New to Nutbox?

আবোল তাবোল জীবনের গল্প [ কৃতজ্ঞতাবোধ ]

11 comments

hafizullah
82
18 days agoSteemit7 min read

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো এবং সুস্থ্য আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আজ অসুস্থতার তৃতীয় দিন চলছে, উপলব্ধি করছি সুস্থতা কত বড় নেয়ামত ছিলো। কারন আমরা দাঁত থাকতে দাঁতের মর্ম বুঝি না, ভালোবাসা কাছে থাকতে তার গুরুত্ব বুঝি না, যখন দাঁত পড়ে যায়, যখন ভালোবাসা হারিয়ে যায় তখন বুঝতে পারি কি হারিয়েছি! এটাই বাস্তবতা! যাইহোক, ভালো থাকার চেষ্টা করছি আপাদত সব কিছু হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে, পুরো দিনই বাড়িতে বিশ্রাম নেয়ার চেষ্টা করছি। এমনকি মোবাইল হতেও দূরে আছি। মোটকথা পুরো ভার্চুয়াল জীবন হতে বিচ্ছন্ন বলতে পারেন। তবে টুকটাক একটু চেক কিংবা আপডেট দেয়ার চেষ্টা করছি, বেঁচে আছি এটা বুঝানোর জন্য মাত্র।

আজকে আবোল তাবোল জীবনের গল্প নিয়ে কিছু কথা বলবো, দেখুন আমরা যখন অসুস্থ থাকি তখন পুরনো স্মৃতিগুলোকে বার বার স্মরণ করি, পিছনে ফেলে আসা মুহুর্তগুলোকে বার বার মনে করার চেষ্টা করি। এটা অবশ্য একটা ভালো দিক, কারন যদি নিজের ভুলগুলোর কথা স্মরণ করেন এবং ভালো কাজগুলোর মুহুর্তগুলো সামনে আনতে পারেন, তাহলে ভুলের জন্য যেমন অনুতপ্ততা তৈরী হবে ঠিক তেমনি ভালো কাজগুলোর জন্য ভালো অনুভূতি তৈরী হবে। আমি সেই ছোট বেলা হতেই এই কাজটা করে আসছি এবং এখনো করার চেষ্টা করছি। কারন খারাপ কাজগুলোর জন্য অনুতপ্ত হওয়া মানে সেই কাজগুলো পুনরায় না করার কার্যকর অনুভূতি তৈরী হওয়া এবং ভালো কাজগুলোর অনুভূতি হতে আরো ভালো কিছু করার অনুপ্রেরণা তৈরী করার দারুণ একটা উপায় হতে পারে এটা।

আমি ভাগ্যকে দারুণভাবে বিশ্বাস করি, কারন আমি জীবনের চরম সুখের মুহুর্ত যেমন উপভোগ করেছি, ঠিক তেমনি নির্মম জীবনের চরম কষ্টও দারুণভাবে খুব কাছ হতে দেখেছি, এমন সময় গিয়েছে আমার যখন লাঞ্চ করার টাকাও ছিলো না আমার পকেটে। বাস্তবতার এপিঠ ওপিঠ দুটোই আমি নিদারুণভাবে দেখেছি। হয়তো এই জন্য ভাগ্যকে দারুণভাবে বিশ্বাস করার সুযোগ তৈরী হয়েছে আমার জীবনে। তবে হ্যা, আমি শত সুযোগ পাওয়া সত্বেও নিজেকে সর্বদা লোভী মানসিকতা হতে দূরে রাখার চেষ্টা করেছি, এখনো করছি। যদিও মানুষ হিসেবে ভুল করাটা আমাদের আদি অভ্যাস, তাই হয়তো কারো প্রভাবে কিংবা পারিপার্শ্বিক অবস্থায় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে ভুল করে ফেলেছি এবং লোভকে সামনে নিয়ে এসেছি।

