সানিত এর অসুস্থতা 😢
12 comments
হ্যালো বন্ধুরা,
মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সকল সদস্যগণ,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন,সুস্থ আছেন?পরম করুণাময় ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমিও পরিবারের সবাইকে সাথে নিয়ে ভালো আছি সুস্থ আছি।আমি @bristychaki "আমার বাংলা ব্লগ"এর আমি একজন নিয়মিত ইউজার। আমি বাংলাদেশের গাইবান্ধা জেলা থেকে আপনাদের সাথে যুক্ত আছি। প্রতিদিনের মতো আমি আজও নতুন একটি ব্লগ নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি।
পৃথিবীতে মানুষের জীবনে রক্তের সম্পর্কের থেকে গভীর একটি সম্পর্ক হচ্ছে বন্ধুত্বের সম্পর্ক।এটি মানুষের জীবনে আত্মার সাথে সম্পর্কিত।মানুষ খুব সহজেই রক্তের সম্পর্ক ভুলে যেতে পারলেও আত্মার সম্পর্ককে কখনো ভুলতে পারেনা।মানুষের যার সাথে মনের মিল বা আত্মার সম্পর্ক তৈরি হয় সে হয়ে ওঠে একজন মানুষের জীবনে প্রকৃত বন্ধু।আমি মনে করি আমার জীবনে শত্রুর চেয়ে বন্ধুর সংখ্যা অনেক বেশি।হয়তো আমি সবার কাছে শতভাগ ভালো হতে পারিনি তবে খুব একটা খারাপও নই তা মানুষের আচরণে বোঝা যায়।আমি যেখানেই বসবাস করি না কেনো তার আশেপাশের মানুষগুলো খুব অল্প সময়ের মধ্যে আমার বন্ধু হয়ে ওঠে।ঠিক সেরকমই একজন বন্ধু হচ্ছে আমাদের কমিউনিটির @rituamin ভাবী উনি আমার খুবই কাছের প্রতিবেশী।রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠে দরজা খুললেই প্রথমে উনার মুখ দর্শন করতে হয় তারমানে হলো উনি আমার মুখোমুখি ফ্ল্যাটের বাসিন্দা।
একসাথে থাকার কারণে আমরা দুজনেই খুব গল্প গুজব এবং ভালো সময় কাটিয়ে থাকি এভাবেই আমাদের বন্ধুত্ব তৈরি হয়।এখন এমন একটা পর্যায়ে গেছে একবেলা না দেখা হলে কেমন যেনো অস্থির লাগে।ভাবীর মেয়ে জাহিরা তো সারাদিন আমার ঘরেই থাকে পারলে রাত টুকু থাকলেও ওর জন্য ভালো হয়।তবে কয়েকদিন চেষ্টা করেছিলো শেষ অব্দি থাকতে পারে নাই বাধ্য হয়ে মাঝ রাতে আবার ভাবীর কাছে দিয়ে আসতে হয়েছে।
কিছুদিন আগেই ভাবীর কোল আলো করে সানিত বাবুর জন্ম হয় হয়তোবা আপনারা অনেকেই জেনে থাকবেন।ওর জন্মের পর যখন ৩০ দিন বয়স তখন ভাবী গাইবান্ধা ভাবীর বাবার বাসা থেকে এখানে নিয়ে
আসেন।আমরা তো সবাই খুবই এক্সাইটেড ছিলাম কখন আসবে কখন আমরা ওর মুখ দেখতে পাবো যাইহোক একটা পর্যায়ে ওরা চলে আসলো।সারাদিন বেশ ভালোই ছিলো সন্ধ্যায় @hiramoni ভাবী নতুন অতিথিকে দেখতে আসেন আমরা সবাই মিলে একসাথে বসে গল্প করছিলাম হঠাৎ করেই সানিত বাবু কেমন যেন অস্থির হয়ে যাচ্ছিলো নিশ্বাস নিতে পারছিলো না এমন মনে হচ্ছিলো।তারপর আমরা সবাই তো ভয় পেয়ে গেলাম আর রিতু ভাবীর তো সেই কান্নাকাটি।কোন উপায় না পেয়ে ভাবী এবং তার মা মিলে সানিত বাবুকে নিয়ে হসপিটালে ছুটলেন পরপর আমি হীরা ভাবী আমাদের প্রতিবেশী আরো এক ভাবী সবাই মিলে হসপিটালে গেলাম কিছুক্ষনের মধ্যে এই হসপিটাল থেকে বগুড়ায় রেফার্ড করেন।আমাদের শুভ ভাই ওই মুহূর্তে ওখানে উপস্থিত ছিলেন উনি সবকিছু ব্যবস্থা করেন এবং ভাবীদেরকে বগুড়ার উদ্দেশ্যে রওনা করে দেন।
