কেমন আছেন আপনারা? আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার সহায়তায় ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকে ভালোবেসে উপস্থিত হলাম সুন্দর একটি বাংলা নাটক রিভিউ নিয়ে। বৃন্দাবন দাস রচিত জনপ্রিয় এই নাটকের নাম আলতা সুন্দরী। এই নাটকে মোট ৬২ পর্ব। আজকে আমি উপস্থিত হলাম ২৭ তম পর্ব রিভিউ করে শেয়ার করতে। চলুন তাহলে শুরু করি।
📺স্ক্রিনশট: ইউটিউব📺
নাটক বিবরণী
নাটকের নাম
আলতা সুন্দরী
রচনা
বৃন্দাবন দাস
পরিচালক
সালাহউদ্দিন লাভলু
অভিনয়ে
চঞ্চল চৌধুরী, আ খ ম হাসান, শামীম জামান, রহমত আলী, ম ম মোরশেদ, জয় রাজ, রাশেদা চৌধুরী, মনিরা মিঠু, সাইকা আহমেদ, লারা লোটাস, পুতুল, ডায়না সহ আরো অনেকে।
নতুন নায়িকা গানের দলে যুক্ত হয়ে ভিলেন নসুর অনেক ভালো হয়েছে। সে চেষ্টা করে সব সময় তার সাথে কথা বলার, তার কথার স্পর্শে থাকা। এদিকে নায়িকা তার রূপের যাদু দিয়ে সবাইকে আকৃষ্ট করে রাখার চেষ্টা করে। মাঝেমধ্যে নায়িকা নসুর গায়ে হাত লাগাই, রোমান্টিক কথা বলে, সাথে নিয়ে গ্রাম ঘুরে বেড়ায়। মাঝেমধ্যে তাকে এমন ভাবে কথা বলে, তার মত উঁচা লম্বা দেখার মত সুদর্শন পুরুষ নেই বললেই চলে। নায়িকার মুখে এ সমস্ত কথাগুলো শুনে নসুর অনেক ভালো লাগে। তাই সে চেষ্টা করে নায়িকার সাথে সাথে গ্রামটা ঘুরে বেড়ায় মজার মজার গল্প করি। তেমনি পথ চলতে কথা বলতে দেখা হল হাসেম জোয়ারীর সাথে। কিন্তু হাসেম জোয়ারী তাকে এমন অবস্থায় দেখলো সে নায়িকার জুতা বোগোলে করে বহন করছে। আর এমন অবস্থায় যখন তার সাথে কথা হয়, সে যেন হালকা লজ্জা পায়। তবে কথায় কথায় নায়িকা হাসেম জোয়ারী কে বলে, সে তাকে খোঁজ না নিলেও দলের নায়ক ভিলেনরা ঠিকই খোঁজ রাখছে তার।
📺স্ক্রিনশট: ইউটিউব📺
এদিকে রহিম বাদশা এখনো তার আলতা সুন্দরীকে পাওয়ার আশায় তন্ন তন্ন করে খুঁজে চলছে। হঠাৎ তার মাথায় এসেছে হাসেম জোয়ারী যদি আলতা সুন্দরীর শ্বশুরবাড়ির সংবাদ দেয়, তাহলে সে এক ঝলক দেখার জন্য আলতা সুন্দরী শ্বশুরবাড়িতে যাবে। কিন্তু কথায় কথায় এমন ভাবে সে বলে বসলো হাসেম জোয়ারীর জুয়া খেলায় কখনো কোন মেয়ে মানুষ অংশগ্রহণ করেনি কিন্তু রহিম এর বক্তব্য ছিল মেয়ে মানুষটা পরিচয় জানা। তখনই হাশেম রেগে ওঠে। কারণ তার দলে কোন মেয়ে মানুষ ছিল না। তাই সে মনে করে বসলো চ্যাংড়া ছেলেপেলেদের বিয়ের ভূত মাথায় আসলে পাগল হয়ে যায়। তাই সে আলতার কোন খবর না দিয়ে বরঞ্চ তাকে অবজ্ঞা করে চলে গেল।
📺স্ক্রিনশট: ইউটিউব📺