ball-1845546_1280.jpg

এমন একটা ভুল আমি আমার বাংলা ব্লগে করেছি, অনাকাংখিতভাবে বেশ কিছু স্টিম পাওয়ার ডাউন করেছিলাম। আসলে কিছু ভুল আমরা এমনভাবে করে ফেলি যে, সেটা পরবর্তীতে স্বীকার করতেও আমাদের কষ্ট হয়, মেনে নেয়াটা খুব কষ্টকর হয়ে যায়। কারন নীতিবান মানুষ যখন নীতিহীনভাবে কিছু করে ফেলে অনাকাংখিতভাবে তখন কখনোই সেটাকে মেনে নিতে পারে না, এটাই বাস্তবতা। তেমনই একটা বিষয় আমার সাথে ঘটেছে। যাইহোক, কমিউনিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমি সেটাকে মেনে নিয়েছি। ইতিপূর্বে ৬টি পাওয়ার আপ পোষ্টের মাধ্যমে ৮০০০ স্টিম পাওয়ার আপ করেছি, আর আজকে পুনরায় ২৫০০ স্টিম পাওয়ার আপ করার মাধ্যমে ১০৫০০ স্টিম পাওয়ার আপ টার্গেট পূরণ করেছি। হ্যা, হয়তো নিজের অবস্থান হতে সিদ্ধান্ত মোতাবেক পাওয়ার আপ সম্পূর্ণ করেছি কিন্তু লোভী মানসিকতার যে উপাধি পেয়েছি সেটা হয়তো মুছতে পারবো না। সেই ছোট বেলা হতে যেই বিষয়টিকে আমি সবচেয়ে বেশী ভয় পেয়েছিলাম, শেষ পর্যন্ত সেই বিষয়টিই উজ্জ্বল হয়ে হৃদয়ে আঘাত করেছে, হয়তো এই আঘাতটা আমি কোনদিনও ভুলতে পারবো না, এটা আমার পক্ষে খুবই অসম্ভব একটা কিছু।

দেখুন, নীতিবান মানুষদের সবাই ভালোবাসে, উৎসাহ দেয়। কিন্তু সেটা কতক্ষন জানেন? আমি জানি, কারন আমার জীবনে আমি বহুবার বহুভাবে এর প্রমান পেয়েছি কিন্তু তবুও আমি আমার নীতি হতে ‍বিচ্যুত হইনি। এটাই হয়তো আমার বিশ্বাস এবং সম্পদ। যাইহোক, বাস্তবতা হলো খালি পকেটে আপনার বিশ্বাস যতটা শক্তিশালী থাকে ভরা পকেটে তার অর্ধেকও থাকে না, এটাই নির্মম সত্য। আমি হয়তো সেখান হতে অনাকাংখিতভাবে সরে গিয়েছিলাম, তাই সেখান হতে পুনরায় ফিরে আসার চেষ্টা করেছি। এক্সচেঞ্জে রাখা এসেটস প্রায় সবটাই সেল দিয়ে দিয়েছি, এখনো কিছুটা আছে যেমন ওরডি, জিটু, হয়তো এগুলোও খুব দ্রুত সেল করে দিবো। খুব দ্রুত শূন্যতে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা রয়েছে আমার ডিজিটাল এসেটস এর। শূন্য পকেটে বিশ্বাসটাকে আবার আগের জায়গায় নিয়ে আসার চেষ্টা করবো। হয়তো ভুলগুলোর ক্ষত হৃদয় হতে মুছে ফেলতে পারবো না কিন্তু তবুও চেষ্টা করতে দোষের কি?

আমার জীবনে আমি বেশ কিছু মানুষের কাছে অনেক বেশী ঋণী, জীবনের সব সময় আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ থাকবো। কারন তাদের সান্নিধ্য এবং ভালোবাসা আমার বিশ্বাসকে যেমন মজবুত করেছে ঠিক তেমনি আমার নীতিবোধকে আরো শক্তিশালী করেছে। সবচেয়ে বেশী কৃতজ্ঞ আমার বড় ভাইয়ের কাছে, বুঝ হওয়ার পর আমার কোন চাহিদা সে অপূর্ণ রাখে নাই। এরপর পর আমার এক বন্ধু ছিলো জসিম নামের, জীবনের প্রথম চাকুরীর সময় তার একটা শার্ট এবং প্যান্ট পুরো এক মাসের জন্য ধার নিয়েছিলাম আমি, কারণ তখন আমার ভালো শার্ট-প্যান্ট ছিলো না । আমার দ্বিতীয় চাকুরী ছিলো ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোতে, সেখানকার ম্যানেজার ছিলেন সৈয়দ আব্বাস উদ্দিন। উনার সকল কাজে আমাকে সাথে রাখতেন এবং বাস্তব জীবনের অনেক কিছু খুব যত্ন নিয়ে আমাকে শিখিয়েছেন। তৃতীয় চাকুরী ছিলো মেরিকো বাংলাদেশ এ, সেখানকার পরিবেশক সালাউদ্দিন সাহেব। তার দারুণ ভালোবাসা আমাকে দারুণভাবে উজ্জীবিত করেছিলো চাকুরী জীবনে। চতুর্থ চাকুরী বর্তমান যেখানে আছি বিগত প্রায় ১৮বছর যাবত, আহসান জামীর স্যার। আমার ক্যারিয়ারে সবচেয়ে বেশী অবদান যার, প্রতিটি বিষয় নিখুঁতভাবে ধরে ধরে আমাকে শিখিয়েছেন। এবং সর্বশেষ চাকুরী (আমি এটাকে চাকুরী হিসেবে মনে করি শুরু হতেই) আমার বাংলা ব্লগ, যার প্রতিষ্ঠাতা আরএমই দাদা কি বুঝে আমাকে সুযোগ দিয়েছেন? সেটা এখনো আমার কাছে কঠিন রহস্য, অভিজ্ঞতার দারুণ সকল বিষয় এবং সুন্দর ব্যবহারের সেরা দিকগুলো তার নিকট হতেই শেখা। যদিও তার কিছুই আমি জীবনে প্রয়োগ করতে পারি নাই অনাকাংখিতভাবে।

