আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করা খুবই জরুরি।

hasnahena -

Source

অতিথি পরায়ণতা বাঙালি জাতিকে চেনার একটি বড় মাধ্যম।আমাদের ইতিহাস,ঐতিহ্য কৃষ্টি-কলা ও পারিবারিক শিক্ষার মধ্যে এ ব্যাপারটি গেঁথে রয়েছে।আমাদের অগ্রজের মধ্যে অনেকেই নাকি প্রতিদিন অন্তত একজন মেহমান ছাড়া দুপুরের খাবার খেতেন না। বর্তমানে এই চল একেবারেই নেই।

তবে আমাদের ধর্মে অতিথি আপ্যায়নকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।বাড়িতে আগমনকারী ব্যক্তিকে তিন দিন ধরে শুধু আপ্যায়ন করতে হবে।তিনদিন পরেই তাকে জিজ্ঞাসা করা যাবে যে তিনি কে বা কেন এসেছেন?হতে পারেন তিনি পরিচিত বা অপরিচিত।কি অবাক হচ্ছেন এই কথাটি জেনে!?

Source

পরিচিত বা অপরিচিত যে কোন অতিথিকেই বিশেষভাবে আপ্যায়ন করার প্রচলন এখনো আছে।তবে দিনদিন কেন যেন আত্মীয়তার সম্পর্ক গুলো তার ওজন হারাচ্ছে।আজকাল কেউ পাড়া-প্রতিবেশীর বাড়িতে খুব একটা যায় না।গ্রামেগঞ্জে কিছুটা থাকলেও শহরাঞ্চলে এই চল একেবারেই চলে গেছে।

আমাদের মহানবী (স) প্রতিবেশীর হক সম্পর্কে এত বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন যে তাঁর সাহাবীরাই ভয় পাচ্ছিলেন যে প্রতিবেশী না জানি আমাদের ওয়ারিশ হয়ে যায়।প্রতিবেশীকে অভুক্ত রেখে যদি কোন ব্যক্তি নিজে খাবার খেয়ে রাত্রিযাপন করে তাহলে অত্যন্ত কঠোর ভাষায় তার সমালোচনা হয়।এমনকি তাকে পূর্ণ মুমিনও বলা হয় না।

যে ব্যক্তি আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখবে না তার জন্য জান্নাত হারাম হয়ে যায়।এমনকি জান্নাতের সুঘ্রাণও সে কখনো পাবে না।প্রতিবেশী ও আত্মীয়-স্বজনের এত বড় হক সম্পর্কে জানা সত্ত্বেও অনেকেই আজকাল অতিথি আপ্যায়নে অত্যন্ত কৃপণ।অতিথি আপ্যায়নে যে শারীরিক কষ্ট হয় তা স্বীকার করতে একেবারেই নারাজ।

Pixabay

দুর্মূল্যের বাজারে আত্মীয়তার বন্ধন গুলো ধীরে ধীরে হালকা হয়ে আসছে।যোগাযোগ নিতান্তই মুঠোফোনে হয়।অনেকেই মা-বাবার প্রতি দায়িত্ব পালন করছে না।ভাই-বোন একে অপরের মুখদর্শন করা ছাড়াই আনন্দে দিন পার করছে। আর রক্তের সম্পর্কীয় সমস্ত আত্মীয়-স্বজনের কথা না হয় নাই বা বললাম ।

এর মধ্যেও যদি কারো আত্মীয়তার সম্পর্ক বহাল রাখার আগ্রহ থাকে তাহলে অনেক সময় পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের বাঁধার মুখে পড়াটা অস্বাভাবিক ঘটনা নয়।এর শাস্তিও কি আমরা কম পাচ্ছি?খেয়াল করে দেখুন তো আজকালকার বেশিরভাগ বাচ্চারাই অতি চঞ্চল,অতি অস্থির এবং মা-বাবার অবমূল্যায়নকারী।

কিছু কিছু বাচ্চা তো এমন যে একটু বড় হওয়ার পরে যদি কোনো ভাই-বোন জন্ম নেয় তাকেও সহ্য করতে পারে না।এ ঘটনাটি কিন্তু কোন একক কারণের ফলাফল নয়।অথবা মা বাবার প্রতি প্রতি ভালোবাসা নয় বরং এটি তার স্বার্থপরতা।যার শিকড় একাকী বড় হওয়ার কারণেই প্রোথিত হয়েছে।

যেসব মা-বাবারা আজকে সন্তানদের সামনে নিজেদের মা-বাবা,ভাই-বোনকে অবজ্ঞা,অবহেলা করছেন।আত্মীয়-স্বজনের বিন্দুমাত্র জায়গাও জীবনে রাখেননি।তাদেরকেও তৈরি হতে হবে,তাদের সন্তানরা তাদের প্রতি একই আচরণ করবে এমন দিনের প্রত্যাশায়।

Source

প্রেম-প্রীতি,স্নেহ-বন্ধন ও ভালোবাসা একে অপরকে ছড়িয়ে দেওয়ার মধ্যে যে নিজের সুন্দর ভবিষ্যৎ অন্তর্নিহিত থাকে এটা যখন বুঝতে পারে তখন হয়তো অনেক দেরি হয়ে যায়।আর অতীত কখনো বদলানো যায় না।

◦•●◉✿ধন্যবাদ সবাইকে লেখাটি পড়ার জন্য।✿◉●•◦

◦•●◉✿ Thank You For Reading ✿◉●•◦