লোভের পরিণতি ধ্বংস (শেষ পর্ব)
0 comments
চিকিৎসকেরা জানান, তাঁর শরীরে ক্যান্সার ধরা পড়েছে এবং তাঁর খুব কম সময় বাকি আছে। সালমানের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ে। এখন তাঁর কাছে কোনও আশা নেই, কোনও ক্ষমতা নেই যা দিয়ে তিনি নিজেকে মুক্ত করতে পারেন। একসময়কার ক্ষমতাশালী এই ব্যক্তি এখন মৃত্যুর কাছে পরাজিত। সে বুঝতে পারে এখন বসে বসে মৃত্যুর প্রহর গোনা ছাড়া তার আর কিছু করার নেই। জেলের শেষ দিনগুলোতে সালমান একটি পরিবর্তিত মানুষ হয়ে ওঠেন। তিনি ভাবতে শুরু করেন জীবনের আসল মানে নিয়ে।
তাঁর ব্যবসার লোভ, ক্ষমতার প্রতিযোগিতা আর প্রতারণা সব কিছুই এখন মূল্যহীন মনে হয়। তিনি বুঝতে পারেন অর্থ সম্পদের পিছনে অন্ধ হয়ে ছুটে তিনি কি চরম ভুলই না করেছেন। জীবনে অর্থ সম্পদ যে সবকিছু না সেটা তিনি হাড়ে হাড়ে বুঝতে পারেন। খারাপ কাজ করলে তার পরিণতিও যে খারাপ হয় সেটা তিনি নিজেকে দিয়ে বুঝতে পারেন। তিনি সিদ্ধান্ত নেন তাঁর জীবনের শেষ দিনগুলোতে অন্তত কিছু ভাল কাজ করার চেষ্টা করবেন। সালমান তাঁর সমস্ত জমা অর্থ সমাজকল্যাণে দান করেন এবং জেল থেকে মুক্তির আগেই মৃত্যুর কাছে আত্মসমর্পণ করেন। মৃত্যুর আগে, তিনি তাঁর প্রতারিত গ্রাহকদের উদ্দেশ্যে একটি চিঠি লেখেন, যেখানে তিনি ক্ষমা চান এবং তাঁর সকল ভুল স্বীকার করেন। এই ছিল সালমান চৌধুরীর জীবন— এক দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ীর করুণ পরিণতি। তাঁর অর্জিত সব কিছুই শেষ পর্যন্ত অকার্যকর প্রমাণিত হয়। সম্পদ, ক্ষমতা, প্রতারণা সবই তাঁকে জীবনের প্রকৃত সুখ থেকে দূরে রেখেছিল। জীবন তাঁকে এক করুণ পরিণতির দিকে নিয়ে গিয়েছিল। যেখানে পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব কেউ ছিলনা। যেখানে কেবল একাকিত্ব, অনুশোচনা, এবং শেষমেষ মৃত্যুই ছিল তাঁর সঙ্গী। (সমাপ্ত)
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
Comments