এক তরুণ উদ্যোক্তার সংগ্রামী জীবনের গল্প (চতুর্থ পর্ব)

darklights -

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


তানিম তার গ্রাহক সেবার মান উন্নত করার জন্য একটি কল সেন্টার তৈরি করলো। যাতে গ্রাহকরা সরাসরি তাদের অভিযোগ বা প্রশ্নের উত্তর পেতে পারে। পাশাপাশি সে তার পণ্যগুলোর ডিজাইন ও বৈচিত্র্যে নজর দিতে শুরু করে। সে চেষ্টা করে তুলনামূলক কম দামে পণ্যগুলো গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দিতে। নতুন নতুন ডিজাইন ও বৈশিষ্ট্য যোগ করার মাধ্যমে আর আকর্ষণীয় মূল্য দেয়ার জন্য তিনি তার গ্রাহকদের আকর্ষণ ধরে রাখতে সক্ষম হলো। সে সাথে সে যাদের কাছ থেকে পণ্য সংগ্রহ করতো তাদের জন্য তার ব্যবসার একটা মুনাফা খরচ করার চিন্তা করলো।

সে যাদের কাছ থেকে পণ্য সংগ্রহ করে তাদের সবাইকে নিয়ে একটা মিটিং করে তাদেরকে বিষয়টা জানালো। তাকে যারা পণ্য সরবরাহ করত সে তাদেরকে জানালো এখন থেকে তাদের ছেলে মেয়ের পড়ালেখার খরচ তানিম বহন করবে। এই কথা শুনে তার পণ্যের যোগানদাতারা সবাই খুব খুশি হলো। তারা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হলো তারা তানিমকে ছাড়া অন্য কাউকে তাদের পণ্য দেবে না। এভাবে তানিম পন্যের বাজারের উপরে একটা প্রভাব বিস্তার করতে সমর্থ্য হলো। তানিমের এই সিদ্ধান্তগুলো তার ব্যবসাকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলো।কিন্তু এই সময় আরও বড় চ্যালেঞ্জ এলো কোভিড-১৯ মহামারি।

পুরো দেশ লকডাউনে চলে গেলা এবং তার ব্যবসাও স্থবির হয়ে গেল। তানিম ভেবেছিলেন তার স্বপ্ন বুঝি এবারও থেমে যাবে। কিন্তু তিনি আবারও ধৈর্য্য হারাননি। অনলাইন বিক্রির উপর ভিত্তি করেই ব্যবসা চালানোর চেষ্টা চালিয়ে গেলেন। এই সময় তিনি নতুন কিছু পণ্য যুক্ত করলেন। যেমন হোম ডেকর এবং ফ্যাশন অ্যাক্সেসরিজ। ধীরে ধীরে মহামারি কেটে গেলে তার ব্যবসা আবারও ঘুরে দাঁড়ায়।
কঠোর পরিশ্রম, একাগ্রতা, এবং নতুন কিছু করার অদম্য ইচ্ছাই তানিমকে এই অবস্থানে পৌঁছে দিয়েছে। সে শুধু একজন সফল ব্যবসায়ী নন একজন প্রেরণাদায়ক ব্যক্তিত্বও। তার ব্যবসার উদ্দেশ্য শুধুমাত্র মুনাফা অর্জন নয়। তারব্যবসা গ্রামীণ হস্তশিল্পীদের জীবিকা উন্নয়নের একটি প্ল্যাটফর্ম হয়ে দাঁড়ায়। বহু তরুণ তাকে দেখে উৎসাহিত হয়েছে নিজস্ব উদ্যোগ নেওয়ার জন্য।
আজ তানিমের ব্যবসা শুধুমাত্র দেশীয় বাজারেই নয় আন্তর্জাতিক বাজারেও ছড়িয়ে পড়েছে। তার গ্রাহক সংখ্যা লাখের পৌঁছেছে এবং তার ব্যবসা আরও প্রসারিত হয়েছে। তানিম সবসময় মনে করে সফল হতে গেলে শুধু স্বপ্ন দেখা যথেষ্ট নয়। সেই স্বপ্নের পেছনে যথাযথ প্রচেষ্টা এবং ধৈর্য্য থাকতে হয়। তার সংগ্রামী জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত তাকে আরও দৃঢ় করেছে। আর এটাই একজন উদ্যোক্তার সবচেয়ে বড় অর্জন।

তানিমের এই গল্পটি শুধুমাত্র একটি উদ্যোক্তার সাফল্যের কাহিনী নয়। এটি একটি প্রমাণ যে সংগ্রাম, ধৈর্য্য এবং প্রচেষ্টার মাধ্যমে জীবনের যেকোনো বাধা অতিক্রম করা সম্ভব।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।




ধন্যবাদ