মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সকল সদস্যগণ,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন,সুস্থ আছেন?পরম করুণাময় ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমিও পরিবারের সবাইকে সাথে নিয়ে ভালো আছি সুস্থ আছি।
আমি @bristychaki,আমি একজন বাংলাদেশী। আমার বাংলা ব্লগ এর আমি একজন ভেরিফাইড ও নিয়মিত ইউজার।আমি বাংলাদেশের গাইবান্ধা জেলা থেকে আপনাদের সাথে যুক্ত আছি। প্রতিদিনের মতো আমি আজও নতুন একটি ব্লগ নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি।আমি প্রতিনিয়ত চেষ্টা করি পোস্টের ভিন্নতা আনার।তারই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে আজ নতুন একটি পোস্ট আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।আশাকরি আপনাদের ভালো লাগবে।
জন্মদিন এমন একটি দিন ছোট বা বড় সবার কাছে খুব মূল্যবান একটি দিন।ছোটবেলায় জন্মদিন নিয়ে সবারই খুব আনন্দ উল্লাস থাকে।আস্তে আস্তে যখন মানুষ বড় হতে লাগে তখন জীবন থেকে সব আনন্দ গুলো কেমন জানি ফিকে হতে শুরু করে,আর একটা সময় গিয়ে তো আর কোনো কিছুতেই আনন্দ পাওয়া যায় না।তাই আমার মতে জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় হলো ছোটবেলা আর তাই প্রতিটি বাচ্চাকে এই সময় তারমতো করে বড় হওয়ার সুযোগ করে দেওয়া উচিত প্রতিটি বাবা-মায়ের।
আমাদের কমিউনিটির ভেরিফাইড সদস্য @rituamin ভাবীর কন্যা আওরোরা তাফসিরা জাহিরা বেবির আজ জন্মদিন।জাহিরা বেবি এত্তোটাই কিউট যে ওকে সবাই খুব পছন্দ করে এবং ভালো না বেসে থাকতে পারে না।রিতু ভাবী আর আমি একই বিল্ডিং এ অনেক দিন বসবাস করেছি,এরপর তো শেষের দিকে এসে আমি যখন দোতলায় নামলাম তখন আমি তার খুবই কাছের প্রতিবেশী হয়ে গেলাম।আমরা আসার দিন থেকে শুরু করে যতোদিন ওখানে ছিলাম ততোদিন জাহিরা বেবি দিনের বেশিরভাগ সময় আমাদের সাথে কাটাতো।শুধুমাত্র রাতে ঘুমানোর সময় টুকু সে তার পরিবারের সাথে থাকতো।
আমার মেয়েরা চাহিদা বেবিকে অনেক ভালোবাসতো আর জাহিরা বিবি ওদেরকে ছাড়া একদম থাকতে পারতো না।ওর সাথে এরা যাই করুক না কেনো রাগারাগি করুক বা বকাবকি করুক তারপরও জাহিরা বেবি ওদের পিছু ছাড়বে না এরকম একটা অবস্থা ছিলো।আমি দোতালায় নামার আগে আমাদের একজন কুটনি প্রতিবেশী ভাবী বলেছিলো দোতলায় নামছেন ভালো কথা!কিন্তু জাহিরার অত্যাচারে থাকতে পারবেন কিনা সেটাই হচ্ছে বড় কথা!তখন আমি জাহিরাকে খুব বেশি জানতাম না,শুধুমাত্র মাঝেমধ্যে ওর সাথে উঠা নামা করার সময় দেখা হতো এতোটুকুই জানতাম দেখে বেশ কিউট লাগতো।তারপর বিষয়টা আমার একটু চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ালো ভাবলাম সত্যিই কি খুব বেশি জ্বালাবে?তারপর চিন্তা করে দেখলাম ছোট বাচ্চা যদি জ্বালায় এটা কিবা করার আছে!
পাঁচতলা থেকে দোতালায় নেমে আসলাম তারপর জাহিরা বেবি সারাক্ষণ আমাদের ঘরেই থাকা শুরু করলো।কখনো ওর মধ্যে কোন বেয়াদবি বা খারাপ আচরণ আমি লক্ষ্য করিনি।ও সারাদিন চুপচাপ বসে টিভি দেখতো আর আমার মেয়েদের পিছু পিছু ঘুরতো। কখনোই কোন খাবারদাবারের প্রতি উল্লভ ছিলো না..শুধুমাত্র নুডুলস রান্না করলে হয়তো বা একটু খেতে চাইতো এছাড়া কখনোই ওকে কোন কিছু খাওয়াতে পারি নাই।আমি যদি কাজ করতাম ওকে এটা সেটা এগিয়ে দিতে বলতাম ও খুব সুন্দর আমার হাতে হাতে এগিয়ে দিতো,আর কোন কাজ যদি ওর করার সামর্থ্য না থাকতো তাহলেও বলতো আন্টি তুমি বোঝনা আমি ছোট বাচ্চা আমি কি এই কাজ করতে পারি?ওর কথা শুনে তখন খুবই হাসি পেতো আর ভাবতাম যে ওর মধ্যে কতো জ্ঞান এখন কোন কথা বলতে হবে ও এটা খুব ভালো করে জানতো।সব মিলিয়ে জাহিরা বেবি আমাদের অত্যন্ত স্নেহের এবং ভালোবাসার হয়ে উঠেছিলো।
কিন্তু বাচ্চার লেখাপড়ার কারণে ওদেরকে ছেড়ে আমাদের বগুড়ায় চলে আসতে হলো।আমরা আসার পর জাহিরা বেবি খুবই মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছিলো,কারণ ওখানে মেশার মতো আর কেউ ছিলোনা।তারপর ভাবি ওকে নিয়ে তার গ্রামের বাড়িতে যে কিছুদিন কাটি আসার পরে ও একটু হলেও স্বাভাবিক হতে পেরেছে।আর ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় এখন বেশ ভালোই আছে ওর ছোট ভাইকে নিয়ে।জাহিরা বেবিকে খুবই মিস করি যদিও বা কখনো ওর জন্মদিন গুলোতে আমাদের থাকা হয়নি,তার কারণ হলো ভাবি ওর জন্মদিন টা তার গ্রামের বাড়ির এতিমখানায় পালন করে থাকে।
আজ জাহিরা বেবির জন্মদিনে আমাদের যাওয়ার কথা ছিলো কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত বিশেষ একটা প্রয়োজনীয় কাজের জন্য আমরা যেতে পারলাম না।খুব ইচ্ছা ছিলো এবারের জন্মদিনটা আমরা সবাই মিলে একসাথে পালন করবো সেটা আর করা হয়ে উঠলো না।যাই হোক দূর থেকে জাহিরা বেবির জন্য মন প্রাণ দিয়ে আশীর্বাদ করি ও যেন অনেক ভালো মানুষ হয়ে উঠতে পারে এবং ওর বাবা-মায়ের সকল আশা গুলো পূরণ করতে পারে।ওর যেন অনেক অনেক শুভকামনা ও ভালোবাসা সবসময়ই থাকবে যত দূরেই থাকি না কেনো।আপনারা সবাই চাহিদা বেবির জন্য আশীর্বাদ দোয়া করবেন।🙏