ভগবানের অশেষ কৃপায় বগুড়ায় গিয়ে খুব একটা খারাপ কিছু ধরা পড়েন নিয়ে এক রাতেই চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেন।পরের দিন খুব সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে দেখি সানিত বাবু বাসায় ওকে দেখে মনটা ভালো হয়ে গেলো।সেই দিনের পর থেকে সানিত বাবুকে আর কখনো অসুস্থ হতে দেখিনি।ও সময় মতো খাবার খায় সময় মতো ঘুমায় এজন্য খুব একটা অসুস্থ হয় না।সারাদিন হাসি খুশিতে ওর দিন কেটে যায় কখনো ওর মুখে কান্নার শব্দ শুনিনি।আমার ছোট মেয়ে অর্থী ওর সবচেয়ে প্রিয় মানুষ অর থেকে দেখলেই ও খুশিতে লাফাতে থাকে বড় মেয়েকেও পছন্দ করে আমাকেও খুব পছন্দ করে তবে ওর থেকে একটু বেশি পছন্দ করে।সানিক বাবু কান্না করে না জন্য ওকে রাখতেও বেশ ভালো লাগে দিনের বেশিরভাগ সময় ও আমাদের বাসাতেই কাটায় ওকে যেভাবে খুশি সেভাবেই রাখা যায় আমরা শুয়ে থাকি ও আমাদের পাশে ঘন্টার পর ঘন্টা শুয়ে থাকবে কোনভাবেই বিরক্ত করবে না,সব মিলিয়ে একটা লক্ষ্মী বাচ্চা।
আজ কয়েকদিন ধরে ওর শরীরটা খারাপ যাচ্ছে প্রথমে জ্বর তারপর পাতলা পায়খানা আর দুদিন ধরে ওর চোখের সমস্যা দেখা দিয়েছে।গতকাল থেকে আমার শরীরটাও খারাপ তাই ওকে খুব একটা দেখতে পারিনি আজ দুপুর বেলা হঠাৎ শুনি ওর চোখের বেশ ভালই সমস্যা হয়েছে ওর আম্মু ওকে মরিয়ম চক্ষু হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলো ওখানকার ডাক্তার বলছে চোখে ইনফেকশন হয়েছে।তারপর চিকিৎসা দিয়েছে।কথাটা শুনে খুবই খারাপ লাগলো।ছোট বাচ্চারা হলো সবসময় আদর ভালবাসার জিনিস তাদের কিছু হলে খুবই খারাপ লাগে।বাচ্চাদের কষ্ট একদম চোখে দেখা যায় না সহ্য করা যায় না।
@hiramoni ভাবীর ছেলে শায়ান বাবুকে যেমন আমরা সেই ৪৫ দিন থেকে দেড় বছর বয়স পর্যন্ত আদর যত্নে বড় করেছি ও আমার কাছে ঠিক নিজের সন্তানের মতোই মনে হয়।ওকে আদর করি শাসন করি বকা দেই ও কাউকে খুব একটা ভয় পায় না কিন্তু আমাকে খুব ভয় পায়।আমি মনে করি আদর করে যে শাসন করার অধিকারও সেই রাখে যদিওবা ওর মা কখনোই কিছু মনে করে না।শায়ান বাবু যাওয়ার পর আমরা বেশ একা হয়ে গিয়েছিলাম ঠিক সেই একাকীত্ব ঘোচানোর জন্য সানিতবাবুর আগমন।সানিত বাবু আসার পর আমাদের দিনকাল খুবই ভালো কাটে দিন কোনদিক দিয়ে চলে যায় বুঝতেই পারি না।ভালো থাকার কারণটাই যখন খারাপ থাকে তখন কি আর কোনোকিছু ভালো লাগে বলেন!!
আপনারা সবাই সানিত বাবুর জন্য আশীর্বাদ দোয়া করবেন ও যেনো দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠে।
আমাদের উইটনেস কে সাপোর্ট করুন।
Comments