কেমন আছেন আপনারা? আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার সহায়তায় ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকে ভালোবেসে উপস্থিত হলাম আমাদের প্রিয় খালাতো ডাক্তার ভাইয়ের বিবাহ উপলক্ষে আমার অনুভূতিমূলক পোস্ট। ইতোমধ্যে বেশ কিছু করব আপনাদের মাঝে শেয়ার করেছি। আর সমস্ত পর্বগুলো ছিল কেনাকাটা বিষয়কে কেন্দ্র করে। কেনাকাটার একজন শেষপ্রান্তে চলে এসেছি। আজকে পাত্রী জন্য জুতা কেনার অনুভূতি শেয়ার করব। তাহলে চলুন শুরু করি।
আমার একটা বিষয় খেয়াল করে দেখেছি। ছেলেরা যখন বিয়ে করে তখন টাকা পয়সার উপর কোন মায়া করে না। সে মন থেকে ভালোবাসা উজার করে দেয় প্রিয় মানুষটার জন্য। ঠিক তেমনটাই লক্ষ্য করলাম হামজা ভাইয়ার ক্ষেত্রে। আমরা যে বিষয়টা মনে করছি না হামজা ভাইয়া সে বিষয়টা মনে করে বসছেন। আমি তো ভেবেছিলাম হয়তো কোন কোন জিনিস এড়িয়ে গেলে হামজা ভাইয়ার টাকা বেঁচে যায়। কিন্তু মাঝেমধ্যে উনি বলে বসে আর টাকা তেজপাতা, দিয়ে জীবনে একবার। কারণ সব জিনিস যে বিয়ে উপলক্ষে কিনে দিতে হবে এটা তো বড় কথা নয়। তবুও খেয়াল করে দেখলাম ভাইয়া নিজেই বারবার স্মরণ করছেন কোনটা কেনা হলো কোনটা কেনা হলো না। যখন তার বিয়ের পাগড়ি কেনা হলো সেই মুহূর্তে স্মরণ করলেন এখনো অনেক কিছু কিনতে বাকি রয়েছে। যেগুলো আমাদের স্মরণে ছিল না। যাই হোক উনি যখন তার শেরওয়ানির সাথে ম্যাচিং করে নাগরা জুতা কিনছিলেন তখনই মনে করলেন পাত্রীর জন্য জুতা কিনতে হবে। তখন তিনি দোকানদার ভাইয়ের কাছে বললেন পাত্রীর জন্য কি এমন নাগরাজিতা নিতে হয় নাকি অন্য জুতা নিতে হয়। তখন দোকানদার ভাই এবং পোশাকের দোকানের সেই ছেলেটা বললেন মেয়েদের জন্য আলাদা জুতা রয়েছে কিন্তু মেয়েরা সেগুলো পছন্দ করেনা। আপনি বরঞ্চ এমন জুতা নিন যেটা সব জায়গায় ব্যবহার করতে পারবে। তখন সিদ্ধান্ত হল মেয়ের সাথে কথা বলা হোক।
আমরা ভাই এতক্ষণে তার নাগরা জুতা সিলেক্ট করতে করতে আমাদের বললেন আমরা যেন পাত্রের জন্য জুতা ঠিক করি। পাত্রীর সাথে ফোন ধরিয়ে দিলেন আমার। আমি এদিকে পাত্রীর সাথে কথা বলতে থাকলাম এবং তাকে জুতা দেখাতে থাকলাম। দোকানটাতে ছেলেদের মেয়েদের ছোটদের বড়দের সকল শ্রেণীর জুতা পরিপূর্ণ। তখন দোকানদার ভাইকে বললাম ভালো জুতাগুলা দ্রুত দেখান যেন বারবার পাত্রীকে এটা সেটা দেখাতে না হয় কারণ কেনাকাটা এখনো অনেক বাকি এদিকে বিকেল গড়িয়ে যাচ্ছে। তখন লক্ষ্য করে দেখলাম জুতার দোকানে বিভিন্ন সারিতে বিভিন্ন সাইজের বিভিন্ন রকমের জুতা। তখন আমাদের বলে দিলেন কোন গুলো ভালো মানাবে সেগুলো দেখাতে। আমরা ভিডিও কলে মেয়েকে দেখাতে থাকলাম। আর এভাবেই একটার পর একটা দেখানোর কার্যক্রম চলতে থাকলো। তবে অন্যান্য জিনিস কেনাকাটার মুহূর্তে সুমন ভাইয়াকে যেমন বিরক্ত ফিল করতে দেখলাম না এই বিষয়ে বিরক্ত ফিন করতে দেখলাম।
