ক্রিয়েটিভ রাইটিং: অপূর্ণতার সমীকরণে জীবনের খাতা শূন্য।

ayaan001 -
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু /আদাব

🌿আমি মোঃ আশিকুর রহমান। আমি বাংলাদেশ 🇧🇩 থেকে বলছি। আমার স্টিমিট আইডির নাম @ayaan001

০৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।

রোজ শুক্রবার ।


Source

কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে ক্রিয়েটিভ রাইটিং পোস্ট শেয়ার করবো । আমাদের দৈনিন্দ জীবনের কিছু কথা আপনাদের মাঝে শেয়ার করার চেষ্টা করবো আশা করছি আমার এই লেখাটি আপনার অনেক ভালো লাগবে।

জীবনের হিসাব মেলানো এমন একটি প্রক্রিয়া যা কোনো ক্যালকুলেটর বা নির্দিষ্ট সূত্র দিয়ে করা সম্ভব নয়। কারণ জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে প্রতিটি সিদ্ধান্তে লুকিয়ে থাকে অসংখ্য অনুভূতি, অভিজ্ঞতা এবং পরিবর্তনের গল্প। এই জটিলতা জীবনের সৌন্দর্য হলেও আমাদের জন্য এক গভীর ধাঁধার মতো। জীবন চলার পথে আমরা অনেক কিছু অর্জন করি আবার অনেক কিছু হারাই। কিন্তু এই অর্জন আর ক্ষতির মানদণ্ডে জীবনের প্রকৃত হিসাবটা কখনোই পুরোপুরি মেলানো সম্ভব নয়।

জীবনে আমাদের অনেক স্বপ্ন থাকে যা পূরণ করতে গিয়ে আমরা নানান প্রতিকূলতার মুখোমুখি হই। এই স্বপ্ন পূরণের জন্য পরিশ্রম করি ত্যাগ স্বীকার করি। কিন্তু সবসময় আমাদের প্রত্যাশা বাস্তবতার সঙ্গে মেলে না। তখন মনে হয় জীবনের হিসাবটা যেন কেমন গড়মিল হয়ে গেল।

জীবনের সুখগুলো খুবই ক্ষণস্থায়ী। একটি ছোট্ট মুহূর্ত আমাদের মনে অনাবিল আনন্দ এনে দিতে পারে। আবার সেই আনন্দকে ঘিরেই হয়তো কোনো না কোনো দুঃখ লুকিয়ে থাকে। সুখের এই অস্থায়ী প্রকৃতির জন্যই জীবনের পরিপূর্ণ হিসাব কখনো মিলিয়ে দেখা সম্ভব নয়।

মানুষের জীবনের বড় একটা অংশ জুড়ে থাকে সম্পর্ক। পরিবার, বন্ধুত্ব, ভালোবাসা এই সব সম্পর্কের মধ্য দিয়ে আমরা জীবনের আসল রূপটা উপলব্ধি করি। কিন্তু এসব সম্পর্কেও অনেকসময় হিসাবের অমিল ঘটে। আমরা যা দিই সবসময় তার সমপরিমাণে ফেরত পাই না। আবার কখনো এমন কিছু পেয়ে যাই যা আশা করিনি।

জীবনের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ হলো সময়। কিন্তু আমরা সময়ের সঠিক ব্যবহার করতে পারি না। যখন পেছনে ফিরে তাকাই, তখন মনে হয় কতগুলো সুযোগ হারিয়ে গেছে। কিন্তু হারানো সময় আর ফিরে আসে না। তাই সময়ের সঙ্গে এই অদ্ভুত হিসাব মিলিয়ে চলাও কঠিন। জীবনের একটি বড় অংশ হলো আর্থিক চাহিদা পূরণ। জীবিকার প্রয়োজনে আমরা কাজ করি অর্থ উপার্জন করি এবং তা দিয়ে আমাদের প্রয়োজন মেটাই। কিন্তু সবসময় চাহিদা আর বাস্তবতার মধ্যে সামঞ্জস্য থাকে না। কখনো আর্থিক সংকটে পড়ে আমরা স্বপ্নের পেছনে ছুটতে পারি না আবার কখনো প্রয়োজনের বেশি পাওয়ার পরও তৃপ্তি অনুভব করি না। এই আর্থিক অসম্পূর্ণতা জীবনের হিসাব মেলানোর পথে বড় বাধা।

