যতদূর চোখ যায় ফুলে ফুলে ভরা। চারপাশে বিশাল বিশাল কিছু গাছ। গাছগুলোকে বড় বললেও ভুল হবে, শুধু বড়ই না যেন আকাশ ছোঁয়ার কাছাকাছি। পাশে একটি ছোট্ট নদীর ধারা আর দুটো চোখকে ঐ দূর অব্দি নিয়ে গেলে দেখা যাবে অসম্ভব সুন্দর কিছু পাহাড়ের চূড়া। একটার সাথে আরেকটা গা ঘেসে দাঁড়িয়ে আছে।
খোলা আকাশ দেখতে যেন মনে হয় পুরো আকাশটাকে কেউ রং তুলির সাহায্যে রঙিন করে দিয়েছে। আর এত সৌন্দর্যের মাঝেই চুপটি মেরে বসে আছে ছোট্ট একটি ঘর। ভাবুন তো জায়গাটা কতই না সুন্দর আর এই সুন্দর জায়গাতেই সুন্দর দুটি মানুষ তাদের জীবনকে খুব সুন্দর ভাবে গুছিয়ে নিয়েছিল।
অন্তরা আর নিলয়। ভালোবেসে বিয়ে করেছে তারা। তাদের সম্পর্কটাও কিন্তু স্বাভাবিক ভাবে হয়েছিল ভার্সিটি লাইফে। শুরু থেকে একজনকে একজন দেখে ভালো লেগে যায় আর সে ভালোলাগা থেকে ভালোবাসার জন্ম।
ভালোবাসার প্রতিটা মুহূর্ত তারা শুরু থেকে প্রাণ ভরে উপভোগ করতে পেরেছে, কারণ কখনো কোন বাধা তাদের আটকে রাখতে পারেনি। যদি এটা সকল ভালোবাসার ক্ষেত্রে, ভালোবাসাতে বাধা তো আসবেই কিন্তু সে বাধা অতিক্রম করতে পারে কয়জন।
নিলয় আর অন্তরার কথোপকথনে প্রায় নিলয় অন্তরাকে প্রশ্ন করতো, তোমার একটা স্বপ্নের কথা বল যা শুধু আমি পূরণ করব। অন্তরা নিলয়ের এই কথায় কখনোই গুরুত্ব দিত না, কারণ তার মনে যে স্বপ্ন সে স্বপ্ন কি কখনো পূরণ হওয়া সম্ভব ! !
কিন্তু ভালোবাসা সবকিছুকে হার মানায়। সেটা অন্তরার আন্দাজের বাহিরে ছিল। বারবার প্রশ্ন করাতে একদিন অন্তরা মুখ ফুটে বলেই ফেলল তার স্বপ্নের কথা। ওই দূর পাহাড়ের উপর ছোট্ট একটি ঘর থাকবে তাদের, ঘরের আশেপাশে যতদূর চোখ যায় থাকবে শুধু ফুল আর ফুল। পাশে একটি ছোট্ট নদী, আর বিশাল একটি আকাশ যা দিনের বেলা রং ছুঁয়া দেবে আর রাতের বেলা রূপালী চাঁদের আলো।
সম্পর্কের একপর্যায়ে বিয়ে হয়, তাদের বিয়ের কিছুদিন পরেই নিলয় ঘুরতে যাওয়ার নাম করে অন্তরাকে নিয়ে যাই সেই স্বপ্নের বাড়ি। অন্তরা ভাবতেও পারেনি যে নিলয় তাকে এতটা ভালবাসে। ঠিক যেন তার স্বপ্নের মতোই সবকিছু। খুশিতে আত্মহারা অন্তরা। আর এই সুন্দর সময়কে উপভোগ করতে করতে কেটে গেল দুটো মাস । হঠাৎ একদিন সকালে নিলয় ঘুম থেকে উঠে দেখে অন্তরা ঘরে নেই।হন্য হয়ে খুঁজতে শুরু করে অন্তরাকে। এখানে সেখানে সব জায়গাতে খুঁজে দিশাহারা নিলয়। চোখের পানি যেন আর আটকে রাখা যাচ্ছে না। অঝোরে কাঁদতে শুরু করেছে নিলয়, কিছু সময় পর.........
নিলয়ের চোখে মুখে ভেসে উঠলো রহস্যের হাসি। হাসির শব্দ বাড়তে লাগলো, আরো বাড়লো, আরো বাড়লো এবার পুরো ঘর যেন কেঁপে উঠলো নিলয়ের অট্ট হাসিতে। হাহাহাহা.... হাহাহাহা..... হাহাহা...
কি সেই রহস্য??
কোথায় গেল অন্তরা?
তাহলে কি নিলয় অন্তরার কিছু করেছে??