মানব সেবায় প্রাণ বিসর্জন (শেষ পর্ব)

darklights -

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


কারণ এখন যদি তারা কিছু মানুষকে এখানে রেখে ফিরে যায়। তাহলে ফিরে এসে আর তাদেরকে বাঁচানো সম্ভব হবে না। কারণ ততক্ষণে পানির উচ্চতা আরো বেড়ে যাবে। শেষ পর্যন্ত তারা চিন্তাভাবনা করে সবাইকে নৌকার উঠানোর সিদ্ধান্ত নিলো। সবাই নৌকায় উঠলে নৌকাটা ধীরে ধীরে চলতে লাগলো। এর ভেতরে নৌকায় থাকা কয়েকজন পরামর্শ দিলো নৌকা আপাতত গ্রামের ভেতরে কোন গাছের পাশে ভেড়ানো থাক। যদি স্রোতের তীব্রতা কমে তখন নৌকা নিয়ে আগানো যাবে। না হলে এখন নৌকার যে অবস্থা তাতে তীব্র স্রোতের ভেতর নৌকাটা অবশ্যই ডুবে যাবে।

এই আইডিয়াটা মুগ্ধর পছন্দ হোলো। কিন্তু সাথে থাকা কয়েকজন দ্বিমত পোষণ করলো। তারা জানালো বন্যা পরিস্থিতির যে ইনফরমেশন আমরা জেনেছি। তাতে স্রোতের তীব্রতা কমার কোনো সম্ভাবনা নেই। বরং সময়ের সাথে সাথে এটা আরো বাড়তে থাকবে। শেষ পর্যন্ত সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিলো আল্লার নাম নিয়ে উঁচু জায়গার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়ার। কিন্তু নৌকার মাঝি কিছুতেই যেতে চাচ্ছিল না। সে বারবার বলছিলো এই অবস্থায় এত মানুষ নিয়ে রওনা দিলে এই নৌকা কখনোই টিকবে না। নিশ্চিত নৌকা ডুবে যাবে।

কিন্তু সাথে থাকা মানুষজন সবাই মিলে যখন তাকে চাপ দিলো। তখন সে যেতে রাজি হোলো। প্রথমে কিছুটা পথ ধীরে তারা আগালো। কিন্তু যখন তারা গ্রাম থেকে বের হয়ে খোলা নদীতে পড়লো তখন তীব্র স্রোতের ভেতর চলতে চলতে একসময় নৌকাটা হঠাৎ করে ডুবে গেলো। সেই সাথে নৌকায় থাকা মুগ্ধ এবং তার কয়েকজন বন্ধু চিরতরে হারিয়ে গেলো। এভাবে বন্যা দুর্গত এলাকার মানুষজনকে সহায়তা করতে এসে তাদের বন্যার পানিতে সলিল সমাধি হোলো। আর এভাবেই মুগ্ধের মতো একজন পরোপকারী মানুষ অকালেই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলো। (সমাপ্ত)

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।




ধন্যবাদ