হ্যালো আমার বাংলা ব্লগ পরিবার, আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন। যদিও আশা করছি তবে মনে হয় না যে সবাই ভালো আছেন। কারণ যে মাত্রা অতিরিক্ত গরম পড়েছে এতে করে ভালো থাকার কথা নয়। প্রত্যেকটি মানুষেরই বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হচ্ছে, এছাড়াও হিট স্ট্রোক হওয়া সম্ভাবনা রয়েছে। হঠাৎ করে এত গরম কেন পরছে, আমাদের জলবায়ু কি পরিবর্তন হচ্ছে নাকি এর পিছনে আরও কিছু কারণ রয়েছে। সেগুলো নিয়েই একটু আলোচনা করার চেষ্টা করব।
গত তিন চার মাস আগে এই বিষয়ে আমি একটি পোস্ট করেছিলাম। আমি বলেছিলাম এইবার মাত্রা অতিরিক্ত গরম পড়বে কিন্তু এই বিষয়টি আমি কিভাবে জানলাম? এটা অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে। আসলে আমাদের যে সূর্য রয়েছে এর প্রতি ১২ থেকে ১৪ বছর পর পর তার একটি সাইকেল পূর্ণ করে। এই সাইকেলটা কি রকম? সেটা হচ্ছে প্রতি ১২ থেকে ১৪ বছর পর পর সূর্য উত্তপ্ত হয়ে যায় এবং সূর্যের সোলার ফ্লেয়ার পৃথিবীর দিকে চলে আসে। ২০২৪ এবং ২০২৫ সালে একই ঘটনা ঘটে যাচ্ছে অর্থাৎ আমাদের এই সূর্য আরো উত্তপ্ত হয়ে উঠছে এবং দিন যত যাবে ততটাই এটার প্রভাব দেখা যাবে। এছাড়াও এখানে এল নিনোর প্রভাব রয়েছে।
এল নিনো কি এটা নিয়ে বিস্তারিত একটি পোস্ট করেছিলাম তিন চার মাস আগে। যখন আমি এই নিউজটা দেখতে পারি তার পরবর্তীতেই এই বিষয়গুলো নিয়ে আমি কথা বলেছিলাম। যাইহোক এই গরমে আপনাদের করণীয় কি সেই বিষয়ে একটু আলোচনা করা যাক। বাংলাদেশের প্রায় সব জায়গাতেই ৪০ ডিগ্রির উপরে টেম্পারেচার চলছে অর্থাৎ দিনের কোন না কোন সময় ৪০ ডিগ্রী অতিক্রম হচ্ছে। এতে করে হিট স্টোক হাওয়া সম্ভাবনা অনেকটাই বেশি হয়ে যায়। এতে করে আমরা যেই ভুলটা করে থাকি সেটা হচ্ছে বাসায় ফিরে ঠান্ডা পানি খাওয়া শুরু করি এই বিষয়টা এভয়েড করা উচিত। আমাদেরকে নরমাল পানি বেশি বেশি খেতে হবে, লেবু পানি খেতে হবে এবং পানি শূন্যতা যেন না হয় লক্ষ রাখতে হবে।
বাংলাদেশ এবং ভারতের বেশ কিছু অংশ মৌসুমী জলবায়ুর অন্তর্ভুক্ত ছিল কিন্তু আস্তে আস্তে সেই বিষয়গুলোকে পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তন এবং বিশ্বের গড় তাপমাত্রা দিন দিন বৃদ্ধি বাড়ছে। এর ফলে উত্তর ও দক্ষিন মেরুর অঞ্চলে বরফ গলা শুরু হয়েছে। এই বরফগুলো যদি প্রকৃত রূপে সবগুলো গলে যায় তাহলে সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চলে বেশ কয়েকটি দেশ পানির নিচে চলে যাবে এমনটাই আশঙ্কা করছে বিজ্ঞানীরা। আপনার মনে হয়তো ইতিমধ্যে নিউজে দেখেছেন মেরুর ও দেশ দুবাইয়ে মাত্রা অতিরিক্ত বৃষ্টি হয়েছে, যার কারণে সেখানে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে এবং অপরদিকে বাংলাদেশ এবং ভারত সহ বিভিন্ন দেশে হিট স্ট্রাক চলছে অর্থাৎ মাত্রা অতিরিক্ত গরম চলছে। এই বিষয়গুলোই হচ্ছে সাধারণত এল নিনোর প্রভাব।
