হ্যালো বন্ধুরা,
কেমন আছেন?আশা করি ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন।সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আমি পোস্ট লেখা শুরু করছি।আজকে আমি অক্টোপাস নিয়ে কিছু কথা আলোচনা করবো।আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।
অক্টোপাস একটি অত্যন্ত আকর্ষণীয় প্রাণী যা বৈজ্ঞানিক এবং সাধারণ উভয় মহলেই বিস্ময়ের উদ্রেক করে।অনেক সময় লোকেরা অক্টোপাসের অদ্ভুত এবং অস্বাভাবিক শারীরিক বৈশিষ্ট্য এবং বুদ্ধিমত্তার কারণে একে "ভিনগ্রহের প্রাণী" হিসেবে অভিহিত করে তবে বৈজ্ঞানিকভাবে এটি একটি ভিত্তিহীন বক্তব্য।
অক্টোপাস একটি মোলাস্কা শ্রেণীর প্রাণী এবং এটি সিফালোপড উপশ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত।সিফালোপডদের মধ্যে রয়েছে অক্টোপাস, স্কুইড, কাটলফিশ এবং নটিলাস।অক্টোপাসের বিবর্তন পৃথিবীতেই ঘটেছে এবং এদের পূর্বপুরুষ মোলাস্কা ছিল যারা সমুদ্রের তলদেশে বাস করত। অক্টোপাসের শারীরিক বৈশিষ্ট্য এবং বুদ্ধিমত্তা বিভিন্ন প্রাকৃতিক নির্বাচনের প্রক্রিয়ার ফল যা দীর্ঘ কোটি কোটি বছর ধরে চলে আসছে।
অক্টোপাসের কিছু অস্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা অনেকের মনেই কৌতূহলের সৃষ্টি করে এবং ভিনগ্রহের প্রাণী বলে সন্দেহ করতে উদ্বুদ্ধ করে।তবে বৈজ্ঞানিকভাবে প্রতিটি বৈশিষ্ট্যের একটি পৃথিবীর মধ্যেই ব্যাখ্যা রয়েছে:
বুদ্ধিমত্তা: অক্টোপাস অত্যন্ত বুদ্ধিমান প্রাণী হিসেবে পরিচিত।তারা সমস্যা সমাধান করতে পারে, শিখতে পারে এবং এমনকি স্মৃতিশক্তি ব্যবহার করে সিদ্ধান্তও নিতে পারে।এই বুদ্ধিমত্তা তাদের টিকে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় যেমন শিকার ধরা বা শিকারি থেকে রক্ষা পাওয়ার কৌশল রপ্ত করা।
বহু হৃদপিণ্ড ও রক্তের অদ্ভুত রং: অক্টোপাসের তিনটি হৃদপিণ্ড এবং নীল রঙের রক্ত রয়েছে।অক্টোপাসের রক্তে তামা-ভিত্তিক হিমোসায়ানিন প্রোটিন থাকে যা তাদেরকে শীতল পানিতে অক্সিজেন পরিবহণে সহায়তা করে। তিনটি হৃদপিণ্ড তাদের শারীরিক ক্রিয়াকলাপকে সমর্থন করতে সাহায্য করে যা পানির মধ্যে বাস করার জন্য প্রয়োজনীয়।
দেহের গঠন:অক্টোপাসের আটটি বাহু এবং নমনীয় দেহ রয়েছে যা সহজেই ছোট ফাঁকা জায়গা দিয়ে প্রবেশ করতে পারে।তারা ছদ্মবেশ (ক্যামোফ্লাজ) ধরার অসাধারণ ক্ষমতাও রাখে। এর মাধ্যমে তারা শিকার বা শিকারি প্রাণী থেকে আত্মরক্ষা করতে পারে।
পুনর্জন্ম ক্ষমতা:অক্টোপাসের বাহু কাটা গেলে তা পুনরায় গজায় যা তাদের জন্য বিশেষ সুবিধা দেয়। এই ক্ষমতাটি পৃথিবীর অন্যান্য কিছু প্রাণীর ক্ষেত্রেও দেখা যায় যেমন টিকটিকি বা স্টারফিশের ক্ষেত্রে।
অনেকেই অক্টোপাসের এই অদ্ভুত বৈশিষ্ট্যগুলো দেখে ভিনগ্রহের প্রাণী হিসেবে ধারণা করেন। কিন্তু এর পেছনে আসলে কোনও প্রমাণ নেই। কিছু উদ্ভট ধারণা এসেছে প্যানস্পারমিয়া তত্ত্ব থেকে,যেখানে বলা হয় যে প্রাণের উৎস অন্য কোনো গ্রহ থেকে এসেছে।যদিও প্যানস্পারমিয়ার তত্ত্বটি বিজ্ঞানের নির্দিষ্ট কিছু মহলে আলোচিত হয়েছে,অক্টোপাসকে এর মাধ্যমে ব্যাখ্যা করার কোনও প্রমাণ বা শক্তিশালী যুক্তি নেই।
২০১৮ সালে একটি গবেষণা প্রবন্ধে কিছু বিজ্ঞানী প্রস্তাব করেছিলেন যে অক্টোপাসের মতো প্রাণীদের পূর্বপুরুষরা অন্য গ্রহ থেকে উল্কা বা ধূমকেতুর মাধ্যমে পৃথিবীতে এসেছে।এই তত্ত্ব খুবই তর্কসাপেক্ষ এবং এতে উল্লেখযোগ্য বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই।
বিজ্ঞানীরা অক্টোপাসকে পৃথিবীর বিবর্তনীয় ইতিহাসের মধ্যেই ব্যাখ্যা করতে সক্ষম হয়েছেন। অক্টোপাসের জিনোম বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে যে এদের বৈশিষ্ট্য পৃথিবীর অন্যান্য জীবের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।তাদের জিনোমে কোনো "ভিনগ্রহের" উপাদান পাওয়া যায়নি।প্রকৃতপক্ষে, অক্টোপাসের জিনোম অত্যন্ত জটিল এবং এদের নির্দিষ্ট কিছু জিনের কার্যকারিতা ব্যতিক্রমী হলেও,এসব বৈশিষ্ট্য পৃথিবীর বিবর্তনীয় ধারার মধ্যেই সমাধানযোগ্য।
অক্টোপাসকে তার অদ্ভুত বৈশিষ্ট্য এবং বুদ্ধিমত্তার কারণে অনেক সময় "ভিনগ্রহের" প্রাণী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।কিন্তু বৈজ্ঞানিকভাবে এর কোনও ভিত্তি নেই।এটি পৃথিবীরই একটি জীব যা দীর্ঘ বিবর্তনীয় প্রক্রিয়ার ফল।পৃথিবীর জটিল জীববৈচিত্র্যের অংশ হিসেবে অক্টোপাস তার নিজস্বভাবে অত্যন্ত অনন্য হলেও,এটি ভিনগ্রহের কোনো প্রাণী নয়।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |