনগনই এক সাপ্তাহ ধরে অফলাইন হয়ে আছে। সবার নামের পাশে লাল বাতি জ্বলে আছে। কয়দিন পর্যন্ত সেই লাল বাতি জ্বলবে সেটা এখনও ঠিক ভাবে বলা যাচ্ছে না। যারা ব্রডব্যান্ড ইউজার তারা গতকাল থেকে কিছুটা অনলাইন হয়েছে।

গত মঙ্গলবারে একদিন ছুটি নিয়ে গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলাম। যাওয়ার সময় কোটা সংস্কার আন্দোলন কারীদের উপরে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের ছাত্র-সংগঠন ছাত্রলীগ এবং পুলিশবাহিনীর নির্মম হামলার কারনে আমার বিরক্তিকর একটি জার্নি হয়েছিল। যায়হোক আমার প্লান প্রোগ্রাম ছিল বোধবারে ফিরে আসতে না পারলেও বৃহস্পতিবারে চলে আসবো। কিন্তুু ছাত্রদের উপর নির্মম হামলার কারনে কোটা সংস্কার আন্দোলন কারীদের সমন্বয়ক বৃহস্পতিবার থেকে কমপ্লিট শাটডাউনের ডাক দেয়। তাদের ডাকে সারা দেয় সাবেক বর্তমান সব ছাত্রছাত্রীরা। সবাই মিলে এক দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলে। সরকার তাদের আন্দোলনকে প্রতিহত করার জন্য ঐদিন থেকে সারাদেশে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেয়। সেই সাথে মোবাইলের নেটও স্লো করে দেয়। বৃহস্পতিবার সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে মোবাইলের ডাটা অন করেও অফলাইন দেখানোর কারনে মেজাজ গরম হয়ে গেলো। সেই সাথে মোবাইল কোম্পানিকেও দুই একটি গালাগাল দিয়ে দিলাম। মোবাইলটি কিনেছি বেশিদিন হয়নি। এত তারতারি নেট প্রবলেম হওয়ার কথা না। তারপর কয়েকবার অন অফ করে,রিস্টার্ট দিয়ে ডাটা কানেকশন না পেয়ে কয়েক জাগায় ফোন দিয়ে জানতে পারি,সরকারের পক্ষ থেকে ইন্টারনেটসেবা বন্ধ আছে। এর পর থেকেই অফলাইন হয়ে গেলাম। মোবাইলের গুরুত্ব হারিয়ে গেলো। এখানে সেখানে মোবাইল পরে থাকে। মোবাইলে চার্জ দেওয়ার প্রয়োজনও মনে করি নাই। গত পাঁচ দিনে মাত্র একবার মোবাইল চার্জ দিয়েছিলাম। সেটাও আবার আজকে দুপুরে লাঞ্চের সময়।

বৃহস্পতিবারে ইন্টানেট সেবা বন্ধ করে দেওয়ার পরেও কোটা সংস্কার আন্দোলন কারীরা তাদের আন্দোলন চালিয়ে গেলো। মোটামুটি ভালোই ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। ইট পাটকেল ছোঁড়া সহ আন্দোলন কারীদের উপরে পুলিশ রাভার বুলেট, গরম জল, টিয়ার শেল, গ্যাস নিংক্ষেপ করেছে। আন্দোলনের গতি ত্বরান্বিত হওয়া দেখে সরকার গত শনিবার থেকে সারা বাংলাদেশে সান্ধ্য আইন বা কারফিউ জারি করে। চারদিন কঠোর ভাবে সেই আইন পালন করা হয়। রাস্তাঘাটে সব জাগায় প্রশাসনের লোক টহল দিয়েছে। সব মিলিয়ে একটি ভীতিকর অবস্থা ছিল। আজকে সকালে নিউজ পেপারে দেখলাম এখন পর্যন্ত ২০২ জন মানুষ মারা গেছে।

এক দিকে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ অন্যদিকে কারফিউ জারি সেই সাথে শনিবারে আবার আমি অসুস্থ হয়ে গেলাম। কয়েকদিন প্রচন্ড গরম পড়েছিল। মটর দিয়ে নিচের ঠান্ডা পানি দিয়ে দিনে দুই বার গোসল করেছিলাম। ফলে শনিবারে সকাল থেকে জ্বর, ঠান্ডা, কাঁশি আর মাথা ব্যথা শুরু হয়ে যায়। প্রথমে তেমন গুরুত্ব দেয়নি। একটা ফেক্স-১২০ ও একটা নাপা এক্সট্রা খেয়েছিলাম। দিনের বেলা তেমন জ্বর ছিল না। তবে রাতের বেলা অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। দুই নাক টোটালি বন্ধ হয়ে যায়। জ্বরের সাথে কাঁশি ছিল। আবার নাপা এক্সট্রা আর ফেক্সে খেলাম। তেমন কাজ হলো না। জ্বর দুইদিন স্থায়ী হওয়ার কারনে পেরাসিটামলের সাথে অ্যান্টিবায়োটিক সিপ্রোফ্লক্সাসিন খেলাম। দুইটা অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার পরে মোটামুটি জ্বরটা কমতে শুরু করেছে।

যায়হোক অবশেষে গত পরশুদিন আন্দোলনকারীদের মূল দাবি কোটা সংস্কার করে সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে। ২০১৮ সালের বাতিল করা হাইকোর্টের রায় পূণরায় জীবিত করার ফলে সুপ্রিম কোর্ট আবার সেটা বাতিল করেছে। এখন মেধার ভিত্তিতে ৯৩ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৫ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ১ শতাংশ, প্রতিবন্ধীদের ১ শতাংশ কোটায় সরকারি চাকরিতে নিয়োগ হবে। সরকার স্টুডেন্টদের সব দাবী মেনে নিয়েছে কি না জানি না। তবে গতকাল থেকে রাস্তাঘাটে গাড়ি চলতে আদেশ দেয়। ফলে অফিস আদালত ধীরে ধীরে খুলতে শুরু করেছে। আমাদের অফিস চারদিন বন্ধ থাকার পরে গতকাল খুলেছে। আমি অসুস্থ থাকার কারনে আজকে সকাল বেলা অফিসে এসে উপস্থিত হলাম। অফিসে এসেই ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পেয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললাম। যদিও বাসায় গেলে ওয়াইফাই পাবো। সেটা সন্ধার পরে। এখন মোটামুটি কমিউনিটির কাজ গুলো আপডেট করতে পারবো। তবে আমরা চাই দ্রুত সব ইন্টারনেট সেবা চালু করে দেওয়া হোক।

সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।

আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।

Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন

এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP

Click Here For Join Heroism Discord Server

Posted using SteemPro Mobile