যদি এল নিনোকে এক কথায় আমরা এক্সপ্লেইন করি তাহলে সেটা হবে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিবে এবং পৃথিবীর এক প্রান্তে যদি বৃষ্টি হয় বা বন্যা হয় অন্যদিকে খরা হবে। এই বিষয়গুলোই এখন ঘটছে। এখন প্রশ্ন আসতে পারে এসবের মধ্যে কি আমাদের করণীয় কিছুই নেই? অবশ্যই আমাদের করণীয় রয়েছে তবে আমাদের সকলকে একতাবদ্ধ হয়ে এই কাজগুলো করতে হবে এবং বিশেষ করে এই বিশ্বের গড় উষ্ণতা বেড়ে চলেছে এতে করে আমাদের জনজীবনের উপর মারাত্মক প্রভাব পড়েছে। আমার সকলের উচিত নিজের যেসব ফাঁকা জায়গা রয়েছে সেগুলোতে গাছ লাগানো।
প্রতি বছরে প্রায় অনেকগুলো গাছ কাটা হয়, তার বিপরীতে সেই গাছগুলো রোপন করা হয় না। এতে করে আমাদের প্রাকৃতিক ভারসাম্য রয়েছে সেটা ঠিক থাকে না যার ফলে পৃথিবীর গড় উষ্ণতা প্রতিনিয়তই বেড়ে চলেছে। গাছ কিন্তু সাধারণ কোন বিষয় নয়। এই মহাবিশ্বে একমাত্র গাছেই আমাদের এই সুন্দর পৃথিবীতে পাওয়া যায়, তাই এই গাছ সব থেকে মহামূল্যবান বস্তু হিসেবে আমি মনে করি এই মহাবিশ্বের মধ্যে।
আচ্ছা একটি বিষয় একটু কল্পনা করে দেখুন, আপনি যে অক্সিজেন গ্রহণ করছেন এর Source কোথায়! আপনাদের সকলের উচিত নিজের অক্সিজেনের ব্যবস্থা নিজেকেই করা। যদি এটা প্রাকৃতিক ভাবেই আমরা পেয়ে থাকি তারপরও আমাদের কিছু দায়িত্ববোধ রয়েছে। মনে করুন আপনি একজন মানুষ আপনার জন্য দুটি বড় বড় গাছের প্রয়োজন অক্সিজেন সাপ্লাই করার জন্য তাহলে আপনার অংশের দুটি গাছ কোথায়? সেই দায়িত্বটা কিন্তু আপনাকেই নিতে হবে। আমি ছোটবেলা থেকেই গাছপ্রেমী মানুষ। আমি বাগান করতে, গাছ লাগাতে অনেক বেশি ভালোবাসি। তাই তো আমার বাসায়ও প্রচুর পরিমাণে গাছ রয়েছে এই বিষয়গুলো আমরা সবসময় মাথায় রাখার চেষ্টা করি যার কারণে আমাদের বাসার গরম টা একটু কম লাগে। কারণ চারিদিকে গাছের ছায়া পরে, এছাড়াও গাছের অক্সিজেন সাপ্লাই রয়েছে সেগুলো আমরা ভরপুর পেয়ে থাকি।
আমরা সবাই নিজ নিজ জায়গা থেকে একটু দায়িত্ববান হই। আমরা নিজ নিজ জায়গা থেকে গাছ লাগানো চেষ্টা করি। তাহলে দেখবেন হয়তো পৃথিবীটা আবারো আগের মত সুন্দর হয়ে উঠবে। আশা করি আমি যেগুলো কথা বলেছি আপনারা বুঝতে পেরেছেন। আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি ধন্যবাদ সবাইকে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।
বিষয়: এই গরমে অতিষ্ট জনজীবন
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......