সুমন ভাইয়া বারবার বলতে থাকলেন পাত্রীর জন্য জিনিস কিনব এটা ঠিক আছে কিন্তু তাকে দেখিয়ে দেখিয়ে বারবার এটা সেটা কেনা এটা একটা বিরক্তিকর ছাড়া কিছুই নয়। আর পাত্রীকে দেখিয়ে যদি এটা সেটা কিনতে হবে তাহলে সে পাত্রীকে একবারে সাথে নিয়ে আসলেই দোষ ছিল কি। পাত্রী তো আর বলে দেয়নি তার পছন্দমত ছাড়া গায়ে দিবে না পায়ে দিবেনা তাহলে কেন এত তাকে সম্মান দেখানো হচ্ছে। তারপরে আমি নিজেই বললাম ভাইয়ার বিয়ে বলে কথা, তার ইচ্ছে পূরণ হোকনা বিরক্তি হওয়ার কি আছে। কারণ এই দিন তো বারবার ফিরে আসবে না আমাদের মাঝে। তখন ভাইয়া সত্যি কথাটা বলল। বিরক্তি অনুভব ছেড়ে তিনি নিজেও দেখা শুরু করলেন। তাই বললেন তাহলে মেয়েকে আর দেখানোর দরকার নেই আমরা চয়েজ করে দিব এতে একটা সারপ্রাইজ হবে। আর মেয়েকে জানিয়ে দেয়ার মধ্যে কোন সারপ্রাইজ হয় না। কথাটা আমার কাছেও গ্রহণযোগ্য মনে হল। আসলে কথাটা ঠিক। কাউকে কোন জিনিস দেওয়ার আগে যদি দেখিয়ে দেওয়া হয় তাহলে সেটাতে আনন্দ কম। আর যদি হঠাৎ করে কোন কিছু দেওয়া হয় তাহলে সেটাতে আনন্দ বেশি থাকে। তাই আমি মনে করলাম পাত্রীকে আগে থেকে না জানিয়ে দেওয়াটাই বেটার। তখন আমরা ভাইয়া বললেন তোমরা তোমাদের মত পছন্দ করো দেখি আমারও পছন্দ হয় কিনা। সবার পছন্দ যদি হয় অবশ্যই তোমাদের হবু ভাবির পছন্দ হবে। অবশেষে ভাইয়া পছন্দ করলো কালো এই নিউ মডেলের জুতা বা স্যান্ডেল। তখন সবাই এটাকে গ্রহণযোগ্য বলে মনে করলো এবং দোকানদার বলল বর্তমান এটা খুব চলছে। সর্বশ্রেণীর মেয়েরা এই জাতীয় গুলো বেশি পছন্দ করছে। তখন সুমন ভাইয়ার কথা মত এবং দোকানদারের কথা শুনে কালো এই জুতাটাই নেয়ার কথা হল এক্সট্রা জুতা হিসেবে। কারণ হামজা ভাইয়া বলেছে নরমালি এখনকার মত নিয়ে রাখো বিয়ের পরে বউকে সাথে নিয়ে ভালো কিছু কিনে দিবে। তাই মাত্র সাড়ে ৪০০ টাকার বিনিময়ে ভাইয়া হাতে থাকা এই জুতাটাই কেনা হলো।
আমার নাম মোছাঃ জান্নাতুল ফেরদৌস শশী। আমার বাসা গাংনী মেহেরপুর, বাংলাদেশ। আমি আপনাদের সুপ্রিয় বিদ্যুৎ জিরো ওয়ান এর পরিবার। আমি একজন গৃহিণী। স্বামী সন্তান সহ আমাদের যৌথ পরিবার। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির চারজন সদস্য রয়েছে আমাদের পরিবারে, তার মধ্যে আমি একজন। এইচএসসি পাশ করার পর নার্সিং কোর্স করে বিয়ে হওয়ার মধ্য দিয়ে আমার লেখাপড়া স্থগিত হয়। আমার ইচ্ছে আমি এই কমিউনিটিতে দীর্ঘদিন ব্লগ করব। পাশাপাশি আমার নিকটস্থ প্রিয়জনদের সহায়তা করব এই কমিউনিটিতে কাজ করার জন্য।