man-5619304_1280.jpg

তবে এই সবগুলো চাকুরীর ক্ষেত্রে একটা দারুণ বিয়ষ ঘটেছে আমার জীবনে, কোন চাকুরীর ক্ষেত্রেই আমাকে কেন জানি ইন্টারভিউ দিতে হয় নাই। প্রথম সাক্ষাতেই তারা একটা বিষয়ে শুধু আমাকে প্রশ্ন করেছিলেন আর সেটা ছিলো আমি চাকুরী করবো কিনা? আমি জানি না, কি বুঝে কিংবা কি দেখে তারা আমাকে সুযোগ দিয়েছিলেন? কিন্তু বিশ্বাস করেন চাকুরী ছাড়ার (যেগুলো ছেড়েছি ইতিমধ্যে) আগ পর্যন্ত তাদের বিশ্বাসের অমযার্দা করি নাই, নিজের যোগ্যতার পুরোটাই দিয়ে কাজ করার চেষ্টা করেছি এবং এখনো করছি (যেখানে এখনো আছি)। হয়তো এই কারনে আমার ভাগ্যের প্রতি বিশ্বাস এবং নীতিবোধটা আরো বেশী মজবুত হয়েছে। যাইহোক, কিছু মানুষের ভালোবাসা এবং কৃতজ্ঞতার কোন প্রতিদান হয় না, সেগুলোর প্রতিদানে হয়তো কিছু দেয়াও সম্ভব না। কিন্তু ভালোবাসার রং মাখিয়ে তাদের নামগুলো হৃদয়ের মাঝে থাকবে পুরো জীবন।

আর একটা কথা, কিছু মানুষের ভালোবাসা যেমন আমার বিশ্বাসকে পূর্ণতা দিয়েছে, ঠিক তেমনি আমিও আমার অবস্থান হতে চেষ্টা করেছি অনেক মানুষের সমস্যা সমাধানে ভূমিকা রাখার, নিঃস্বার্থভাবে তাদের উপকার করার। বিনিময়ে কোন দিনও তাদের নিকট হতে কিছু প্রত্যাশা করি নাই এবং এখনো করি না। কারন কিছু মানুষ যেমন নিঃস্বার্থভাবে আমাকে সুযোগ দিয়েছে এবং কাছে টেনে নিয়েছে, আমিও দায়িত্ববোধ হতে চেষ্টা করেছি অন্যদের ভালোবাসা দিয়ে নানা সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করার। হয়তো ভবিষ্যতেও চেষ্টা করে যাবো। তবে কত দিন নিজের অবস্থান ধরে রাখতো পারবো সেটার কোন নিশ্চয়তা নেই। তাই আমার বাংলা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা, এ্যাডমিন, মডারেটর কিংবা সদস্যবৃন্দ, আমার ব্যবহার কিংবা আচরণে কেউ কোন প্রকার আঘাত পেলে কিংবা মনে কষ্ট পেলে, তাদের নিকট আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত এবং ক্ষমাপ্রার্থী।

Image taken from Pixabay 1 and 2

ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah

break .png
Leader Banner-Final.pngbreak .png

আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।

break .png

Banner.png

Comments

Sort byBest