হ্যালো বন্ধুরা,
কেমন আছেন?আশা করি ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন।সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আমি আমার পোস্ট লেখা শুরু করছি।আজকে আমি প্রাচীন ভারতে বিজ্ঞান চর্চা নিয়ে আলোচনা করতে চলেছি।আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।
প্রাচীন ভারতে বিজ্ঞান চর্চা এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।এই সময়ে ভারতীয় বিজ্ঞানী ও দার্শনিকরা অনেক নতুন ধারণা ও তত্ত্বের জন্ম দিয়েছিলেন যা আধুনিক বিজ্ঞানের ভিত্তি স্থাপন করেছিল।জ্যোতির্বিজ্ঞান, গণিত,চিকিৎসাবিজ্ঞান, ধাতুবিজ্ঞানসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারতীয় বিজ্ঞানীদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে।
প্রাচীন ভারতীয় গণিতে বিশেষ করে শূন্যের ধারণা ও দশমিক সংখ্যা পদ্ধতির উদ্ভাবন উল্লেখযোগ্য।আর্যভট্ট এবং ব্রহ্মগুপ্তের মতো গণিতবিদরা আধুনিক গণিতের ভিত্তি স্থাপন করেছেন।আর্যভট্ট প্রথমবারের মতো π (পাই)-এর মান প্রায় সঠিকভাবে গণনা করেন এবং তিনি ট্রিগনোমেট্রির ধারণাও দেন।
ভারতে জ্যোতির্বিজ্ঞান একটি গুরুত্বপূর্ণ বিজ্ঞান ছিল।আর্যভট্ট, বরাহমিহির প্রমুখ জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা সূর্যের, চন্দ্রের ও অন্যান্য গ্রহের গতি,তাদের আকৃতি ও দূরত্ব নিয়ে গবেষণা করেন।আর্যভট্টের ‘আর্যভট্টীয়’ গ্রন্থে গ্রহের গতি ও কক্ষপথ সম্পর্কিত ধারণা দেয়া হয়েছে যা আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের প্রাথমিক ধারণার সাথে মিল রয়েছে।
প্রাচীন ভারতে আয়ুর্বেদ চিকিৎসাবিজ্ঞানের অন্যতম প্রাচীন পদ্ধতি।চরক ও সুশ্রুত এই ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছেন।চরক সংহিতা ও সুশ্রুত সংহিতা দুটি আয়ুর্বেদের প্রসিদ্ধ গ্রন্থ, যেখানে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা,অপারেশনের পদ্ধতি এবং ঔষধ প্রস্তুতির বিভিন্ন উপায় বর্ণনা করা হয়েছে।সুশ্রুতকে ‘শল্য চিকিৎসার জনক’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
প্রাচীন ভারতে ধাতুবিজ্ঞানেও বড় অবদান ছিল। লোহা, তামা, ব্রোঞ্জ এবং অন্যান্য ধাতু নিয়ে গবেষণা করা হতো।দিল্লির লৌহস্তম্ভ যা এখনো মরিচা পড়েনি,এটি প্রাচীন ভারতের ধাতুবিজ্ঞানের অগ্রগতির একটি নিদর্শন।এই স্তম্ভের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো এটি শত শত বছর ধরে টিকে রয়েছে এবং এখনও পর্যন্ত ক্ষয়প্রাপ্ত হয়নি।
ভারতীয়রা রসায়ন নিয়ে গবেষণা করতেন যা তৎকালীন যুগে ‘রাসায়ন শাস্ত্র’ নামে পরিচিত ছিল।এই শাস্ত্রের মাধ্যমে বিভিন্ন ধাতু ও যৌগ নিয়ে গবেষণা করা হতো যা পরবর্তীতে আয়ুর্বেদের ঔষধ তৈরিতে সহায়ক ছিল। ভারতীয়রা বারুদ তৈরির প্রযুক্তিও জানতেন।
ভারতীয় দর্শন ও যুক্তিবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে নাইয়ায়িক ও বৈশেষিক শাস্ত্র উল্লেখযোগ্য।এই শাস্ত্রে যুক্তি, সিদ্ধান্ত গ্রহণ, প্রমাণের ধরণ এবং জ্ঞানতত্ত্বের ধারণা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছিল যা পরে বৈজ্ঞানিক গবেষণার ভিত্তি গঠন করে।
প্রাচীন ভারতের এই সকল বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার ও তত্ত্ব পৃথিবীজুড়ে বিভিন্ন সভ্যতার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |