.
‘একদিন তো মরেই যাব।’
এ কথাগুলো আমাদের নিত্যদিনের খুব পরিচিত কথা। আশপাশে অনেকের মুখেই এমন কথা হরহামেশাই শোনা যায়। কেউ বলে হাসি-তামাশার ছলে, আর কেউ বলে ডিপ্রেশন থেকে। আমাদের জীবনে কীসের অভাব? কেউ বলবে আমি এটা করতে চেয়েছিলাম পারিনি। কেউ বলবে অমুক পোস্ট চেয়েছিলাম পাইনি। কারও সবই আছে। না টাকার অভাব, না থাকার জায়গার, না খাবারের। তবুও দিন শেষে মুখে ‘কিচ্ছু ভাল্লাগে না' কথাটা লেগেই থাকে।
Camera |
Iphone 12 Mini |
Lens |
Wide 26 mm-Equivalent |
Photographer |
@fxsajol |
Location |
Mirpur 12 , Dhaka, Bangladesh |
Processing photos |
Outdoor |
আজ একটা গল্প বলি। গল্পটা ছোট্ট একটা মেয়ের। বয়স ১০। দুর্দান্ত মেধাবী মেয়েটা। টিচার যাকে মাঝে মাঝেই বলত, ‘তোমার তো প্রাইমারিতে না থেকে হাইস্কুলে থাকার কথা ছিল।' এই ছোট্ট বয়সেই মেয়েটা সঠিক তাজওয়িদসহ পুরো কুরআন হিফজ করে ফেলেছিল। মেয়েটার নাম বার’আহ। তার মতো তার পরিবারও ছিল ছোট্ট, আর দ্বীনের শিক্ষায় আলোকিত। তার বাবা-মা দুজনই ছিল ডাক্তার, যারা জীবিকার খোঁজে সৌদি আরব এসেছিলেন।
হাসি আর আনন্দে কেটে যাচ্ছিল বার’আহ-এর দিনগুলো। হঠাৎ একদিন মেয়েটার মায়ের প্রচণ্ড পেটে ব্যথা শুরু হলো। বিভিন্ন টেস্ট আর চেকআপের পর ধরা পড়ল তার মায়ের ক্যান্সার হয়েছে। ততদিনে তা লাস্ট স্টেজে পৌঁছে গিয়েছে।
ছোট্ট বার’আহকে জানানো উচিৎ। তা না হলে হয়তো হঠাৎ একদিন বার’আহ ঘুম থেকে উঠে দেখবে তার মা নেই। তাই মা বলল, ‘বার’আহ, আমি ওই আকাশের উপরের জান্নাতে চলে যাব; কিন্তু আমি চাই তুমি প্রতিদিন যে কুরআন হিফজ করছ তা পড়তে থাকো। কেননা, এ জীবনে কুরআন ছাড়া আর কিছুই আমাদের রক্ষা করতে পারবে না।' ছোট্ট বার’আহ মায়ের কথা কিছুই বুঝল না। কিন্তু ধীরে ধীরে যে মায়ের শরীর ভেঙে পড়ছে তা খুব ভালোভাবেই অনুভব করতে পারছিল। এই অনুভূতি প্রবল হলো যখন দেখল তার মাকে স্থায়ীভাবেই হাসপাতালে ভর্তি করে রাখা হয়েছে।
ছোট্ট এই মেয়ে প্রতিদিন মাকে দেখতে আসত, আর যতক্ষণ না তার বাবা তাকে নিতে আসত ভিজিটিং আওয়ারের পুরোটা সময় ধরে মায়ের পাশে বসে কুরআন তিলাওয়াত করতে থাকত। একদিন হাসপাতাল থেকে বাবার কাছে কল এল। বলা হলো মায়ের অবস্থা খুবই ভয়াবহ। যত দ্রুত সম্ভব বাবা যেন হাসপাতালে পৌঁছে। তাই বাবা বার’আহকে স্কুল থেকে নিয়ে দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছল; কিন্তু হাসপাতালের সামনে এসে হঠাৎ মনে হলো বার’আহর মায়ের অবস্থা যদি খুব বেশি খারাপ হয়, আর যদি বার’আহর সামনেই মারা যায়, তাহলে ছোট্ট মেয়েটা এই বেদনা সহ্য করতে পারবে না। তাই বার’আহকে গাড়িতে বসিয়েই চোখ মুছতে মুছতে হন্তদন্ত হয়ে বাবা ছুটল মায়ের কেবিনের দিকে। হঠাৎ বিকট শব্দ, ধোঁয়া আর ধূলির কুণ্ডলীতে চারদিক ঝাপসা হয়ে উঠল। বার’আহ গাড়ি থেকে নেমে কাঁদতে কাঁদতে ছুটতে লাগল। ছোট্ট এই পাখিটির চোখের সামনেই খুব দ্রুতগামী একটি গাড়ি পিষে দিয়ে গেল তার বাবাকে
না, গল্পটা এখানেই শেষ না। বার’আহর বাবার মৃত্যু সংবাদ তার মা থেকে গোপন রাখা হলো। কিন্তু মাত্র ৫ দিনের মাথায় মাও বার’আহকে একা এই নিষ্ঠুর পৃথিবীতে ফেলে চলে গেলেন জান্নাতে। বাবা-মার বন্ধু বান্ধবরা ভাবল মিসরে তার আত্মীয়-স্বজনদের খোঁজ নিবে, যেন তারা এই এতিম মেয়েটার দেখাশোনা করতে পারে।
Camera |
Iphone 12 Mini |
Lens |
Wide 26 mm-Equivalent |
Photographer |
@fxsajol |
Location |
Mirpur 12 , Dhaka, Bangladesh |
Processing photos |
Outdoor |
আকস্মিকভাবে বার’আহরও তার মায়ের মতো প্রচণ্ড পেটে ব্যথা শুরু হলো। কিছু টেস্ট আর চেকআপের পর এই ছোট্ট পুতুলটির ক্যান্সার ধরা পড়ল। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে ছোট্ট এই পুতুলটি বলল, ‘আলহামদুলিল্লাহ, এখন তাহলে আমি আব্বু- আম্মুর সাথে দেখা করতে পারব।' কথাটায় সবার আশ্চর্যের সীমা রইল না। এই ছোট্ট মেয়েটির উপর দিয়ে একের পর এক বিপদ যাচ্ছে, কিন্তু সে কতটা ধৈর্য ও সন্তুষ্টির সাথে আল্লাহর সিদ্ধান্ত মেনে নিল।
লোকের মুখে মুখে বার'আহর গল্পটা ছড়িয়ে পড়তে লাগল। একজন সৌদি তার চিকিৎসার দায়িত্ব নিল। সে মেয়েটিকে ইউকে পাঠাল। যতদিন যেতে লাগল ক্যান্সার ছোট্ট মেয়েটার সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ল। ডাক্তাররা মেয়েটার পা কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত নিল। মেয়েটা আগের মতোই ধৈর্য ও সন্তুষ্টির সাথে তার রবের সিদ্ধান্ত মেনে