New to Nutbox?

কিছুটা শান্তির মুহূর্ত

1 comment

isha.ish
73
6 hours agoSteemit4 min read

নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি আপনারা সকলে সুস্থ আছেন। আমি সুস্থ থাকলেও স্থির থাকতে পারছি না। বিগত বেশ অনেকদিন হলো প্রচন্ড অস্থির হয়ে রয়েছি। পরীক্ষা ,প্রেসার এই দুটোই আমার মাথা পুরো গিলে খাচ্ছে। শান্তি পাচ্ছিনা। আমি খালি ভাবছি কখন যে একটু শান্তিতে থাকতে পারবো, কিছুক্ষণের জন্য হলেও শান্তি পেলে আমি সত্যিই একদিন ছুটি নিয়ে খালি ঘুমাবো।

IMG-20241221-WA0007.jpg

পরপর দুদিন ধরে আমি একই ধরনের পোস্ট করেছি। এই পোষ্টের আরো একটি অংশ বাকি রয়েছে যেটা ভাবছি অন্যদিন শেয়ার করব। আজ অন্য কিছু নিয়ে আলোচনা করি। প্রথম পরীক্ষার আগে অর্থাৎ ১৫ তারিখে আমার সেট পরীক্ষা ছিল। এদিকে ১৪ তারিখে ছিল আমার এক দাদার বিয়ে। আসলে বিয়েটা ১৫ তারিখেই।

IMG-20241221-WA0014.jpg

কিন্তু ওর বিয়ে যেহেতু অনেকটা দূরে হচ্ছে। সে কারণে গায়ে হলুদ থেকে যাবতীয় বাকি কাজগুলো যেগুলো আমাদের হিন্দু মতে বিয়েতে নিয়মকানুন রয়েছে, সে সমস্ত কিছু ওরা বিয়ের আগের দিন অর্থাৎ ১৪ তারিখে করে নিচ্ছিল।

IMG-20241221-WA0005.jpg

যেহেতু আমার রবিবারে পরীক্ষা , তাই শনিবারে কত মজা করার অবস্থাতে ছিলাম না। যার বিয়ে হচ্ছে সে আমার দাদা হয়। আমার মায়ের বেশ দূর সম্পর্কের এক বোন স্বপ্না মাসি। তার ছেলের বিয়ে ছিল। আমাদের বাড়ি থেকে মোটামুটি ৪০ মিনিট দূরত্বে ওরা থাকে। আমাদের গাড়ি করে যদিও আধ ঘন্টার মধ্যেই ওদের বাড়ি পৌঁছে যাওয়া যায়। জায়গাটা গ্রামাঞ্চল। জায়গার নাম মাধবপুর।

IMG-20241221-WA0006.jpg

বিয়ের আগের দিন থেকেই বারবার করে মাসি আমাদের সবাইকে যাওয়ার জন্য বলেছিল। এমনকি আমাদের বরযাত্রী হওয়ার জন্য বলেছিল। বিয়ে হচ্ছে আমার মামার বাড়ির দিকে। অর্থাৎ উত্তর দিনাজপুর রায়গঞ্জের দিকে। কিন্তু এই পরীক্ষার সময় কোথাও যাওয়া একদম বেকায়দার। আর যেভাবে কনকনে ঠান্ডা। কোন কিছুই করে ওঠা হবে না। তাই আমরা বরযাত্রী যাব না ঠিক করেছিলাম।

IMG-20241221-WA0008.jpg

কিন্তু মাসি যেহেতু বারবার বলেছে। তাই আমি অথবা আমার বাবা না যেতে পারলেও, আমার মাকে হাজিরা দিতে হয়েছে। ১৪ তারিখে অর্থাৎ শনিবারে মা বাড়ীর যাবতীয় সমস্ত কাজ সেরে তৈরি হয়ে নিল। আমি ঠিক করেছিলাম, আমি মাকে গিয়ে দিয়ে আসব।

