কার্তিক চুরি

isha.ish -

নমস্কার বন্ধুরা, আশা করছি আপনারা সকলে সুস্থ আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চলেছি এক অদ্ভুত ঘটনা ।যদিও আজকে আপনাদের সাথে এই টা শেয়ার করার মতো কোনো রকম ইনটেনশন ছিল না ।কিন্তু ঘটনাটা যখন আজকে শুনলাম, তখন আর নিজেকে আটকে রাখতে পারছি না ।মনে হচ্ছে আপনাদের সাথে তাড়াতাড়ি শেয়ার করে ফেলি। আর আপনারা যেহেতু আমার পরিবার ,তাই সমস্ত কিছুই আপনাদের সাথে আমি শেয়ার করে নিতে খুব পছন্দ করি। এ কারণেই আজকের এই হাস্যকর ঘটনাটা আপনাদের সকলের সাথে ভাগ করে নিচ্ছি।

লিংক

গতকাল কার্তিক পুজো ছিল। যদিও গতকাল বলা ভুল ।আজকেও কার্তিক পুজো অনেক জায়গায় হচ্ছে। তবে মেইনলি সবাই কার্তিক পুজো গতকালকেই বেশিরভাগ করেছে। কার্তিক পুজো নিয়ে অনেক ঘটনা এই বছরে ঘটে গেছে । সেই সমস্ত কথা পরের পোস্টগুলোতে আপনারা অবশ্যই জানতে পাবেন ।কিন্তু তার আগে এই ঘটনাটা শেয়ার করি ।

আমার বাবা এক জায়গায় কার্তিক দিয়েছে অর্থাৎ ব্যাপারটা বুঝিয়ে বলি ,বাবার কারখানা অর্থাৎ আমাদের মূর্তির কারখানা যেখানে, সেই পাড়াতেই বাচ্চাকাচ্চা ছোট করে কার্তিক পুজো করে। এবারে পূজোর আগে বাবার কাছে ওরা কার্তিক ঠাকুর চেয়েছিল। তাই বাবা তাদের আবদার ফেলতে না পেরে, কার্তিক ঠাকুর কিনে দিয়েছে। প্রায় তিন/ সাড়ে তিন ফুটের হবে।

সেই কার্তিক ঠাকুর খুব ধুমধাম করে পুজো করেছে বাচ্চারা। পুজো করার সময় বাচ্চাগুলোর মা-বাবা উপস্থিত ছিল ।তাই পুজোটা বেশ জম্পেশ করেই হয়েছে। এমনকি সেই পূজার প্রসাদ আমরা পেয়েছি। আজকে দুপুরবেলায় হঠাৎ করে বাবা প্রচন্ড জোরে হাসতে শুরু করে এবং হাসতে হাসতেই বাইকটা নিয়ে বাড়ির মধ্যে ঢোকে। এত হাসাহাসির কারণ জিজ্ঞেস করতে বাবা উত্তর দেয় একটা মারাত্মক হাস্যকর ঘটনা ঘটেছে ,কি না, কার্তিক চুরি হয়েছে, আমি আর মা তো শুনে অবাক।

লিংক

অনেক কিছু চুরি হওয়ার কথা শুনেছি, কার্তিক ঠাকুর আবার চুরি হয়, এ তো প্রথম জানলাম। আশা করছি আপনারাও ব্যাপারটা শুনে অনেকটা অবাক হলেন। এইবার ঘটনাটা বলি -

যে ঠাকুরটা বাবা ওদের কিনে দিয়েছিল, সেই ঠাকুরটাই পূজো হওয়ার পরে চুরি হয়ে গেছে। অর্থাৎ সকালে পূজো হয়েছে আর চুরি হয়েছে রাতের বেলা। রাতের বেলা পুজো শেষে সবাই যে যার কাজে ঢুকে গেছে ,যে যার বাড়িতে ঘুমিয়ে পড়েছে ।আর রাত দুপুর বেলায় কার্তিক চুরি হয়ে গেছে। সকালবেলা থেকে কার্তিক আর পাওয়া যায় না। সেই জন্য বাচ্চাকাচ্চা তো খুব দুঃখিত ।সকাল থেকে কার্তিক কোথায় গেলো। কিন্তু কার্তিকের আর কোনো খোঁজ নেই।

এমন অবস্থায় কার্তিক পাওয়া গেল ।কিভাবে পাওয়া গেল। যে ব্রাহ্মণ এই কার্তিক পুজো করেছিল, সেই অবশেষে কার্তিক উদ্ধার করল। ঘটনাটা হয়েছে কি ।যারা কার্তিক চুরি করেছে ,তারাও এই ব্রাহ্মণকেই হায়ার করে নিয়ে গিয়েছিল পুজো করার জন্য।

ব্রাহ্মণ পুজো করতে বসে হঠাৎ থমকে দাঁড়ায় এবং বলে এ তো আমি সকালবেলাতেই পুজো করেছি, আগের দিনের পুজো করা কার্তিক এটা। কোথা থেকে নিয়ে এসেছ এই কার্তিক। আমি পুজো করতে পারব না। পুজো করা ঠাকুর কেউ পূজা করে!

অবশেষে যারা চুরি করেছে তারা বলতে বাধ্য হয় যে, তারা সত্যিই চুরি করেছে। চুরি করা স্বীকার যখন করে ,তখন ঠাকুরমশাই জানায় ,যা করেছ করেছ, ভদ্রভাবে কার্তিকটা ফেরত দিয়ে চলে এসো। বাচ্চাকাচ্চা পুজো করেছে এত শখ করে ,তোমরা কার্তিক চুরি করেছো। তোমরা শিগগিরই গিয়ে আগে কার্তিক ফেরত দিয়ে এসো।

স্বামী স্ত্রী দুইজন যারা কার্তিক চুরি করেছে আসলে, তারা রীতিমতো ভয় পেয়ে যায় ।কারণ এইবার যদি কার্তিক ফেরত দিতে যায়, বাচ্চাকাচ্চা তো চেপে ধরবে ।অবশেষে ঠাকুরমশাই নিজে এসেই পাড়ার ছেলেদের জানায় যে কার্তিক কোথায় রয়েছে, তারপর সেখান থেকে সেই লোকের বাড়িতে গিয়ে কার্তিক উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয়। তারপর তো ওদের মহাআনন্দ। কার্তিক পাওয়া গেছে যেহেতু।

লিংক

এই ঘটনা শুনে যে কেউ হাসবে ।নিজে য কেউ কার্তিক বাড়িতে ঢোকাচ্ছে আর অন্যদিকে কার্তিক কেউ কেউ কারোর বাড়িতে ফেলে দিয়ে আসছে। আমি খালি ভাবি ,পৃথিবীতে কত প্রকারের মানুষ থাকে !যাইহোক এত সুন্দর একটা হাস্যকর ঘটনা আমার মনে হল আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করে নিই ।তাই আজকের পোস্টে লিখে ফেললাম।