নতুন নায়িকা বেশ কিছুদিন হল গ্রামে এসেছে কিন্তু আজ পর্যন্ত তার চা খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়নি। এই গ্রামে একজন মাত্র ব্যক্তির কাছে চায়ের যন্ত্রপাতি আছে। তা হচ্ছে গুলজার এর কাছে। হাশেম নায়িকার জন্য চায়ের ব্যবস্থা করতে স্মরণ করেছে গুলজারের কথা। গুলজারের বাড়িতে এসে উপস্থিত হয়। গুলজার সব সময় মনে করে গানের দলে তাকে নেওয়ার ব্যবস্থা করে দিক হাশেম। হাসেম হয়তো তাকে গানের দলে নেওয়ার বিশেষ কোন কথা বলতে এসেছে। যখন জানতে পারলো নায়িকাকে চা খাওয়ানোর বিষয়টা তখন সে যন্ত্রপাতি না দিয়ে বলল নিজেই নায়িকা কে চা বানিয়ে দিবে অর্থাৎ হাশেমের মনের মধ্যে এটা জাগ্রত হল যে কিভাবে নায়িকার আমার সাথে মিল তাল তৈরি করা যায় এবং গানের দলে অংশগ্রহণ করা যায়। তাই সে খুনকার বংশের ছেলে হয়েও সামান্য গানের দলের নায়িকার চা তৈরি করে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত।
📺স্ক্রিনশট: ইউটিউব📺
এদিকে নসু ভিলেন নতুন নায়িকার সংস্পর্শে এসে বেশ ডাট বেড়ে গেছে। নতুন নায়িকা তার সাথে চলছে কথা বলছে গায়ে হাত রাখছে বন্ধুসুলভ আচরণ করছে, এতে নসু ভিলেনের মনের মধ্যে অন্যরকম শিহরণ জেগেছে। কারণ এখন পর্যন্ত নতুন নায়িকা কারো সাথে এভাবে চলেনি কাউকে স্মার্ট নায়কের মত দেখতে বলেনি। নতুন নায়িকা মাত্রই নসু কেই বলেছে। এদিকে নায়ক মেসের দেখতে বেশি উচা লম্বা নয়। নায়িকার পাশে দাঁড়ালে মনে হয় নায়িকা তার বড়। এই দুর্বলতা মনে রেখেই নসুর মনে আনন্দ। কিন্তু মেসের তার সরল মনের পরিচয় দিয়ে বলল তাদের বন্ধু আলতা সুন্দরী যখন নায়িকার পাঠ করত তার জানটা ভরে যেত। সে চাই কোন মেয়ে মানুষ নাচ গান না করুক তার সাথে। ছেলেমানুষ হলেও বন্ধুর সাথে অভিনয় করার মজা ছিল অন্যরকম, নতুন এই মেয়ের সাথে মোটেও তার কাছে সন্তোষজনক মনে হচ্ছে না।
📺স্ক্রিনশট: ইউটিউব📺
এদিকে পারুলের মায়ের অনুরোধে আলতা সুন্দরী অর্থাৎ নছের পারুল দের বাড়িতে এসেছে। পারুল তাকে দেখে মনের মধ্যে আনন্দ পায় কিন্তু বুকের চাপা থাকা খোবগুলো মুখ দিয়ে বার করতে থাকে। কারণ এতদিন সে তার খোঁজ রাখেনি। হয়তো বিরহের মুহূর্তে মুখ দিয়ে অনেক কিছু বের করে বলেছে তাই বলে প্রিয় ব্যক্তি তাকে ছেড়ে দূরে থাকবে। এই এমন ভাবে বলতে থাকে হয়তো এই মানুষটা তার মন বোঝেনা তাই যে কোন মুহূর্তে তাকে বিষ খেয়ে মারা লাগতে পারে। ভালোবেসে কেন সে ভালোবাসার মানুষের মনের খবর বুঝতে পারে না। পারুলের মনে এ জাগায় কষ্ট। তবে পারুলের মা ইঙ্গিত করে আলতা সুন্দরী কে বোঝায় সে যেন তার মেয়ের রাগটা ভাঙ্গায় এমনকি পাশে বসে। কারণ যে কলঙ্কের জন্য আজ তাদের ভালোবাসা দুদিকে সরে গেছিল, এখন সে কলঙ্কের বিষয়টা দূর হয়ে গেছে। তাদের মধ্যে কেন তফাৎ থাকবে। পারুলের মায়ের মনের কথা এবং ইঙ্গিত সবসময় এটাই বলে।
📺স্ক্রিনশট: ইউটিউব📺
এদিকে গানের দলে নায়িকা রিহার্সাল করতে গিয়ে শাড়ি পড়তে চায় না। নায়িকা যদি শাড়ি না পড়ে তাহলে কে আলতা সুন্দরির পাঠ করবে। এই নিয়ে বেশ তর্ক বিতর্ক শুরু হয়ে গেল। নতুন নায়িকা রানী বললো সে কোনদিন শাড়ি পরে না চিনি। শাড়ি পড়ে নাচ গান করতে আগের মানুষের। আধুনিক যুগে শাড়ির প্রচলন নেই। এখনকার নায়িকারা প্যান্ট শার্ট জামা পরে নাচে। সে প্যান্ট শার্ট ও জামা পরে নাচবে। কিন্তু গানের দলের ওস্তাদ ফেলুদায়েন