স্বপ্ন পূরণের গল্পকথা 🌼!

haideremtiaz -

22-11-2024

৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ


🌼আসসালামুআলাইকুম সবাইকে🌼



From pixabay

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি আপনারা সবাই ভালো ও সুস্থ্য আছেন। তো আজকে চলে এলাম জীবনের স্বপ্ন পূরণের কথা ভাগাভাগি করে নেয়ার জন্য। আসলে মানুষের জীবনে উত্থান পতন থাকবেই। তবে আপনার জীবনে আপনি যদি নিজ জায়গা থেকে হনেস্ট থাকেন আমি বিশ্বাস করি আপনি জীবনে সফল হতে পারবেন। আমার জীবনের শুরুটাও মোটেও ভালো হয়নি। প্রতিনিয়ত হোচঁট খেয়েছি। একটা জিনিস খেয়াল করলে দেখবেন আপনার ব্যর্থতার সময় কাউকে পাশে পাবেন না। এটা চিরন্তন বাস্তব কথা। এই বাস্তব কথাটা যত তাড়াতাড়ি বুঝতে পারবেন তত ভালো। গত দুবছর ধরে জীবনের সাথে স্ট্রাগল করে যাচ্ছি। আসলে এডমিশনে প্রথমবার ব্যর্থ হয়ে একদম ভেঙে পরেছিলাম। উঠে দাড়াবার শক্তি পর্যন্ত পাচ্ছিলাম না। তারপর আবার উঠে দাঁড়ানোর কথা ভাবলাম নিজের পরিবারের দিকে তাকিয়ে। বলে রাখা ভালো তখন স্টিমিটে পুরো দমে কাজ করেছিলাম। কারণ আমি বুঝতে পারছিলাম গাজীপুরে গেলে আমার অনেক টাকার প্রয়োজন! নতুন করে আবার কোচিং এ ভর্তি হতে হবে।

তারপর স্টিমিটে কাজ করে প্রায় পাচঁ হাজার টাকার মতো জমিয়েছিলাম কোচিং ফি দেয়ার জন্য। গাজীপুরে গিয়ে পাচঁ হাজার টাকা দিয়ে হলাম ভর্তি কোচিং এ। তারপর থেকে শুরু হলো পড়াশোনা। পড়াশোনার ফাঁকেফাঁকে স্টিমিটে ব্লগিং করে যাচ্ছিলাম। কারণ আমি জানি প্রতি মাসে অনেক টাকা খরচ হয়ে যাবে আমার এজন্য আগে থেকেই প্রিপারেশন নিয়ে নিয়েছিলাম। কোচিং পুরোদমে চালু হওয়ার পর ব্লগিং করতে শুরুতে অনেকটা কষ্ট হয়ে যাচ্ছিল। কোনোভাবেই পেরে উঠতে পারছিলাম না। প্রায় জুলাই অবধি ব্লগিং কন্টিনিউ করি। তারপর কোচিং এ একের পর এক পরীক্ষা। এদিকে এডমিশনের ছিল আর এক মাস বাকি। মানে হচ্ছে আগস্টের শেষে পরীক্ষা হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। তাই একটা মাস ফুল ফোকাস পড়াশোনায় দেয়ার জন্য ব্লগিং এক মাস অফ রাখার সিদ্ধান্ত নিলাম।

এদিকে দেশে তো হট্রগোল লেগে গেল! কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে অনেক কিছুই হয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশে। ছাত্র সমাজ তখন জেগে উঠেছিল। অনেক ছাত্রই পুলিশে গুলিতে নিহত হয়। দেশ সংস্কার হওয়ার পর অর্থাৎ দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে হতে ২ মাসের বেশি লেগে গিয়েছিল। সারাদেশে যখন কঠিন অবস্থা বিরাজমান তখন বাড়িতে চলে আসি। বাড়িতে এসে কি আর পড়াশোনা হয়। সবকিছু স্বাভাবিক হওয়ার পর আবারো গাজীপুরে চলে আসি। গাজীপুরে আসার পর আবারো পুরো দমে পড়াশোনা শুরু করি। খুব টেনশন হচ্ছিল কারণ এক মাস ব্লগিং অফ রাখার কথা ছিল কিন্তু দেশের অস্বাভাবিক অবস্থার কারণে আর ব্যাক করা হয়নি। তারপর জানতে পারলাম পরীক্ষা হতে হতে নভেম্বর এ হতে পারে! নভেম্বরে হলে আরও হাতে তিন মাস বাকি ছিল। এডমিশনে যারা লং এ থাকে মানে হচ্ছে যারা একবার পরীক্ষা দিয়ে আবার পরীক্ষা দিতে আসে তাদেরকে লং এর ক্যান্ডিডেট বলে।

লং এ যারা থাকে তারাই বেশি সাফার করে টাকার বিষয় টা। কারণ পরিবারের অনেক রেস্ট্রিকশন থাকে। তার উপর একটা অনিশ্চয়তা। আমার মাঝেও ছিল। যদি চান্স না হয় তখন! মুখ দেখাবো কি করে। আত্মীস্বজন সবাই তো বলাবলি শুরু করে দিবে! দুইবারেও চান্স হয়নি। কিছু স্টিম সেভিংস এ রেখে দিয়েছিলাম। আমি জানতাম শেষের মাসগুলোতে আমার কঠিন সমস্যা হবে। সেভিংস এ রাখা স্টিম গুলো দিয়ে ডুয়েট এ আবেদন করি এবং বাসা ভাড়া দেয়। তবে আামার বাংলা ব্লগের সবাইকে বেশ মিস করেছিলাম। যায়হোক, আমি ভেবেছিলাম ডুয়েট এ চান্স পেয়ে তারপর ব্লগিং শুরু করবো। প্রচন্ড রকমের হার্ডওয়ার্ক করতে থাকি। তারপর কাঙ্খিত পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ হলো। ১৭ই নভেম্বর আমাদের EEE (Electrical & Electronics Engineering) পরীক্ষা। এবার পরীক্ষা দিয়েছিল ২১০৬ জনের মতো। চান্স পাবে ১২০ জন!

আমার আত্মবিশ্বাস ছিল এবার আমি চান্স পাবো। পরীক্ষার আগে সব রিভিশন দিলাম। ১৭ই নভেম্বর পরীক্ষা দিলাম। পরীক্ষা দিয়ে আমি হতাশ। কারণ ইজি দুইটা ম্যাথ ভুল হয়েছিল। কিন্তু আল্লাহ তায়ালার অশেষ কৃপায় আজ আমি ডুয়েটিয়ান। এটা ভাবতেই চোখ দিয়ে চলচল করে পানি পরছে। কতশত রাত, কত না ঘুরা বিকেল কেটে গেছে বইয়ের পাতায়! আসলে পরিশ্রম কখনো বিফলে যায় না। স্টিমিটে আমার বাংলা ব্লগের প্রতি আমি চির কৃতজ্ঞ থাকবো সবসময়। আমি মনে করি আমার স্বপ্ন পূরণে আমার বাংলা ব্লগ অনেক ভূমিকা রেখে। দাদার প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা। আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন 🌸

**


10% beneficary for @shyfox ❤️

ধন্যবাদ সবাইকে



আমি কে?

আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। সম্প্রতি আমি ইলেকট্রিক্যাল থেকে ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করেছি। এখন বিএসসি এর জন্য প্রিপারেশন নিচ্ছি। পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত দু বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। যাক,
নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।