আজকে আমার প্রিয় একটি রেসিপি আপনাদের সাথে ভাগ করে নেব, আসলে শুরুতে মোটেও আমার প্রিয় ছিলো না এটি। তবে ঢাকায় বসবাস শুরু করার পর, এই রেসিপিটির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষীত হয় এবং পরবর্তীতে রেসিপিটির প্রতি বেশ আগ্রহবোধ জন্মায়। তারপর হতে ধারাবাহিকভাবে নানা পরিবর্তন করে, নিজের মতো মানে নিজের স্বাদের মতো করে রান্না হতে থাকে।
আসলে একটা কথা আমি সব সময়ই বলে থাকি, রান্নায় দুনিয়ায় কোন রেসিপির ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোন নীতি নেই বা সেটা অনুসরণ করার ক্ষেত্রে কোন বাধ্যবাধকতা নেই। কারন যে বিষয়টিকে আমি বেশী প্রাধান্য দেই, অন্যরা সেটাকে এড়িয়ে যেতেই পারে এবং অন্য একটির প্রতি বেশী আকর্ষণবোধ করতে পারেন। তাই আপনার কিংবা আমার স্বাদের কথা বিবেচনা করে যে কোন উপকরণ এর উপস্থিতি বাড়াতে কিংবা হ্রাস করতে পারি। আর আমি ঠিক এই কাজটাই করি সব সময়, তবে অবশ্য আগে বউ এর সুপরামর্শ নিতে ভুল করি না, হে হে হে বুঝতেই পারছেন ভুল হতে পরে পরিস্থিতি পাল্টে যেতে পারে। আরে ভাই একটু চালাক না হলে কি সংসারে, বউ এর রাজত্বে টেকা যায়? একদমই যায় না, এটা আবার ভুলেও কেউ বলে দিয়েন না কিন্তু।
এটা হলো করলার রেসিপি, বুঝতেই পারছেন করলার নাম শুনলেই অনেকেই দৌড় দেয়া শুরু করে দেয়। আমার ছেলেও তো সেদিন ভুলেও তরকারির কথা জিজ্ঞাসা করবে না, যেদিন বাড়ীতে করলা রান্না রান্না করা হয়। পাঙ্গাস মাছ তুলনামূলকভাবে একটু বেশী তৈলাক্ত, মানে বেশ ভালো তেল থাকে মাছটিতে। এই জন্য পাঙ্গাস মাছের যে কোন ভুনা তরকারী একটু বেশী স্বাদের হয়। তো পাঙ্গাস মাছের টুকরা অথবা মাথা-লেজ দিয়ে করলা ভুনা করা হলে সেই স্বাদ পাওয়া যায়। একবার বাড়ীতে ট্রাই করে দেখতে পারেন রেসিপিটি। চলুন আজ আবার দেখি রেসিপিটি-
প্রয়োজনীয় উপকরণঃ
পাঙ্গাস মাছের লেজ-মাথা
করলা
পেয়াঁজ
কাঁচা মরিচ
আদা-রসুন পেষ্ট
হলুদ গুড়া
মচির গুড়া
ধনিয়া গুড়া
জিরা গুড়া
লবন
তেল।
প্রস্তুত প্রণালীঃ
প্রথমে করলাগুলোকে সাইজ মতো স্লাইস করে নিয়েছি। তবে কিছুটা পাতলা করে স্লাইস করতে হবে, না হলে তেতো একটু বেশী লাগবে কিন্তু।
একটি কড়াই চুলায় বসিয়ে কিছু তেল দিয়ে গরম করবো, তারপর পেয়াঁজ কুচি ও কাঁচা মরিচ দিয়ে দিবো।
এরপর আদা-রসুন পেষ্ট, হলুদ, মচির, জিরা ও ধনিয়ার গুড়া দিয়ে কিছু সময় কষা করবো।
কষা হয়ে গেলে পাঙ্গাস মাছের মাথা ও লেজ দিয়ে মসলাগুলোর সাথে মাখিয়ে নিবো কিছুটা সময়।
এরপর করলা স্লাইসগুলো ঢেলে দিবো এবং পুরনায় কিছু সময় সমলাগুলোর সাথে মাখিয়ে নেবো।
এখন কিছুটা পানি দিয়ে রান্না করবো, পানিগুলো কমে এবং ঘন হয়ে আসলে চেক করতে হবে মাছ এবং করলাগুলো সিদ্ধ হয়েছে কিনা ঠিক ঠাক মতো। এই ক্ষেত্রে একটু ঘুটা দিয়ে মাছের মাথা এবং লেজ ভেঙ্গে দিতে হবে। তাহলে স্বাদের মাত্রাটা বৃদ্ধি পাবে।
দেখুন, এইবার কেমন লাগছে দেখতে, না খেতে হবে না সেটাতো আমিই খেয়ে আপনাদের জানাবো, স্বাদটা কতটা দারুণ হয়েছে, হে হে হে। হয়তো কিছুটা আন্দাজ করতে পারছেন, স্বাদটা সেই হয়েছে।
আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।