আমার বাংলা ব্লগ মানেই হল নতুন নতুন কিছুর আয়োজন। আর সেই পরিপ্রেক্ষিতে এবার একটা প্রতিযোগিতা চলছে সেটা হচ্ছে শীতকালের ফটোগ্রাফি। শীতকাল মানেই হলো হরেক রকম পিঠাপুলির মেলা। তার পাশাপাশি কুয়াশা ঘন ভোর, শিশির ভেজা ঘাস। চারিদিকে যেন একটা উৎসব মুখর মুহূর্ত সৃষ্টি হয়ে যায়। আর এই পরিপ্রেক্ষিতে বেশ কিছু ফটোগ্রাফি নিয়ে হাজির হয়ে গেলাম আপনাদের মাঝে। যাইহোক এখানে কথা না বাড়িয়ে ফটোগ্রাফি গুলো শেয়ার করি তার মাঝেই আপনাদের মাঝে বেশ কিছু কথা শেয়ার করা হয়ে যাবে।
শীতকাল হলো খিরার একদম মোক্ষম সময়। এই সময় খিরা গুলো গাছ থেকে তুলে তাজা তাজা খেতে এতই যে ভালো লাগে যেটা যে খেয়েছে সেই একমাত্র বোঝে। আমার কাছে তো খিরা খেতে বেশ ভালো লাগে। আর এই খিরাগুলো হলো আমার নানুর বাড়িতে ছাদে করা। গত বছর যখন শীতকালে নানার বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলাম তখন এই খিরাগুলো গাছে ধরে ছিল। আর আমার মামাতো বোন একটা খিরা গাছ থেকে ছিড়তেছিলো তখন একটা ছবি তুলে নিলাম।এই খিরাগুলো ছিল অনেক মিষ্টি। যেগুলো অন্যান্য তেতো খিরা থেকে অনেক গুণ ভালো খেতে হয়েছিল।
পিটুনিয়া ফুল আমাদের সবার পরিচিত। এই পিটুনিয়া ফুলগুলো একমাত্র শীতের সময়টায় দেখা যায়। শীতের শেষে এই পিটুনিয়া গুলো ধীরে ধীরে ফ্যাকাসে হয়ে যায়। যেগুলো পরবর্তীতে দেখতে আর ভালো লাগে না। এটাও আমাদের স্থানীয় নার্সারি থেকে করা ফটোগ্রাফি। গত বছর অনেক অনেক ধরনের এবং জাতের পিটুনিয়া ফুল সেখানে আনা হয়েছিল। ফুলের মাঝে বেশ দারুন করে কুয়াশা পড়েছিল।
হাঁড়িতে করে লাগানো হয়েছিল পিটুনিয়া ফুলের গাছগুলো।বেশ ইউনিক লেগেছিল পুরো নার্সারিকে। অনেক ধরনের পিটুনিয়া ফুল ছিল বিধায় আমি বেশ কিছু ফটোগ্রাফি করছি। তবে এর মাঝে আপনাদের মাঝে অল্প কয়েকটা ছবি শেয়ার করেছি। এটা হলো গাঢ় বেগুনী রঙের পিটুনিয়া।একদম কড়া রঙ দেখা যাচ্ছিল।ছবি তোলার পর আমি দেখেই তো অবাক হয়ে গিয়েছিলাম।কারণ বাস্তবে দেখতে যেমন ছবিতেও তেমন ছিল।
শীতকালে কিন্তু ফলের চারা পাওয়া যায় বেশ অনেক রকমের। এটাও ছিল সেখানে। আমি মূলত গাছের মধ্যে মাল্টাগুলো দেখে ছবি তুলেছিলাম। আর সত্যি বলতে ৩টা মালটা একসাথে দারুন লাগছিল। আলাদাভাবে একটা মাল্টাও ছিল। এই ফটোগ্রাফি গুলো যখন করছিলাম তখন বেশ অনেক রোদ ছিল। এজন্য ফটোগ্রাফি গুলো দারুন উজ্জল লাগছে।
এখানে দেখতে পাচ্ছেন ধনেপাতার ফুল।এগুলো শীতের সময়ে তোলা ছবি। আসলে ধনেপাতা যখন অনেক বড় হয়ে যায় এবং এর মাঝে ফুল চলে আসে তখন ফুল গুলো ফুটে থাকে। সাদা ছোট ছোট ফুল গুলো দেখতে দারুন লাগে। একসাথে ফুটে বিধায় এগুলো আরো সৌন্দর্য বর্ধিত করে। তাই কয়েকটা ছবি তুলে নিয়েছিলাম। আপনাদের মাঝে আজ শেয়ার করলাম ।
এখানে আরও একটা পিটুনিয়া ফুলের ছবি শেয়ার করলাম।পিটুনিয়া ফুলের মধ্যে এটা একটু ভিন্ন জাতের ছিল। কারণ এখানে দুই রংয়ের ফুল ছিল।স্টেপ দেখতে দারুন লাগছিল। সাদা রং এবং বেগুনি রঙ মিশ্রিত হয়েই এই ফুলটার উৎপত্তি।আসলে বিভিন্ন রঙের ফুলের মাঝে এটা আমার কাছে বেশি দারুন লাগছিল। তাই এটাও আপনাদের মাঝে শেয়ার করে নিলাম। তবে এরকম আরো বিভিন্ন কালারের ছবিও আছে সেগুলো না হয় অন্য কোন সময় শেয়ার করব।
