27-04-2024
১৪ বৈশাখ , ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি আপনারা সবাই ভালো ও সুস্থ্য আছেন। তো সকলের সুস্বাস্থ্য কামনা করে আজকে চলে এলাম বন্ধুদের সাথে উদযাপন করা ক্রিকেট টুর্নামেন্ট এর শেষ পর্বটি লেখার জন্য। আসলে বন্ধুদের সাথে থাকলে দেখবেন আপনি এমনিতেই হাসছেন। মানসিক শান্তি এমনিতেই চলে আসবে। আর স্কুলের বন্ধুদের মতো বন্ধু কলেজ বলেন ভার্সিটি বলেন কোথাও যেন পাওয়া যায় না। স্কুলের লাইফটাই ছিল আসলে অন্যরকম।
হলরুমে গিয়ে দেখি গান হচ্ছে। আসলে প্রতিবছর হলরুমে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে গিয়ে দেখি আমাদের প্রাইমারী স্কুলের নাসিম স্যার সেখানে উপস্থিত। নাসিম স্যার চন্ডীপাশা স্কুল থেকেই পাশ করেছে। তো বন্ধুরা যেহেতু খেলাধুলা করবে আমরা সেখানে আর বেশিক্ষণ থাকলাম না। এদিকে আবার কয়েকজন বড় ভাই এসে বললো ফ্রি তে চা দেয়া হচ্ছে। সবাই গিয়ে চা খেতে। বাঙালি আসলে ফ্রি জিনিস কখনোই ছাড়তে রাজি না। আমি সালেহীন আর সাদীকে নিয়ে চলে গেলাম চায়ের দোকানের এখানে। সেখান গিয়ে তিনজনের জন্য গরম গরম টি ব্যাগ দিয়ে তিন কাপ চা নিলাম। তো চা খেতে খেতে আড্ডা মাস্তিও হয়ে গেল। তো আমাদের টিমের দ্বিতীয় রাউন্ডের খেলা পরেছিল ২২ ব্যাচের সাথে। আগের ম্যাচ ২১ ব্যাচের সাথে জিতেছিল আমাদের টিম। সে ম্যাচটি জিতে বলতে গেলে অনেকটাই কনফিডেন্স ছিল আমাদের টিমের।
আসলে ক্রিকেট খেলায় দলীয় পারফর্মেন্স খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দলীয় পারফর্মেন্স ভালো হলে খেলাটা জিততেও সহজ হয়। আগের ম্যাচে দলীয় পারফর্মেন্স ভালো ছিল। এজন্য সে ম্যাচটি আমরা জিততে পেরেছিলাম। এবং দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠতে পেরেছিলাম। দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচটা ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ একটি ম্যাচ আর সেটি হারলেই আমরা বাদ পরে যাবো! তো সবাইকেই ভালো খেলতে হবে। ২১ ব্যাচের জুনিয়ররা আগের ম্যাচ দুইটাই জিতেছিল। বলতে গেলে আমাদের থেকেও এগিয়ে ছিল। তবে দেখার বিষয় ছিল আমাদের টিম কেমন পারফর্মেন্স করে। খেলা যেহেতু রাতে হয়েছিল তাই লাইটিং এর ব্যবস্থা আগে থেকেই করে রেখেছিল কমিটির পক্ষ থেকে। আমাদের খেলা শুরু হওয়ার কথা ছিল সাতটায় কিন্তু খেলা শুরু হতে হতে সাড়ে সাতটা বেজে গিয়েছিল।
আমাদের টিম যেহেতু আগের ম্যাচে জিতেছিল। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল দলের প্লেয়ার কোনে পরিবর্তন করবে না। যারা খেলেছিল তারাই থাকবে। আমাদের দলের ক্যাপ্টেন ছিল লিয়ন। লিয়ন আগের ম্যাচে ভালো খেলেছিল। তো মাঠের ভেন্যু ছিল দুই নাম্বার মাঠ! আগের ম্যাচটা আমরা সে মাঠেই জিতেছিলাম। খেলা শুরু হয় সাড়ে সাতটায়। টসে জিতে প্রথমে আমাদের টিম ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেয়। প্রথমে ব্যাটিং করতে নামে লিয়ন ও ফাহিম। লিয়ন শুরুতে একটা ওভার দেখে খেলে। লিয়নের খেলার স্টাইল হলো প্রথমে দেখে খেলবে তারপর হিট করবে বলে। এদিকে ফাহিম মেরে খেলতে থাকে। যেহপতু শর্টপিচ ম্যাচ তাই তাই একটু জোড়ে ব্যাট দিয়ে আঘাত করলে বল ওভার দা বাউন্ডারি হওয়ার চান্স থাকে বেশি। আর ফাহিম সে ভুলটাই করে বসে। বলে জোরে হিট করতে গিয়ে ওভার দা বাউন্ডারি মারতে গিয়ে আউট হয়। তারপর মাঠে নামে রিয়ন! রিয়ন নামার পর রানের চাক সচল হতে থাকে।
রিয়ন লিয়নকে স্ট্রাইক দিয়ে খেলতে থাকে। বন্ধুদের সাথে খেলা দেখার সবচেয়ে বড় মজা হলো বাহির থেকে বেশি চিল্লাচিল্লি করা। আমরা যারা দর্শক সারিতে বসে ছিলাম সবাই মিলে চিল্লাচিল্লি করে প্লেয়ারদের উৎসাহ দেয়ার চেষ্টা করছিলাম। তো লিয়ন তিন ওভারের পরে ভালো খেলতে থাকে। একের পর এক চার মেরে বিপক্ষ দলের বোলারদের নাস্তানাবুদ করে ফেলে! কিন্তু লিয়ন তার ইনিংসটা বড় করতে পারেনি। ছয় ওভারের মাথায় লিয়ন আউট হয়ে যায়। তারপর মাঠে নামে সীমান্ত। সীমান্ত নেমেই সুইপ শর্ট খেলে একের পর বাউন্ডারি মারতে থাকে। আট ওভার শেষে আমাদের টিম ৬৯ রান সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়! ৮ ওভারে রানটা কমই ছিল বলতে গেলে। আর কয়েকটা রান হলে খেলাটা ফাইটিং হতো। তো ২১ ব্যাচের ওপেনার দুজন নেমেই দারুণ খেলতে থাকে। আমাদের বোলাররা যেন কোনো পাত্তায় পাচ্ছিল না।
ওপেনিং জুটিই তাদের ৫০ রান করে ফেলে। তারপর ওয়াসিম বল করতে এসে তাদের পার্টনারশিপ ভাঙায়। কিন্তু ততক্ষণে অনেকটাই দেরি হয়ে যায় আসলে। ৪৮ বলের খেলায় কম ওভারেই ২১ ব্যাচের ব্যাটাররা ভালো একটা স্কোর করে ফেলেছিল। শেষ অবধি আসলে আমরা হেরে যায় এবং টুর্নামেন্ট থেকে বাদ পরে যায়। তবে, খেলায় হারজিত থাকবেই। বন্ধুদের সাথে খেলাটা উপভোগ করেছি এটাই অনেক। বন্ধুদের সাথে সময়টা খুবই ভালো কেটেছিল।
Device | Oppo A12 |
---|---|
Photographer | @haideremtiaz |
Location | Chandhi Pasha Govt. High School, Nandail, Mymensingh |
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। সম্প্রতি আমি ইলেকট্রিক্যাল থেকে ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করেছি। এখন বিএসসি এর জন্য প্রিপারেশন নিচ্ছি। পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত দু বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। যাক,
নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।