জীবনের সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো আমি কে? নিজেকে পুরোপুরি চেনা এবং নিজের সীমাবদ্ধতাগুলো মেনে নেওয়াই জীবনের আসল চ্যালেঞ্জ। আমরা অনেক সময় নিজের থেকে বেশি চাই আবার কখনো নিজেদের যোগ্যতাকে অবমূল্যায়ন করি। এ কারণেও জীবনের হিসাব মেলানো কঠিন হয়ে পড়ে।

আমাদের জীবনের একটি অংশ অতীতের স্মৃতি নিয়ে, আরেকটি অংশ ভবিষ্যতের স্বপ্ন নিয়ে বাঁচে। অতীতে করা ভুলের জন্য আমরা প্রায়ই অনুতপ্ত থাকি, যা আমাদের বর্তমানকে উপভোগ করতে দেয় না। আবার ভবিষ্যতের চিন্তায় আমরা এতটাই ডুবে থাকি যে, জীবনের ছোট ছোট আনন্দগুলো উপেক্ষা করি। এই দুই সময়ের ভারে আমাদের জীবনের বর্তমান হিসাব প্রায়ই গোলমেলে হয়ে পড়ে।

জীবনের হিসাব আসলে কখনোই পুরোপুরি মেলানো যায় না। এই অমিলটাই হয়তো জীবনের সৌন্দর্য। প্রতিদিন নতুন কিছু শেখা, নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করা, পুরনো ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নেওয়াই আমাদের জীবনের আসল উদ্দেশ্য। জীবনের এই অসম্পূর্ণতাকে মেনে নিয়ে যদি আমরা এগিয়ে চলি, তবেই হয়তো জীবনের প্রকৃত অর্থ খুঁজে পাব।


মন্তব্য

জীবনের হিসাব মেলানোর চেষ্টা করতে গিয়ে আমরা প্রায়ই অকারণে কষ্ট পাই। তবে একবার যদি আমরা বুঝতে পারি যে জীবনের প্রতিটি অমিল প্রতিটি অসম্পূর্ণতা আমাদের পরিপূর্ণ করে তোলে তখন আমরা এই জটিলতা মেনে নিতে শিখি। জীবনের সৌন্দর্য ঠিক এখানেই তার অনিশ্চয়তা, অসম্পূর্ণতা, এবং বৈচিত্র্যে।যদি আমরা জীবনের প্রতিটি দিনকে নতুন সুযোগ হিসেবে দেখি প্রতিটি ভুলকে শিক্ষা হিসেবে গ্রহণ করি তাহলে হয়তো হিসাব মেলানোর চেষ্টার বদলে জীবনের প্রতিটি মুহূর্তকে উপভোগ করতে পারব। এই ভাবনাই হয়তো জীবনের আসল সমীকরণ।

সমাপ্ত


সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ পোস্টেটি মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য। আশা করছি আমার লেখাটি আপনাদের কাছে অনেক ভালো লেগেছে। আজ এখানেই শেষ করছি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন দেখা হবে আবার নতুন কোন পোস্টের মাধ্যমে। আল্লাহ হাফেজ।


পোস্টের বিষয়ক্রিয়েটিভ রাইটিং
পোস্টকারীমোঃ আশিকুর রহমান
ডিভাইসগ্যালাক্সি এ ১৫
লোকেশনপাবনা


১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য।


আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়

আমি মোঃ আশিকুর রহমান। আমি মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার জুগির গোফা গ্রামে বাস করি। সবুজ শ্যামলে ঘেরা আমাদের গ্রামটি দেখতে খুবই সুন্দর। আমি একজন সরকারি চাকরিজীবি। আমি চাটমোহর ফায়ার ষ্টেশনে কর্মরত আছি। বাইক নিয়ে ঘুরতে, খাওয়া দাওয়া আর ঘুমাতে বেশি পছন্দ করি। আমি বিবাহিত। আমার একটি ছেলে আছে। আমি আমার পরিবারে মা, বাবা, ভাই, স্ত্রী ও ছেলে নিয়ে বসবাস করি।


সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্টটি দেখার জন্য। সবার জন্য দোয়া রইলো সবাই ভালো থাকবেন, ভালো রাখবেন। ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমার বাংলা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা, এডমিনদের। যারা আমাকে শুরু থেকে সাপোর্ট করছে। আবারও ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমার বাংলা ব্লগের সকল কর্মরত সদস্যদের। লেখার ভেতর ভুল ত্রুটি হতে পরে। সেক্ষেত্রে আপনাদের ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি । দোয়া করি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন।