কেমন আছেন আপনারা? আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার সহায়তায় ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকে ভালোবেসে উপস্থিত হলাম সুন্দর একটি বাংলা নাটক রিভিউ নিয়ে। বৃন্দাবন দাস রচিত জনপ্রিয় এই নাটকের নাম আলতা সুন্দরী। এই নাটকে মোট ৬২ পর্ব। আজকে আমি উপস্থিত হলাম ৩৪ তম পর্ব রিভিউ করে শেয়ার করতে। চলুন তাহলে শুরু করি।
📺স্ক্রিনশট: ইউটিউব📺
নাটক বিবরণী
নাটকের নাম
আলতা সুন্দরী
রচনা
বৃন্দাবন দাস
পরিচালক
সালাহউদ্দিন লাভলু
অভিনয়ে
চঞ্চল চৌধুরী, আ খ ম হাসান, শামীম জামান, রহমত আলী, ম ম মোরশেদ, জয় রাজ, রাশেদা চৌধুরী, মনিরা মিঠু, সাইকা আহমেদ, লারা লোটাস, পুতুল, ডায়না সহ আরো অনেকে।
এই পর্বের শুরুতে আমি লক্ষ্য করে দেখেছি রহিম বাদশা এসে উপস্থিত মাসুমা ও রানীর কথোপকথন এর মাঝে। তার দৃষ্টিতে নায়িকা রানী ভালো নয়। সে সিগারেট খায় প্যান্ট শার্ট পরে নিজের স্বাধীন মত চলে। তার সাথে যদি চলাচল করে মাসুমা অবশ্যই নষ্ট হয়ে যাবে। তাই সে যেন রানীকে এড়িয়ে চলে। কিন্তু মাসুমা তার কথা গুরুত্ব দেয় না বলেই বিষয়টা তার মায়ের কাছে জানাতে চাই। কিন্তু তার মা এখানে দোষের কিছু দেখেনা। তারা সমবয়সী মেয়ে মানুষ। মাঝখানে ভিন্নগ্রাম থেকে এসে তার নাক গলানোর দরকার কি। এমন একটা কথার মাঝখানে রহিম বাদশা জানিয়ে দিল তার মেয়ে এক প্রকার বেঁধে রেখেছে তাকে। যার জন্য সে বাড়ি যেতে পারছে না। কথাটা মাসুম আর মায়ের কাছে বেশ আশ্চর্যজনক মনে হল।
📺স্ক্রিনশট: ইউটিউব📺
এদিকে রাতে একটা মিটিং করা হয়েছিল আলতা সুন্দরী সম্ভবত গানের দলে আর আসবে না এই ভেবে। এই সুযোগ গ্রহণ করার চেষ্টা করছিল হাসেম জোয়ারী। সে শহরে থেকে নতুন নায়ক-নায়িকা এনেছে এবং গুলজার কে কিভাবে গানের দলে যুক্ত করা যায় সেই চিন্তা চালিয়ে যাচ্ছে। আর এই বিষয়কে কেন্দ্র করে হয়ে গেল বড় একটা ঝগড়া। সেখানে গানের দলের ওস্তাদ কে বেশ অপমান করার চেষ্টা শুরু করে দিয়েছিল হাসেম জোয়ারী। তবে ওস্তাদের পক্ষ নিয়ে গানের দলের নায়ক ও কৌতুক অভিনেতা হাশেমের সাথে ঝগড়া করেছে। এতে তাদের বিজয় হয়েছে। তাই হাসেম জোয়ারী নতুন বুদ্ধি পাকানোর চেষ্টা চালাচ্ছে গানের দলের ভিলেনের সাথে। তবে বেশ হাসি আনন্দে রয়েছে গানের দলের নায়ক। এই বিষয়টা গানের দলের নায়িকা সেজে অভিনয় করত নছের ও তার বউকে বলছিল বিষয়টা। এদিকে নছেরের বউ পারুল তাদের আম ছুলে ছুলে খাওয়া ছিল। আর এই সমস্ত বিষয় নিয়ে আনন্দ করছিল।
📺স্ক্রিনশট: ইউটিউব📺
নতুন নায়িকা রানী কে দেখে গানের দলের পুরাতন নায়ক বেশ ভীতু থাকেন। কারণ কোনদিন মেয়ে মানুষের সঙ্গে সেভাবে খোলামেলা আলোচনা গল্প আড্ডা দেওয়া হয়নি তার। সে গানের দলের নায়কের পাঠ করে কিন্তু নায়িকার সাজে একজন পুরুষ মানুষ। সে জায়গায় মেয়ে মানুষের সাথে তার কথা বলার চলার অভ্যাস না থাকায় অনেকটা সংকোচ বোধ করতে থাকে নায়ক। কিন্তু দেখা গেল নতুন নায়িকা তাকে একা পেয়ে বেশ অনেক রোমান্স ভাবে কথা বলতে থাকে। কিন্তু কিছুতেই দলের নায়ক তার সাথে মিল হতে পারল না। ভয় পাচ্ছিল কেউ যদি দেখে ফেলে তাহলে মানুষের কি নাকি ভাববে। তার মধ্যে যেন একদম সাদা মন মানসিকতা ভরপুর। কিন্তু এমন দৃশ্য গানের দলের নতুন নায়ক দেখে ফেলে। পরবর্তীতে গানের দলের নতুন নায়ক পুরাতন নায়কের সাথে খারাপ আচরণ করে। দুজনার মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়ে যায়। কারণ নতুন নায়ক নতুন নায়িকাকে মনে মনে ভালোবাসে। তাই সে মিস রানীর হাত ধরেছে এমনটা ভেবেই তার সাথে খারাপ আচরণ করে ফেলে।
