আবোল তাবোল জীবনের গল্প [ ফ্রাইডে স্পেশাল ]

hafizullah -

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমি আজকে বেশ চঞ্চল আছি কারন সকাল সকাল আজ ঘুম হতে উঠেছি এবং তারপর প্লান করেছি আজকে সুরমা মাছের পাতুরি খাবো লাউ পাতা দিয়ে, এটা দারুণ স্বাদের এবং আমার পছন্দের একটা খাবার। যদিও এর নামনি নিয়ে আমার মাঝে খটকা আছে, পাতা দিয়ে রেসিপি করা হয় বলে পাতুরি কিন্তু তার সাথে যে মাছ থাকে সেটার কোন নাম নেই কেন? হি হি হি। আমার মাঝে এমন অনেক বিষয়ে খটকা লাগে, বিশেষ করে যে কোন জায়গা কিংবা রেসিপির নামগুলোর ব্যাপারে।

খটকা লাগার বিষয়টি অবশ্য নতুন প্রজন্মদের আকর্ষণ করে না। আমাদের সময় এটা খুবই ব্যাপক ছিলো নতুন কিছু দেখলে কিংবা নতুন কোন কিছুর নাম শুনলে সেটা নিয়ে ভাবনায় ঢুবে যেতাম। কেন নামটা এমন হলো? এর পেছনে রহস্যটা কি? ইত্যাদি নানা ধরনের প্রশ্ন ঘুরতে থাকতো। এমনকি অনেক সময় দেখা যেতো স্কুলের শিক্ষকদের প্রশ্ন করে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলে দিতাম। এটা অবশ্যই একটা ভালো দিক এবং এর মাধ্যমে অনেক তথ্য যেমন জানা যায় ঠিক তেমনি অতীত ইতিহাস সম্পর্কেও সুন্দর একটা ধারণা পাওয়া যায়। আগ্রহ থেকেই কিন্তু শেখা হয়। এই জন্য কৌতুহল বিষয়টিকে আমি সর্বদা বেশী গুরুত্ব দেই।

যাইহোক, কয়েক দিন আগেই বড় সাইজের একটা সুরমা মাছ নিয়ে এসেছিলাম। অবশ্য আপনাদের কাছে ছুট হতে পারে কিন্তু আমার কাছে এটাই বড় সাইজ। প্রায় দুই কেজি ওজনের সুরমা মাছ। তিনশত টাকা কেজি। এটা আমি কিনে এনেই বাড়িতে বলেছিলাম সুরমা মাছের পাতুরি খাবো। যেহেতু বাড়িতেই লাউ গাছের বাগান আছে এবং বেশ পরিমানে ফুলও এসেছে। পাতাগুলো এখন বেশ সুন্দর ও বড় বড় সাইজের হয়েছে, তাই লাউ পাতা দিয়ে সুরমা মাছের পাতুরি খাবো। বড় সাইজের মাছটা ফ্রিজ হতে বের করা হয়েছে এবং একটু পরই বড় বড় সাইজের লাউ পাতা সংগ্রহ করা হবে। তারপর শুরু হবে স্বাদের রেসিপি তৈরীর প্রচেষ্টা।

যে কথা বলতেছিলাম, আমাদের যেমন আগ্রহ ছিলো ঠিক তেমনি আমাদের মাঝ কৌতুহলও ছিলো। মাঝে মাঝে বড়রাও আমাদের উপর বিরক্ত প্রকাশ করতো এবং বলেই ফেলতো এতো প্রশ্ন করে না। সত্যি বলতে আমাদের সময় এতো বেশী ডিভাইস কিংবা সময় নষ্ট করার উপকরণ ছিলো না বরং ভালো কিছু করার কিংবা শেখার যথেষ্ট সময় ছিলো। তাই আমরা অলস বসে না থেকে সময়গুলোকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করতাম এবং সেই সুযোগে অনেক কিছু শিখে নেয়ার চেষ্টাও করতাম। সকাল বিকেল দুই টাইম মাঠে খেলতে যেতাম, হৈ চৈ করতাম এবং তারপরও বাড়িতে এসে অনেক সময় পেতাম। বর্তমান প্রজন্ম যেমন নানা ডিভাইসে ঢুবে থাকে, তেমন তাদের হাতে কোন সময়ই থাকে না।

আনন্দের মাধ্যমে শিক্ষা, এই বিষয়টিকে এখন সবাই গুরুত্ব দিচ্ছে কিন্তু তাতে কি? যারা শিখবে তারাই গুরুত্ব দিচ্ছে না শুধু। কারন স্কুল কিংবা ক্লাস শেষ হওয়ার পর তাদের টার্গেট একটাই বাড়িতে দ্রুত ফিরে আসা এবং তারপর স্মার্টফোন নিয়ে বসে পড়া, টিকটকসহ নানা সোশ্যাল মিডিয়ায় ডুবে থাকা। বর্তমান প্রজন্মের শিশুদের একটাই কাজ যতটা সময় বাড়িতে থাকবে ততটা সময়ই স্মার্ট ডিভাইস নিয়ে ডুবে থাকবে। অন্য কিছু করার কিংবা চিন্তা করার সময় কই তাদের? আমি তাদের চিন্তা করছি না বরং তাদের পরের প্রজন্ম কি করবে সেটা নিয়ে বেশী চিন্তা করছি? এখনই খেলাধুলা করার মাছ নেই, সামনে তো আরো থাকবে না, তখন কি হবে?

Image Taken from Pixabay

ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah



আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।



|| আমার বাংলা ব্লগ-শুরু করো বাংলা দিয়ে ||