আড়ংয়ে কেনাকাটা করার মুহূর্ত।
11 comments
হ্যালো বন্ধুরা
সবাইকে আমার নমস্কার,আদাব।আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন,সুস্থ আছেন?ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমিও ভালো আছি।
আমি @bristychaki,আমি একজন বাংলাদেশী। আমার বাংলা ব্লগ এর আমি একজন ভেরিফাইড ও নিয়মিত ইউজার।আমি বাংলাদেশের গাইবান্ধা জেলা থেকে আপনাদের সাথে যুক্ত আছি। প্রতিদিনের মতো আমি আজও নতুন একটি ব্লগ নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি।
দুর্গাপূজা হলো বাঙ্গালী হিন্দুদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব।এটি শুধু একটি ধর্মীয় উৎসব নয় বরং বাঙ্গালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সাথে গভীরভাবে সম্পর্কিত।দীর্ঘ একটা বছর অপেক্ষা করার পরে আবার মা দুর্গার আগমন ঘটেছে।
পূজা মানেই আনন্দ পূজা মানেই নতুন কাপড় পড়ে ঘুরতে যাওয়া সবকিছুই অনেক আনন্দের।ছোটবেলায় এই আনন্দ গুলো অনেক বেশি হতো যা এখন আর হয় না বললেই চলে।আসলে যতো দিন যাচ্ছে আমাদের জীবন থেকে আনন্দ গুলো কেমন জানি হারিয়ে যাচ্ছে।ছোটবেলায় নতুন জামা কাপড় কিনে শুধু দিন গুনতাম আমি পূজা আসবে আর কবে নতুন জামা কাপড় পড়বো!এখন আর কোনোকিছুতেই আনন্দ লাগে না সবকিছুই স্বাভাবিক মনে হয়।তবে নিজের জন্য না হোক বাচ্চাদের জন্য তো কেনাকাটা করতেই হয়,কারণ ওরা এখন যে আনন্দটা উপভোগ করবে হয়তোবা আমাদের মতো সময় গিয়ে তাদেরও একই অবস্থা হবে।তাই আমি চেষ্টা করি ওদের ছোট ছোট সবগুলোকে পূরণ করার যাতে করে মনে কোন আক্ষেপ না থাকে।
পারিপার্শ্বিক কিছু কারণে মন-মানসিকতা ভালো নেই বললেই চলে,আর মন ভালো না থাকলে শরীরটাও বেশ খারাপ লাগে।মার্কেটে গিয়ে কেনাকাটা করার মতো মন মানসিকতা একদমই ছিলো না তারপরেও দুই মেয়ের কথা ভেবে সন্ধ্যায় বাসায় বাসা থেকে বের হলাম তিন মা মেয়ে মিলে।প্রথমে উপশহর বাজারে গিয়ে একটা অটো রিক্সা ঠিক করে সোজা জলেশ্বরী তলায় চলে গেলাম।বগুড়া র সবচেয়ে ভালো শপিংমল গুলো জলেশ্বরী তলায়।রানা প্লাজা সবচেয়ে বড় শপিং মল।রানা প্লাজার ফার্স্ট ফ্লোরেই আড়ংয়ের শোরুম।সারা বছর না হলেও পুজোর কেনাকাটা বেশিরভাগ সময় আমি আড়ং থেকেই করে থাকি।
কেন জানিনা আড়ংয়ের কাপড় গুলো আমার কাছে খুবই ভালো লাগে।ওদের কাপড় গুলো পড়তে বেশ আরামদায়ক মনে হয় এবং সেই সাথে দেখতে অনেক মার্জিত লাগে।তাই বছরে পূজার সময় দুই একটা জামা কাপড় নিলে আড়ং থেকেই কেনার চেষ্টা করি।ঢাকা থেকে আসার পর বেশ কিছুদিন আড়ংয়ে কেনাকাটা করা হয়নি।কারণ আমি উপজেলা শহরে ছিলাম তাই আড়ংয়ে আসতে হলে আমাকে বগুড়ায় আসতে হতো এত্তো ঝামেলা করার চেয়ে স্থানীয় মার্কেট থেকেই কেনা হয়েছিলো।বগুড়ায় আসার পর বেশ ভালোই হয়েছে আমার বাসা থেকে আড়ং এর দূরত্ব খুব একটা বেশি নয় যদিও বা রিকশাভাড়া ৫০ টাকা তারপরেও কাছাকাছি বলা চলে বাস ট্রেনে তো যাতায়াত করতে হয় না বা ঘন্টার পর ঘন্টা সময়ও লাগে না।