📺স্ক্রিনশট: ইউটিউব📺
রহিম বাদশা আগের মত এখনো আলতা সুন্দরীকে খুঁজে বেড়াচ্ছেন মনে মনে। তাই সে গুলজার এর বাড়িতে এসে উপস্থিত। তার মধ্যে এখনো ভুল ধারণা রয়ে গেছে আলতা সুন্দরী গুলজার এর বোন। কিন্তু আলতা সুন্দরী বলে কোন মেয়ে মানুষ নেই এ বিষয়টা সে কখনোই বুঝতে চায় না।বাড়িতে এসে সে এদিকে সেদিকে খুঁজে বেড়াতে থাকে। এমন বিষয়টা গুলজার দেখে ফেলে। পরবর্তীতে গুলজার তাকে প্রশ্ন করতে থাকে কেন সে তার বাড়িতে এসে এভাবে খোঁজ করে বেড়াচ্ছে। সে বলতে থাকে আপনাদের বাড়িতে তো মানুষ নেই কেন এত সুনসান মনে হচ্ছে। আসলে তার কথাবার্তা গুলো ছিল একটু গোপন করা বিষয় মত। কিন্তু গুলজার তার কথাবার্তা ধরনে বুঝে ফেলে সবকিছু। আর এভাবে একটি পর্যায়ে গুলজার ও রহিম বাদশার কথোপকথন এর মধ্য দিয়ে এই পর্বের সমাপ্তি হয়।
📺স্ক্রিনশট: ইউটিউব📺
আমার মতামত:
আমরা এ পর্বে লক্ষ্য করে দেখেছি রহিম বাদশার এখনো তার আলতা সুন্দরীকে খুঁজে চলেছেন। আলতা সুন্দরী কে খুঁজতে গিয়ে মাসুমাকে সে অনেক বিশ্বাস করে ফেলেছিল কিন্তু নিশ্চিত হতে পারে নাই এই গ্রামের কে সত্য বলে আর কে মিথ্যা বলে। মাসুমাকে কিছুটা বিশ্বাস করলেও মিস রানের সাথে তার চলতে দেখে বারবার বারণ করতে থাকে যেন তার সাথে না মিশে। কারণ মিশ্রানী গানের দলে নাচ গান করে থাকে এ জাতীয় মেয়েরা ভালো হয় না এমনটাই তার ধারণা। এখানে রহিম বাদশার সরলতা এবং সুন্দর মন মানসিকতা আবার কিছুটা ভ্রান্ত ধারণা লক্ষ্য করা যায়। আরেকদিকে আমরা গানের দলের পুরাতন নায়কের সরলতা দেখে মুগ্ধ। নতুন নায়িকা তার সাথে অনেকটা ইজিলি কথাবার্তা বলার চেষ্টা করে কিন্তু তাকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করে চক্ষু লজ্জার ভয়ে। যেটা বর্তমান সমাজে ছেলেরা সমাজের ভয়টা করতে চায় না। আরেকদিকে ভালোলাগার বিষয় ছিল পারুলের ও আলতা সুন্দরীর বিয়ের বিষয়টা। তারা একসাথে বসে কত সুন্দর আম ছুলে খাচ্ছেন। এমন একটা পর্যায়ে চলছিল তাদের মধ্যে যেন তাদের প্রেম নষ্ট হয়ে যাওয়ার পথে এনে দিয়েছিল বিউটি। বিয়ের পর থেকে মোটামুটি তাদের সুসম্পর্ক এবং ভালো দিনকাল চলছে, এটা যেন দর্শকের মনে প্রশান্ত এনে দেয়। তবে সকল অভিনয় দেখে এটা বলতে পারি এই দলের পুরাতন নায়ক অনেক সহজ সরল এবং তার অভিনয় কথাবাত্রা মনোমুগ্ধকর। যেখানে নতুন নায়িকা তার সাথে অনেকটা ফ্রি হওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। বর্তমান সময়ে এমন পুরুষ মানুষের সংখ্যা খুবই কম রয়েছে। তার অভিনয়টা আমাকে মুগ্ধ করেছে। নাটকের এই জায়গায় সার্থকতা অনেক।
আমি মোছাঃ জান্নাতুল ফেরদৌস শশী। বাসা গাংনী মেহেরপুর, বাংলাদেশ। আমি আপনাদের bidyut01 এর পরিবার। আমি একজন গৃহিণী। স্বামী সন্তান সহ আমাদের যৌথ পরিবার। এক পরিবার থেকে "আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে" চারজন সদস্য রয়েছি। এইচএসসি পাশ করার পর বিয়ে হওয়ার মধ্য দিয়ে আমার লেখাপড়া স্থগিত হয়। আমার ভালোলাগা রেসিপি তৈরি, নাটক রিভিউ, ভিডিও ও ফটোগ্রাফি করা সহ ভ্রমণ করতে পছন্দ করি। আমার ইচ্ছে আমি এই কমিউনিটিতে দীর্ঘদিন ব্লগ করব। পাশাপাশি আমার নিকটস্থ প্রিয়জনদের সহায়তা করব এই কমিউনিটিতে সদস্য হয়ে পোস্ট শেয়ার করার।