কেমন আছেন?আশা করি ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন।সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আমি আমার পোস্ট লেখা শুরু করছি।আজকে আমি ওয়্যারলেস ইলেক্ট্রিসিটি সাপ্লাই নিয়ে আলোচনা করছি।
Image designed by AI
Wireless Electricity Supply বা তারবিহীন বিদ্যুৎ সরবরাহ একটি উদ্ভাবনী ধারণা, যা ইলেকট্রিক্যাল পাওয়ার তার ছাড়া এক স্থান থেকে আরেক স্থানে সরবরাহ করার প্রযুক্তিকে বোঝায়।এটি একটি বাস্তব এবং উন্নয়নশীল প্রযুক্তি।
কীভাবে কাজ করে?
১. ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ইনডাকশন (Electromagnetic Induction):
মাইকেল ফ্যারাডের আবিষ্কৃত এই প্রক্রিয়ায় একটি কন্ডাক্টরের মধ্যে চৌম্বক ক্ষেত্রের পরিবর্তনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়।এটি বর্তমানে ইলেকট্রিক টুথব্রাশ বা স্মার্টফোন চার্জারের মতো ডিভাইসগুলোতে ব্যবহার করা হয়।
২. রেজোন্যান্ট ইন্ডাকটিভ কাপলিং (Resonant Inductive Coupling):
এই পদ্ধতিতে বিদ্যুতের প্রেরণ এবং গ্রহণকারী উভয়কেই একটি নির্দিষ্ট ফ্রিকোয়েন্সিতে রেজোন্যান্সে নিয়ে আসা হয়।এটি বড় দূরত্বে শক্তি পাঠানোর জন্য কার্যকর।
৩. রেডিও ওয়েভ (Radio Wave Transmission):
ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রেডিও তরঙ্গ ব্যবহার করে শক্তি এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তরিত করা হয়।এটি দীর্ঘ দূরত্বে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য কার্যকর হতে পারে।
৪. লেজার বা অপটিক্যাল বীম (Laser/Optical Beam):
বিদ্যুৎকে লেজার বীমে রূপান্তরিত করে দূরবর্তী স্থানে প্রেরণ করা হয় যেখানে এটি পুনরায় বিদ্যুতে রূপান্তরিত হয়। এই পদ্ধতি স্যাটেলাইট বা ড্রোনে ব্যবহার করা হয়।
এর সুবিধা:
তারহীন ডিভাইসের ব্যবহার বৃদ্ধি:
মোবাইল ডিভাইস, রোবট এবং গৃহস্থালির ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম আরও সহজে চার্জ করা যাবে।
নিরাপত্তা বৃদ্ধি:
বৈদ্যুতিক তার ব্যবহার না করায় শর্ট সার্কিট বা আগুন লাগার ঝুঁকি কম।
সৌন্দর্য:
ভবন বা শহরের অবকাঠামোতে তারের জটিলতা দূর করা যায়।
ক্লিন এনার্জি সাপোর্ট:
পুনর্ব্যবহারযোগ্য শক্তি (যেমন, সৌর শক্তি) স্থানান্তরের জন্য এটি কার্যকর হতে পারে।
এর চ্যালেঞ্জ:
দূরত্ব:
বড় দূরত্বে শক্তি স্থানান্তর কার্যকারিতা কমে যেতে পারে।
কার্যক্ষমতা:
বেশিরভাগ পদ্ধতিতেই শক্তির অপচয় হয়।
নিরাপত্তা:
উচ্চ-ক্ষমতাসম্পন্ন তরঙ্গ বা লেজার স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
খরচ:
প্রযুক্তির উন্নয়ন ও স্থাপনার খরচ বেশি।
বর্তমান ব্যবহার:
কিউই চার্জার (Qi Charger):
স্মার্টফোন ও অন্যান্য গ্যাজেট চার্জ করার জন্য একটি প্রচলিত প্রযুক্তি।
ইলেকট্রিক ভেহিকল চার্জিং (EV Charging):
কিছু ইলেকট্রিক গাড়ি তারবিহীনভাবে চার্জ করার প্রযুক্তি সমর্থন করে।
মেডিকেল ইমপ্ল্যান্টস:
যেমন, কার্ডিয়াক পেসমেকার বা কোক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্টে তারবিহীন শক্তি সরবরাহ।
ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা:
স্মার্ট শহর:
সম্পূর্ণ তারবিহীন বিদ্যুৎ ব্যবস্থা চালু হতে পারে।
স্পেস পাওয়ার ট্রান্সমিশন:
সৌর শক্তি স্যাটেলাইট থেকে পৃথিবীতে তারবিহীনভাবে পাঠানো সম্ভব।
ড্রোন এবং রোবটিক্স:
দীর্ঘ সময় ধরে তারবিহীনভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্ভব হবে।