প্রথমে গিয়ে ছোট মেয়ের জন্য একটা ড্রেস পছন্দ করা হলো।এক দেখাতেই ড্রেসটা আমার ভালো লেগেছিলো আর মেয়েরও তাই।কিন্তু সমস্যা হল বড় মেয়েকে নিয়ে ওর কোনো ড্রেসই পছন্দ হচ্ছিলো না আমি যেটাই দেখাচ্ছি ওটাই তার অপছন্দ, সত্যি কথা বলতে ভালোমন্দ বিচার করার মতো ক্ষমতা ওর নেই নিজেকে কিসে ভালো দেখাবে এতোটুকু বুঝতে পারেনা।তাই রাগ করে হলেও আমাকেই পছন্দ করে দিতে হয় প্রথমে না না করে নিতে চায় না কিন্তু পরবর্তী সময়ে ঠিকই বুঝতে পারে যে মা যেটা পছন্দ করে দেয় ওটাই ওর জন্য পারফেক্ট।অনেকগুলো ড্রেস দেখার পরে অবশেষে তার একটা পছন্দ হলো।যাক আমিও কিছুটা হলে স্বস্তি পেলাম তার কারণ হলো ওকে সহজে কোনো কিছু বোঝানো যায় না,আর বোঝাতে গিয়ে আমি অধৈর্য হয়ে যাই।তখন খুব রাগ হয় মাঝেমধ্যে তো মানুষের সামনেই রেগে যাই।এখন যদিও বা সেরকম আর বিরক্ত করে না কারণ অনেকটা বড় হয়ে গেছে।সত্যি কথা বলতে ওর কোনো চাহিদা নেই তাই ভালো কিছু নিতে হবে ভালো কিছু পড়তে হবে এরকম কোনো চিন্তা-ভাবনা ওর মধ্যে নেই।কোনো কিছু পছন্দ হলে আগে তার দাম টা দেখে যদি দেখে দাম বেশি তাহলে আর সেটা নিতে চায় না।
দুই মেয়ের ড্রেস কেনা শেষে আমি আমার নিজের জন্য আড়ং আর্থ এর কিছু সামগ্রী কিনলাম।আড়ংয়ের সব প্রোডাক্টই অথেন্টিক তাই ওদের প্রসাধনীগুলো নিঃসন্দেহে ব্যবহার করা যায়।আর সবচেয়ে বড় কথা হলো দাম খুব একটা বেশি না তাই সহজেই কেনা যায়।ভাবলাম বয়স হয়ে যাচ্ছে এখন একটু রূপচর্চা করতে হবে তা না হলে অল্প দিনের মধ্যেই বুড়ি হয়ে যাবো।😁আমার মেয়েরা তো বলে যে আমার নাকি বয়স হলে ওদের খুবই লজ্জা লাগবে তাই ওরা চায় আমি যেনো সবসময়ই একই রকম থাকি কোনভাবেই বুড়ি হওয়া যাবে না..🤭 যদিওবা এটা কখনো সম্ভব নয় তারপরও যতোটুকু নিজের যত্ন নেয়া যায় এর মাঝে যতোটুকু ভালো থাকা যায় সেই চেষ্টাটুকু অন্তত করতে হবে।সবকিছু কেনা শেষে বিল মিটিয়ে দিয়ে আমরা ওখান থেকে বেরিয়ে পড়লাম।
তারপর দুই মেয়েকে আইসক্রিম খাওয়ালাম এবং সংসারের টুকিটাকি কিছু জিনিসপত্র কিনলাম।তারপর বাসায় চলে আসলাম।আর এখানেই আমাদের ঘোরাঘুরি এবং কেনাকাটা শেষ হলো।সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই প্রত্যাশা করে আজ এখানেই শেষ করছি।
Comments