কিছুতেই তার কথা মেনে নিতে পারল না। কারণ তার দল সে যেভাবে পরিচালনা করে অর্থাৎ রুচি সম্পন্ন হবে সেটাই সে চেষ্টা করবে পরিচালনা করতে। কিন্তু সব সময় হাসেম জোয়ারী নায়িকার পক্ষ নিয়ে কথা বলে। নায়িকার পক্ষ নিয়ে বললে তো আর দল চলেনা। দলের একটা মান ইজ্জত রয়েছে এবং জনগণের চাহিদা রয়েছে পাশাপাশি আলতা সুন্দরীর পাঠ ঠিক ভাবে চালানোর বিষয় রয়েছে। আর এভাবেই যেন মনোমালিন্য থেকে গেল উভয়ের মধ্যে।
📺স্ক্রিনশট: ইউটিউব📺
আমার মতামত:
আমরা এই পর্বের লক্ষ্য করে দেখেছি হাসেন জোয়ারীর অভিনয়টা একটু বেশি। নতুন নায়িকা গানের দলে যুক্ত করায় তার দায়িত্ব বেড়ে গেছে। নায়িকাকে কিভাবে স্টেজে উঠাতে হবে। কিভাবে ওস্তাদের সাথে মানিয়ে চলতে হবে। আবার তার চা খাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এদিকে আমরা খেয়াল করে দেখেছি নতুন নায়িকা রানী দলের যুবক ছেলেদের কে কিভাবে ভুলিয়ে পালিয়ে রাখা যায় সেই ভাবেই অগ্রসর হচ্ছেন। তবে নায়ক তার সাথে মিলতাল শুরু না করলেও গানের দলের ভিলেন বেশ তার কথায় মেতে উঠেছে। তার সাথে পথ চলতে যেন অনেক ভালো লাগছে কথা বলতেও ভালো লাগছে এমনকি নায়িকা যখন তার সংস্পর্শে অর্থাৎ গায়ে হাত লাগাচ্ছে তখন তার মনের মধ্যে শীতল হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। এই সমস্ত কারণে নসু ভিলেন যেন বন্ধুদের বন্ধুত্ব ছিন্ন করে হাসেম জোয়ারীর কথামতো বন্ধুদের অপমান করে চলছে এবং তাদের কথায় উঠবস করছে। এছাড়াও আমরা লক্ষ্য করে দেখেছি অনেকদিন পর পারুল তার প্রেমিককে কাছে পেয়ে মনের ক্ষোভ চোখের জলের সাথে বিসর্জন দিতে থাকলো। তার মনের মধ্যে আবারো জেগে উঠেছে হারানো প্রেম ভালোবাসা। আর সেখানে পারুলের মায়ের সুন্দর অবদান রয়েছে মেয়ে এবং মেয়ের প্রেমিকের সুন্দর মিল মহব্বত সৃষ্টি করার জন্য। সব মিলে বলতে পারি এখানে অনেক সুন্দর অভিনয় করেছেন হাসেম জোয়ারী, গানের দলের পুরাতন নায়ক। গ্রামীণপুর জয়ের সুন্দর এই অভিনয় যেন গ্রাম বাংলার সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলে। এছাড়াও গ্রামে গঞ্জে এমন গান বাজনা হতো সে বিষয়গুলো তুলে ধরে। সব মিলিয়ে আমার কাছে অনেক অনেক ভালো লাগে আলতা সুন্দরী নাটকের প্রত্যেকটা পর্বের অভিনয়।
আমি মোছাঃ জান্নাতুল ফেরদৌস শশী। বাসা গাংনী মেহেরপুর, বাংলাদেশ। আমি আপনাদের bidyut01 এর পরিবার। আমি একজন গৃহিণী। স্বামী সন্তান সহ আমাদের যৌথ পরিবার। এক পরিবার থেকে "আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে" চারজন সদস্য রয়েছি। এইচএসসি পাশ করার পর বিয়ে হওয়ার মধ্য দিয়ে আমার লেখাপড়া স্থগিত হয়। আমার ভালোলাগা রেসিপি তৈরি, নাটক রিভিউ, ভিডিও ও ফটোগ্রাফি করা সহ ভ্রমণ করতে পছন্দ করি। আমার ইচ্ছে আমি এই কমিউনিটিতে দীর্ঘদিন ব্লগ করব। পাশাপাশি আমার নিকটস্থ প্রিয়জনদের সহায়তা করব এই কমিউনিটিতে সদস্য হয়ে পোস্ট শেয়ার করার।