শীতকাল মানেই হল খেজুরের রস। আর খেজুরের রস যেহেতু এই সময়ে আনা হয় সেজন্যই মূলত গাছগুলো কাটা হয়। তবে আমরা যখন এই ছবিটি তুলতে গিয়েছিলাম তখন গাছের মধ্যে কোন হাড়ি বসানো ছিল না। হয়তোবা এই গাছটা নতুন করে কাটা হয়েছে এখনো হাড়ি বসানো হয়নি। যাই হোক আমি এই গাছটা রসের জন্য কাঁটা দেখেই ছবি তুলে নিয়েছিলাম। গাছটা দেখতে দারুন লাগছিল। বেশ বড় একটা গাছ ছিল এটা।
শীতের সময় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কিছু কিছু গাছ শুকিয়ে যায়। তবে এগুলো দেখতে অনেকটা ফুলের মতই লাগছিল।কুয়াশা ঘন সময়ে এই গাছটা আমার নজর কেড়ে নিয়েছিল। তাই ভাবলাম এটার একটা সুন্দর ফটোগ্রাফি করে নেয়া যাক। এজন্যই মূলত আপনাদের মাঝে এটা শেয়ার করেছি। যদিও আহামরি কিছুই নেই তবে কুয়াশা ঘন বিধায় এই ফুল গাছের ডালটা অনেক সুন্দর লাগছিল।
এ ধুন্দল গাছটা অনেক আগেই লাগানো হয়েছে। তবে বর্তমানে এর নতুন একটা শাখা বের হয়ে দেখলাম খুব সুন্দর কিছু ধুন্দল ধরেছে। এগুলো একদম ছোট ছোট, যদিও এগুলো হয় কিনা এটার কোনো সম্ভাবনা নেই। তবে সকাল বেলা যখন রোদ পোহাতে ছাদে উঠেছিলাম তখন দেখলাম এগুলো সুন্দর করে ছাদের মাঝে রয়েছে। আর তখনই একটা ছবি তুলে নিলাম আর আজকে এটা আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম।
এই ছবিগুলো সেদিন একসাথেই তোলা হয়েছিল।গত কয়েকদিন আগেই তুলেছিলাম। যখন ফুল গুলো ফুটে আছে তখন দেখতে বেশি দারুন লাগছিল। কুয়াশা পড়ে এগুলো খুব সুন্দর উজ্জ্বল রঙের হয়ে গিয়েছিল। তবে এগুলো ছিল পুরনো ডালের ফুল। যদিও সেখানে কোন ধুন্দল ছিল না শুধুমাত্র কয়েকটা ফুল ছিল। ভাবলাম এগুলোর ফটোগ্রাফি করে রাখি। আর এই সময়ে ধুন্দলের ফুল দেখে বেশি ভালো লাগছিল। তাই আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম।
ফটোগ্রাফি করতে যখন বের হয়েছিলাম তখন দেখলাম গাছের গুড়িতে একটা মাশরুম ফুটে আছে। আসলে এই মাশরুমগুলো খাওয়া যায় কিনা তা জানা নেই। তবে এটা অনেক জায়গায় দেখা যায়। অনেক সুন্দর লাগছিল এটা দেখতে। রোদে চকচক করছিল, আর এজন্যই ছবিটা তুললাম। ভিন্ন কালারের একটা মাশরুম, যদিও এটা সচরাচর চোখে পড়ে না। মাঝে মাঝে গাছের গুড়ি অথবা গাছের গোড়ায় দেখা যায় ।
গত দুদিন আগে ছাদে দেখলাম ডালিম গাছে ফুল এসেছে। যদিও জানা নেই ডালিম গাছে কখন ফুল হয়। তবে দেখলাম এই সময়টায় ফুল ধরেছে। যদিও এই ডালিম গাছটায় বেশ কয়েকবার ফুল ফুটেছিল এবং ডালিম ধরেছিল। কিন্তু সবগুলো ডালিম পঁচে গিয়েছে। নতুন করে ডাল বের হয়ে আবার নতুন করে ফুল ফুটেছে। তাই এটার ছবি তুলে নিলাম আর আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম ।
