কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমি ভালো আছি এবং সুস্থ আছি। তবে বরাবরের মতো মানসিকভাবে বেশ চাপে আছি। আসলে বাস্তবতা ছাপিয়ে যখন আমাদের প্রত্যাশার মাত্রা বেশী হয়ে যায়, তখন নির্ধারিতভাবে এমন চাপে পড়াটাই স্বাভাবিক। হ্যা, ঠিকই ধরেছেন চলতি বছরে আমার প্রত্যাশার পরিমানটা বেশ বেশী হয়ে গিয়েছিলো যার কারনে বছরের শেষে এসে বেশ চাপে পড়ে গিয়েছি, হিসেবের অনেক কিছুই এখন মিলাতে পারছি না। মাঝে মাঝে এমন হয় না, সাজানো গোছানে অনেক জিনিষই শেষ পর্যন্ত অগোছালো থেকে যায়।
এটা একটা বাস্তব সত্য, আমার জন্য কারন অনেক বিষয়ে আমি অন্যদের পরামর্শ দেই কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিজেই সেটা মানতে পারি না। একটু চিন্তা করে দেখুন তো আপনার জীবনে এমন কিছু আছে কিনা। কোন সমস্যায় অন্যদের যে বিষয়ে আপনি পরামর্শ দিচ্ছেন, ঠিক সেই বিষয়ে আপনার নিজেরও অনেক ঘাটতি আছে, অনিচ্ছা সত্বেও আপনি বার বার সেটা করেই চলছেন। আমার আছে, অসংখ্য বিষয় আছে এমন, কেন জানি আমি পারি না। খুব বেশী আপসেট হয়ে যাই একটা সময় পার করার পর। ঐ যে প্রত্যাশার মাত্রাটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারি না, যার ফলাফলটা এমন হতে বাধ্য হয়।
যাইহোক, বাস্তবতার শিকলে আমরা সবাই বন্দী কমবেশী। কারো কষ্ট বা সমস্যা একটু বেশী আবার কারো কষ্ট বা সমস্যা একটু কম, তবে যার যার অবস্থান হতে তারটাই সেরা। আজকে অবশ্য এই বিষয়ে আর কিছু বলতে চাই না, কারন ভেতরের ক্ষতটা নিয়ে খুব বেশী কথা বলাও ঠিক না। পরে দেখা যাবে আপনারাও সুযোগ নিয়ে সেই বিষয়ে আমাকে খোঁটা দেয়া শুরু করে দিয়েছেন, হি হি হি। অবশ্য এটা হওয়াটাই স্বাভাবিক, ছোটবেলায় আমরা এটা খুব বেশী পরিমানে করতাম। স্কুলের শিক্ষকরা কোন কারনে কোন ছাত্রকে যদি কোন বিশেষণে বিশেষায়িত করতো তাহলে আমরা কিন্তু সেটা নিয়মিত ব্যবহার করার সুযোগ নিতাম।
ছোটবেলার বিষয়গুলো সত্যি অনেক বেশী মজার ছিলো, বিশেষ করে শীতকালের ঘটনাগুলো আমাদের বেশী আনন্দ দিতো। নতুন আলু উঠতো, তাই ছোট ছোট আলু নিয়ে আমরা বেশ মজা করে খেতাম। আমাদের সময় তখনও মানুষের বাড়িতে মাটির চুলা ছিলো এবং অনেকেই তখনো গাছের লাড়কি ব্যবহার করতো। তো রান্না শেষে চুলায় গরম কয়লা থাকতো আর আমরা সেই সুযোগটাই সুন্দরভাবে ব্যবহার করতাম। ছোট ছোট আলু নিয়ে কয়লার মাঝে দিয়ে দিতাম এবং আধঘন্টা পর এসে সেগুলোকে উদ্ধার করতাম বেশ আনন্দ নিয়ে। তারপর হতো আসল স্বাদের খেলা।
কি দারুণ ছিলো সেই দিনগুলো, পোড়া আলু খেতে সত্যি দারুণ লাগতো। কয়লার তাপে তাপে আলুগুলো যেমন সিদ্ধ হতো ঠিক তেমনি উপরের পাশটাও পুড়ে কালো হয়ে যেতো। অনেক সময় আমরা সেগুলো ভাগাভাগি নিয়েও মারামারি শুরু করে দিতাম। তখন বাড়িওয়ালা মানেই সেই চুলাওয়ালা রেগে গিয়ে বলতেন তোরা আর এই বাড়িতে আসবি না এমন মারামারি করলে। আমরা আবার ভদ্র ছেলের মতো সেখান হতে চলে আসতাম। তারপর আবার বাহিরে এসে কাড়াকাড়ি শুরু করে দিতাম। স্বাদের সাথে দারুণ আনন্দ হতো। বর্তমান প্রজন্ম সেই আনন্দ যেমন পাচ্ছে না ঠিক তেমনি সেই স্বাদও পাচ্ছে না।
আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।