IMG-20241221-WA0009.jpg

তাহলে মাসি মন খারাপ করবে না, একবার চোখের দেখা দিলেও মাসি স্বস্তি পাবে। যখনই আমি আর মা তৈরি হতে শুরু করলাম, আমাদের সাথে ঈশান জেদ ধরল। ওর যেহেতু অনেক আগেই পরীক্ষা শেষ, ও এখন খালি ঘুরতে যাওয়ার বায়না করছে। কিন্তু পরীক্ষার এক দুদিন পর থেকে ওরও পড়াশোনা শুরু হয়ে গেছে। কারণ এবারের ও সেভেনে উঠলো। যত উঁচু ক্লাস তত চাপ বেশি।

IMG-20241221-WA0010.jpg

কিন্তু ওর জেদকে হারানো সম্ভব নয়, সেই আমাদের সাথে ওকেও টেনে নিয়ে যেতে হলো। তখন দুপুর প্রায় সাড়ে বারোটা থেকে একটা বাজে। বাবা তখন কাজে ব্যস্ত। আমরা সবাই মিলে মাধবপুরের দিকে রওনা দিলাম। বেশ অনেকদিন পর বের হাওয়াতে আমার মন মেজাজ বেশ ভালো লাগছিল। গ্রামের দিকে ক্রমশ এগোতেই চারিদিকে সবুজ দেখতে দেখতে চোখ জুড়িয়ে যাচ্ছিল।

শীতের সময় গ্রামের চারিদিকটা আরো সুন্দর লাগে। মাঠ ভর্তি রোদ, মাঠ ভর্তি সর্ষে, আবার কোথায় কোথাও এখনো কুয়াশা কাটেনি। গাছগুলো যেন অপরূপ সাজে সেজে ওঠে। আমার মতে শীত হোক অথবা গরম গ্রাম সত্যিই অনেক সুন্দর। গ্রামের ঐতিহ্য হলো গ্রামের গাছপালা। আমার এ কারণে গ্রাম এলাকা খুব ভালো লাগে।

IMG-20241221-WA0011.jpg

যে রাস্তা ধরে মাধবপুর যেতে হয়, রাস্তার দুপাশেই শুধু ক্ষেত , জমি। চাষিরা এবং এলাকাবাসীরা যে যার ইচ্ছামত কি সুন্দর চাষ করেছে এক একটা জমিতে। তবে বেশিরভাগ জায়গায় গাঁদা ফুল আর সরষে বেশি দেখা যাচ্ছিল। রাস্তার দুপাশে এত সুন্দর দৃশ্য দেখলে স্বাভাবিক ভালো লাগবে।

IMG-20241221-WA0012.jpg

এরকম সুন্দর দৃশ্য দেখতে দেখতে কখন যে পৌঁছে গেলাম বুঝতে পারিনি। তারপর গিয়ে দেখি মাসিদের বাড়িতে নারায়ণ পূজো দেয়া হচ্ছে। বিয়ের আগে এরকম অনেক বাড়িতেই নারায়ণ পূজো দেওয়ার রীতি রয়েছে। পুজো করতে করতেই পূজোর ওখান থেকে মাসি একবার উঠে এসে আমাদের সাথে কথা বলে গেল। বিয়ে বাড়ি মানেই হইহুল্লোর । সবাইকে আনন্দ করতে দেখে আমারও ভালো লাগলো।

কিন্তু আমার তো বেশিক্ষণ থাকা যাবে না। তাই আমি আবার সবাইকে টাটা বলে, বাড়ির দিকে রওনা হলাম। ঈশান কে ভেবেছিলাম নিয়ে আসবো, কিন্তু ও এতটা পরিমানে জেদ করতে লাগলো ওকে মার কাছে থুয়ে আসতে হলো। মাসির বাড়ির পেছনদিকে সরষের জমিতে দাঁড়িয়ে আমরা অনেক ছবি তুলেছি। সেগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করে নিলাম।

আজ এখানেই শেষ করছি। সকলে ভালো থাকুন।

Comments

Sort byBest