শীতকাল মানেই হরেক রকমের পিঠা খাওয়ার ধুম পড়ে যায়। আর এই সময়টায়ই পুলি পিঠা, ভাপা পিঠা খাওয়া হয় অনেক বেশি। তাছাড়া আবার আমাদের এদিকে খোলার পিঠা এবং চিতই পিঠাও বেশ জনপ্রিয়। যাইহোক আমি কিছুদিন আগেই এই ভাপা পিঠা তৈরি করেছিলাম। প্রথমবারের মত ভাপা পিঠা তৈরি করে বেশ আনন্দ হয়েছিল। কারণ পিঠাটা একদম পারফেক্ট হয়েছিল সেদিন।আর খেতেও অনেক বেশি মজা হয়েছিল।
এখানে দেখতে পাচ্ছেন ছোট ছোট পালংশাকের চারা। এই চারাগুলো আমাদের ছাদে একটা টবের মধ্যে লাগানো হয়েছে। মূলত আমার কাঠগোলাপ ফুল গাছের টবেই আমার হাসবেন্ড কিছু পালং শাকের বীজ ফেলে দিয়েছিল। আর সেখানে অনেকগুলো চারা উঠেছে। দেখতে বেশ দারুন লাগছিল। আর আজকে সকাল বেলায় আমি ছবিটা তুলেছিলাম।পালং শাক খেতে আমার কাছে অনেক বেশিই ভালো লাগে। তবে এই পালং শাকগুলো এখনো বড় হয়নি। নিচে যেখানে রোপন করা হয়েছিল সেগুলোও বড় হয় নি এখনো।
গোলাপ আমাদের সকলেরই পছন্দের একটা ফুল। এই রঙের গোলাপটাই সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় বিয়ের অনুষ্ঠান কিংবা অন্য সময়। যাই হোক তবে এই ফটোগ্রাফিটা গত কয়েকদিন আগেই করেছিলাম নার্সারিতে। শিশির ভেজা এই গোলাপ ফুল গুলো দেখতে একদম নজর কাড়া ছিল। আর এর রঙের কথা কি বলবো দেখলেই তো ভালো লাগে।
বিকেলবেলা মাঝেমাঝে ছাদে যাওয়া হয় জামা কাপড় নিয়ে আসার জন্য। আর সেই সময় কুয়াশায় ঘন হয়ে যায় চারিদিক। কুয়াশা ঘন ছবিটা তুলেছিলাম মূলত সন্ধ্যার একটু আগ মুহূর্তে। ছবিটা তোলা হয়েছে ছাদ থেকে। আশেপাশে গাছপালা সবকিছুই পরিপূর্ণ হয়ে গিয়েছে কুয়াশায়। যদিও এই সময়টা আমাদের নিরাপদ থাকা উচিত।কারণ চারদিকে সবাই কুয়াশার কারণে অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে।
সাদা রঙ মানেই হলো শুভ্রতা। শুভ্রতার মাঝে শিশির পড়লে তো আরো বেশি ভালো লাগে। সাদা এই গোলাপ ফুল আমার খুবই পছন্দ হয়েছিল। ছবিটা তুলেছিলাম নার্সারিতে গিয়ে। আসলে নার্সারিতে তো অনেক রকমের ফুল থাকে। সেখানে গেলেই বিভিন্ন রকমের ছবি তোলা যায়। এই সাদা ফুলটাও এক পাশে ছিল। এটা একদম প্রস্ফুটিত ছিল, যেটা কিছুদিন পরে ধীরে ধীরে ঝরে যাবে।
সবাই অনেক অনেক ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন। সবার জন্য আন্তরিক ভালোবাসা রইল। সম্পূর্ণ পোস্টে আমার ভুল-ত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। |
---|
♥️আল্লাহ হাফেজ♥️ |
---|
ধরন | ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতা |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @bristy1 |
ডিভাইস | Samsung Galaxy A12 |
লোকেশন | ফেনী |
আমি তাহমিনা আক্তার বৃষ্টি। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি বাংলায় কথা বলি,আমি বাংলায় নিজের মনোভাব প্রকাশ করি। আমি নিজের মত করে সবকিছু করার চেষ্টা করি। আমি বিভিন্ন জিনিস আঁকতে পছন্দ করি। বিভিন্ন ধরনের ছবি আঁকা, রঙ করা, নতুন নতুন কিছু তৈরি করা আমার পছন্দের কাজ। তবে রান্নাবান্না আমার ভালোলাগা, চেষ্টা করি সবসময় নিজে নতুনভাবে কিছু রান্না করার। ভ্রমণপ্রেমীদের মত আমিও ঘুরতে পছন্দ করি। পরিবারের সবাইকে নিয়ে আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।